আলোকিত প্রতিবেদক:
আজ চরণদ্বীপ দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মাওলানা শাহসুফি শেখ অছিয়র রহমান ফারুকী (ক.) এর বেছাল বার্ষিকী। বোয়ালখালীর একটি আলোকিত এলাকা চরণদ্বীপ। কর্ণফুলীর কোলে প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম দৃশ্যের অপূর্ব চিত্র এই এলাকাকে ঘিরে রেখেছে নান্দনিকভাবে।
এ গ্রামেই আজ থেকে ১৭০বছর পূর্বে ১২৭০ হিজরী মােতাবেক ১২৫৯ বাংলার ৭মাঘ ১৮৫২ ইংরেজীর ২১ জানুয়ারী বুধবার শুভ জন্মগ্রহণ করেন মহান সৃষ্টার মহিমান্বিত পরশে সৃষ্টিজন হযরত শেখ অছিয়র রহমান ফারুকী (ক.)। তাঁর শ্রদ্ধাস্পদ পিতার নাম শেখ মােহাম্মদ মাজম ফারুকী এবং স্নেহময়ী মাতার নাম মােছাম্মৎ জয়নাব বিবি। বংশগত শজরা মােতাবেক তিনি ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর ফারুক (রা)-এর বংশধারার উত্তরসূরি। এদিনটি চরণদ্বীপবাসী সহ সমগ্র বোয়ালখালীর ইতিহাস ঐতিহ্যকে করেছে সমৃদ্ধ।
একদা তিনি স্বপ্নাদিত হয়ে মাইজভাণ্ডার শরীফ হযরত গাউসুল আযম মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.) এর নিকট গমনপূর্বক গাউসে পাকের খেদমতে শ্রদ্ধাবনত হয়ে নিজকে পরিপূর্ণভাবে সমর্পন করে দেন। মুর্শিদ কেবলার আলমের নির্দেশে তিনি দু’বৎসরকাল সীমাহীন প্রেমপূর্ণ এবাদত ও রেয়াজতের মাধ্যমে পবিত্রতা ও যােগ্যতা হাসিল করে ১৩০০ হিজরী সনে স্বীয় মুর্শিদ সমীপে উপস্থিত হলে তিনি একখানা চাঁদর মােবারক তাঁর আপাদমস্তকে পরায়ে দিয়ে তাঁকে প্রথম খলিফা হিসেবে দায়িত্ব ভার অর্পণ করেন।
মাওলানা শাহ চরণদ্বীপির (ক.) কামালিয়াত সম্পর্কে হযরত গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী বিভিন্ন মূল্যবান বাণী প্রকাশ বলেন- “তুমি হলে আমার ছিদ্দিকে আকবর। তুমি আমার তরিকার ও গাউসিয়াত ক্ষমতায় সর্ব প্রথম বিশ্বাস স্থাপন করে হযরত আবু বকর ছিদ্দিকের (রাদি) আসন লাভ করেছ।”
আবার হযরত গাউসুল আযম মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.) তাঁর অধিকাংশ খলিফা ও ভক্ত-অনুরক্তদেরকে প্রায়শঃ বলতেন, “আমি মাইজভাণ্ডারে ডুব দিয়ে কর্ণফুলী (কাইছা) নদীর দক্ষিণ তীরে চরণদ্বীপ গ্রামে উঠেছি এবং তথায় একখানা মসজিদ নির্মাণ করেছি। আমার মসজিদে নামাজ পড়লে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করবে।”
পবিত্র ইসলাম ও ত্বরিকতের গুরুদায়িত্ব পালন ও মানবতার অশেষ কল্যাণ সাধনে সফলকাম হয়ে ১৩২৭ বাংলার ১২ ভাদ্র, ১৯২০ খ্রীষ্টাব্দে ২৯ আগস্ট, ১৩৩৮ হিজরীর ১২ জিলহজ্ব কুতুবুল আকতাব, বিল বেরাছতে গাউসুল আজম মাওলানা শাহসূফী শেখ অছিয়র রহমান আল ফারুকী (ক) ইহ জাগতিক লীলা সংবরণ করে মহান স্রষ্টা আল্লাহর সান্নিধ্যে গমন করেন।
বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অন্যরকম জৌলশপূর্ণ অবস্থায় পালিত হবে এবারের ১০১তম বেছাল বার্ষিকী। মাহফিল উপলক্ষে জীবনী শীর্ষক আলোচনা, মিলাদ মাহফিল, জিকির আজকার ও আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করবেন দরবার পাকের সাজ্জাদানশীন পীরে ত্বরিকত হযরতুলহাজ্ব শাহসূফী শেখ আবু মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ফারুকী ( মঃ)।