বঙ্গবন্ধুর আদশর্, ত্যাগ, দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা, অন্যায়ের প্রতি আপোষহীনতার কথা সবর্জনবিদিত। একজন মানুষ হিসেবে বঙ্গবন্ধু ছিলেন অসাধারণ সব গুণের অধিকারী। মানুষ কে কতটা নিঃস্বাথর্ভাবে ভালোবাসা যায় বঙ্গবন্ধু তা দেখিয়ে গিয়েছেন।
ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন বন্ধুবৎসল। কখনোবা স্কুল থেকে ফেরার পথে নিজের চাদর, ছাতা দিয়ে আসতেন গরিব দুঃখী মানুষ কে। কখনো বন্ধুদেরকে বাড়িতে নিয়ে আসতেন খাওয়ানোর জন্য। তরুণ বয়সে শেখ মুজিব ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক জলন্ত আগ্নেয়গিরি। নিলোর্ভ, নিরহঙ্কার, সত্যবাদিতা ছিল তার ভ‚ষণ। বাংলার মানুষের অধিকার আদায় ছিল তার জীবনের লক্ষ্য। বার বার জেল খেটেছেন। নিযাির্তত হয়েছেন। এমনও হয়েছে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে জেলগেট থেকে আবার গ্রেফতার হয়েছেন। তবুও তিনি দমে যাননি। পাকিস্তানে বন্দি থাকাকালীন তার সামনে কবর খেঁাড়া হয়েছিল। তারপরও তিনি অন্যায়ের কাছে মাথা পেতে দেননি। তার লাশটা শুধু বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে বলেছিলেন। একটা মানুষ দেশকে কতটা ভালোবাসলে এমন কথা বলতে পারেন। তাইতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তরুণদের বাতিঘর। বাতিঘর যেমন নিজের অজান্তেই হাজার হাজার নাবিকের জীবন বঁাচিয়ে সঠিক পথ দেখায়, তেমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বতর্মান না থেকে ও তার আদশর্ দিয়ে হাজার হাজার তরুণ কে সঠিক পথ দেখাচ্ছেন।
আমরা তরুণেরা খুব সহজেই বিভ্রান্ত হয়ে যাই। মাঝে মাঝে ভুলে যাই নিজের শিকড়কে। আর ঠিক তখনই ফিরে আসতে হয় বঙ্গবন্ধুর কাছে। মানুষকে ভালো বাসতে, শ্রমজীবী মানুষদের সম্মান করতে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে, জীবনে নিমোর্হ ও সৎ থাকতে হলে আমাদের ফিরে আসতে হয় বঙ্গবন্ধুর কাছে।
একজন তরুণ হিসেবে দেশের প্রতি কি দায়িত্ব থাকতে পারে, নিজের জীবনের সোনালি সময় ব্যয় করে বঙ্গবন্ধু তা দেখিয়ে গেছেন। দেশের ক্রান্তিকালে দেশমাতৃকার টানে কীভাবে ঝঁাপিয়ে পড়তে হয়, সব অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কিভাবে প্রতিবাদে অটল থাকতে হয়, এর সবই আমরা পাই বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে।
বঙ্গবন্ধু তরুণদের শিখিয়েছেন কীভাবে শিকল ভাঙার গান গাইতে হয়। কেমন করে ফুলের সুবাস ছড়াতে হয়। কীভাবে দেশ, মাটি আর মানুষকে ভালো বাসতে হয়। বঙ্গবন্ধুর সারাজীবনে কোনোদিন দুনীির্ত তাকে স্পশর্ করতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী কিংবা রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় ও তিনি সাধারণ জীবনযাপন করতেন। এসব গুণই তরুণদের কাছে অনুসরণীয়। বঙ্গবন্ধু তার একটা ভাষণে বলছিলেন ‘মানুষের দুঃখ দেখলে আমি পাগল হয়ে যাই’। বাংলাদেশের মানুষের দুঃখ মোচনে তাই তিনি নীলকণ্ঠ হয়ে পান করছিলেন আকণ্ঠ গরল। জীবনে সয়ে গিয়েছিলেন শত অত্যাচার, জেল, জুলুম।
সততা, নৈতিকতা, চারিত্রিক দৃঢ়তা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দূরদশির্তা সব মিলিয়ে বঙ্গবন্ধু ছিলেন হিমালয়ের সমান। তাই ফিডেল ক্যাস্ট্রো বলছিলেন ‘আমি হিমালয় দেখিনি কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি।’ জীবনের সব ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তরুণ প্রজন্মের অনুসরণীয় আদশর্। জাতীয় জীবনে দুনীির্তও ঘুষমুক্ত এবং আদশর্ জীবন গঠনে মুজিবাদশের্র বিকল্প নেই। এই জন্যই জাতির আকাশে কালো মেঘ ঘনিয়ে আসলেই আমরা তরুণেরা বার বার ফিরে আসি বঙ্গবন্ধুর কাছ। বঙ্গবন্ধুই আমাদের বাতিঘর। যে বাতিঘর নিজের অজান্তেই পথ দেখাচ্ছে বাংলাদেশের লক্ষ কোটি তরুণ কে।