কথায় বলে মাছে-ভাতে বাঙালি। তবে হালের বাঙালি এখন মজেছে মুরগিতে। বিশেষ করে বাচ্চাদের অনেকেই মাছ খেতে চায় না কাঁটার ভয়ে। তবে রোজকার খাদ্যাভ্যাসে এই মাছটিকে না রাখলে কিন্তু ভুল করবেন। ঝাল হোক কিংবা ঝোল, রুই মাছের জুড়ি নেই। করোনা আবহে রোগ প্রতিরোধের বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে বলেছেন প্রত্যেকে। রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে প্রোটিনের। রুই মাছেও রয়েছে ভরপুর প্রোটিন।

মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস এই প্রসঙ্গে বলেন, বাড়ির খাবার ভাত-মাছের ঝোল যদি নিয়মিত খেতে পারেন, এর থেকে ভাল কিছু হতে পারে না। প্রোটিনের উৎস হিসেবে মাছ খাওয়া যেতেই পারে।

ডায়েট করছেন যাঁরা, তাঁরাও মাংসের পরির্বতে রুই মাছ খেতে পারেন, মত পুষ্টিবিদদের। এই মাছে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকায় যাঁদের অতিরিক্ত মেদ রয়েছে, তাঁরা নিয়মিত এই মাছ খেতে পারেন। মাছের তেলে থাকা ওমেগা থ্রি নামক অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড যা রক্তের ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল এলডিএল ও ভিএলডিএল কমায় এবং উপকারী কোলেস্টেরল এইচডিএলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, ফলে হৃদযন্ত্রে চর্বি জমতে পারে না। আমেরিকার স্কুল অব নিউট্রিশনের জার্নাল অনুযায়ী, এই মাছ উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায় এবং উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তা কমাতেও সাহায্য করে।

ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিকাল ইনফর্মেশন বলছে, ওমেগা থ্রি রক্তের অণুচক্রিকাকে জমাট বাঁধতে দেয় না, ফলে রক্তনালিতে জমাট বাঁধার কারণে স্ট্রোক হতে পারে না। স্ট্রোক প্রতিরোধে রুই মাছের ভূমিকার কথা উল্লেখ রয়েছে বেশ কয়েকটি গবেষণাপত্রেও। পুষ্টিবিদ সোমা চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, ভাল মানের প্রোটিনের অন্যতম উৎস এই মাছ।

কী কী থাকে এই মাছে

১. ভিটামিন এ, ডি, ই রয়েছে রুই মাছে।

২. ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, লোহা-খনিজে ভরপুর এই মাছ।

এই পুষ্টিবিদের মত, ‘‘রুই মাছে কোলিন নামের একটি পদার্থ থাকে। এই এসেনশিয়াল নিউট্রিয়েন্টসটি সম্প্রতি আবিষ্কার হয়েছে, এটি ডিএনএ সংশ্লেষে সাহায্য করে। স্নায়ুতন্ত্র, ফ্যাটের বিপাক ক্রিয়া এবং পরিবহণে সাহায্য করে।’’

কিন্তু কতটা খেতে হবে এই মাছ?

ব্যালান্সড ডায়েট বা ভারসাম্য রেখে খাওয়ার বিষয়ে জোর দিতে বলছেন এই পুষ্টিবিদ। তাঁর মত, ৫০-৭৫ গ্রাম মাছ প্রতিদিন খাওয়া জরুরি। অর্থাৎ মাছের একটা বড় টুকরোই যথেষ্ট।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here