অপরাধ যেখানেই হোক আর যে দেশেই হোক, মানুষ যেন বিচার প্রক্রিয়ার আশ্রয় নিতে পারে সেই ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার দিবস। বিশেষ করে বিশ্বের নানা স্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো যেন বিচার প্রক্রিয়ার সম্মুখীন করা যায়, সে জন্য প্রতিষ্ঠিত করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।

১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা পাওয়া এ বিশেষ আদালতটির সদর দপ্তর রয়েছে নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে। তবে যে কোনো দেশেই এ আদালতের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারে। বিশ্বব্যাপী সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধগুলোর বিচার প্রক্রিয়া সুনিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক কাঠামো প্রতিষ্ঠিত করার কাজটি মোটেই সহজ ছিল না। এর ধারণা আর প্রেক্ষাপটটিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপরই আন্দোলনের রূপ নেয়। তবে শেষ পর্যন্ত এরকম একটি আদালত প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয় এবং এ আদালতের কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি দিতে আর সাফল্য কামনা করতেই ১৭ জুলাই পালন করা হয়ে থাকে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার দিবস।
১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের জেনোসাইড কনভেনশন স্বাক্ষরিত হয়। ফলে পরবর্তী সময়ে নুরেমবার্গ ও টোকিওতে ঘটা অপরাধের বিচারকাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। এসব ঐতিহাসিক ঘটনা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ন্যায়বিচার পাওয়ার গুরুত্ব বাড়িয়ে দেয় এবং গণমানুষের প্রত্যাশাকে আশার আলো দেখিয়ে দিতে সাহায্য করে। এসব ঘটনা ও সাফল্য ‘রোম নীতিমালা’-এর মতো চুক্তি প্রতিষ্ঠার পটভ‚মি তৈরি করে দিতে সাহায্য করে। শুরুতে ১২০টি দেশ ভোটের মাধ্যমে ‘রোম নীতিমালা’ অনুমোদন করে। ১৯৯৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ‘রোম নীতিমালা’র সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে।
রোম নীতিমালার ওপর ভিত্তি করেই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন বিধিবদ্ধ আইন গ্রহণ করার মাধ্যমে আদালতটি সক্রিয় হয়ে থাকে। ন্যায়বিচারের জন্য এ আন্তর্জাতিক আদালতটি প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৯৮ সালের ১৭ জুলাই। তাই এ দিনটিকেই বেছে নেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার দিবস হিসেবে।

এবি/ টিআর-১৭ জুলাই ২০১৯

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here