এএফপি, নয়াদিল্লি

কাশ্মীরের বিতর্কিত সীমান্তে গতকাল বুধবার ভোররাতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভারী গোলাবর্ষণ হয়েছে। এই পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণ দুই দেশের মধ্যে বড় ধরনের উত্তেজনা ও সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি করেছে। ভারত চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর সর্বশেষ এই সংকট শুরু হয়েছে। ওই হামলায় দুই পক্ষেই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ভারতের ১৫ জন ও পাকিস্তানের ২৬ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশ দুটি।

১৯৪৭ সালের রক্তক্ষয়ী দেশভাগের পর থেকে ভারত ও পাকিস্তান একাধিকবার সংঘাতে জড়িয়েছে।

১৯৪৭: দেশভাগ :দুই শতাব্দীর ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয় ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট। এরপর হিন্দু-অধ্যুষিত ভারত এবং মুসলিম-অধ্যুষিত পাকিস্তান নামে এই উপমহাদেশে দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। দেশভাগের সময় ১০ লাখের বেশি মানুষ নিহত হন এবং প্রায় দেড় কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হন।

দেশভাগের পর কাশ্মীরের রাজা সিদ্ধান্তহীনতায় পড়ে যান—ভারত নাকি পাকিস্তান, কার সঙ্গে যোগ দেবেন। এরপর পাকিস্তান-সমর্থিত যোদ্ধারা কাশ্মীরে হামলা চালান। এ সময় তিনি ভারতের সাহায্য চান। ফলে দুই দেশের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হয়।

১৯৪৯ সালের জানুয়ারিতে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ৭৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘যুদ্ধবিরতি রেখা’ কাশ্মীরকে বিভক্ত করে। এই ‘যুদ্ধবিরতি রেখা’ ‘নিয়ন্ত্রণরেখা’ হিসেবে পরিচিত।

১৯৬৫: কাশ্মীর : পাকিস্তান ১৯৬৫ সালের আগস্টে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হামলা চালালে দ্বিতীয়বারের মতো দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ওই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত হন।

১৯৭১: বাংলাদেশ : পাকিস্তান ১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) স্বাধীনতাকামী আন্দোলন দমন করতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে। ১৯৪৭ সাল থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) পাকিস্তান রাষ্ট্রের অংশ ছিল। ৯ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হন। একটা পর্যায়ে ভারত ওই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

১৯৮৯-৯০: কাশ্মীর : ১৯৮৯ সালে কাশ্মীরে বিদ্রোহ শুরু হয়। ওই সময় ভারতের শাসনের বিরুদ্ধে কাশ্মীরি জনগণের ক্ষোভ বাড়তে থাকে। পরবর্তী কয়েক দশকে হাজার হাজার সেনা, বিদ্রোহী ও সাধারণ নাগরিক নিহত হন।

১৯৯৯: কারগিল : পাকিস্তান–সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী কারগিলে ভারতীয় সামরিক পোস্ট দখল করে নেয়। ১০ সপ্তাহের ওই সংঘাতে অন্তত ১ হাজার মানুষ নিহত হন।

২০১৯: কাশ্মীর :কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জন সদস্য নিহত হন। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে পাকিস্তানের ভেতরে হামলা চালায় ভারত।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here