একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এ তালিকা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, আমরা প্রথম পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের নামের তালিকা প্রকাশ করেছি। ভবিষ্যতে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধিনতাবিরোধীরা রাজাকার-আল বদর নামে সশস্ত্র বাহিনী গঠন করে লুটপাট ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বরের আগে তাদের নামের তালিকা প্রণয়ন করা ছিল আমরা প্রতিশ্রুতি। সংসদেও এ বিষয়ে কথা বলেছিলাম। এরই আলোকে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সংরক্ষণাগারে মুক্তিযুদ্ধের সময় নানা দালিলিক প্রমাণাদি রয়েছে, ওই সময়ের সংরক্ষিত তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ করেছিলাম।

‘কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমরা আশানুরূপ সাড়া পাইনি। তবে আমরা আবারও তাদের অনুরোধ করবো, জানুয়ারি মাসের মধ্যে সেই সময়ের তথ্যাদি পাঠিয়ে সহযোগিতা করবেন।’

মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা কোনো তালিকা তৈরি করি নাই, প্রকাশ করেছি মাত্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত পাকিস্তান সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত একাত্তরের রাজাকার, আল- বদর, আল-শামস বা স্বাধীনতাবিরোধীদের তথ্য সংগ্রহ করে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

*রাজাকারদের তালিকা দেখতে ক্লিক করুন

তিনি বলেন, তৎকালীন বিভিন্ন জেলার রেকর্ড রুম হতে এবং ওই সময়ে বিজি প্রেসে ছাপানো তালিকাও সংগ্রহের প্রচেষ্টা চলছে। যাচাই বাছাই করে ধাপে ধাপে আরও তালিকা প্রকাশ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী জানান, বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে সুকৌশলে মুক্তিযুদ্ধের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অনেক নথি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও অনেক নথি খোয়া গেছে।

তিনি বলেন, ২৬ মার্চের প্রাক্কালে দ্বিতীয় দফা রাজাকারের নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে। কোনো ব্যক্তি যাতে অযথা তালিকাভুক্ত না হয় সে বিষয়ে আমরা সজাগ রয়েছি। বেসরকারিভাবে যাদের নাম আসবে তাদের বিষয়ে তদন্ত করে শেষ ধাপে তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রয়োজনে অভিযুক্ত ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হবে।

স্বাধীনতার ঘোষণা বিষয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার অধিকার বঙ্গবন্ধু ছাড়া অন্য কারও ছিল না। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তাকে দেশের মানুষ রায় দিয়েছিল। অনেকেই তা পাঠ (স্বাধীনতার ঘোষণা) করতে পারেন।

‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরাও বিভিন্ন জনসভায় পাঠ করেছি। তাই বলে কেউ দাবি করতে পারে না যে, তিনি ঘোষক। ২৬ মার্চে বঙ্গবন্ধু-ই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তার ডাকেই বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।’

এদিকে রাজাকারদের তালিকা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here