এক মিনিটের গল্প :
হুমায়ূন আহমেদ একবার এক বৃক্ষমেলায় গেলেন, গিয়ে দেখলেন বন বিভাগের স্টলে ঔষধি গাছের সারির মধ্যে গাঁজার গাছ রাখা। তখন তাঁর মনে হলো, নুহাশপল্লীতে তো অনেক ঔষধি গাছ লাগিয়েছেন, কিন্তু গাঁজা গাছ লাগাননি। তাই তিনি নুহাশপল্লীর জন্য গাছটি কিনতে চাইলেন। তাঁকে জানানো হলো, এই গাছ নিষিদ্ধ। আনা হয়েছে শুধু প্রদর্শনীর জন্য। অনেক দেনদরবার করেও কোনো লাভ হলো না। তখন বিভিন্ন জায়গায় তিনি গাঁজা গাছ খুঁজে বেড়াতে লাগলেন। ইতিমধ্যে এ খবর অনেক কবি–সাহিত্যিক ও অভিনেতার মাঝে ছড়িয়ে গেল। গাঁজায় আসক্ত কেউ কেউ খুশিও হলেন, যাক, হুমায়ূন আহমেদ তাইলে আমাদের লাইনে আসছেন।
জনৈক অভিনেতা তাঁকে ক্ষুব্ধ গলায় বললেন, ‘হুমায়ূন ভাই, আপনি গাঁজাগাছ খুঁজে পাচ্ছেন না, এটা কেমন কথা! আমাকে বলবেন না? আমি তো গাঁজার চাষ করছি।’ বিস্মিত গলায় হুমায়ূন জানতে চাইলেন, কোথায় চাষ করছ? উত্তরে তিনি বললেন, ‘আমার ফ্ল্যাটবাড়ির ছাদে। আমার অনেক টব আছে। ফ্রেশ জিনিস পাই। ফ্রেশ জিনিসের মজাই আলাদা।’
কিছুদিন পর ওই অভিনেতার সৌজন্যে দুটি গাঁজাগাছের টব চলে এল হুমায়ূন আহমেদের কাছে। ঔষধি গাছের কালেকশন বাড়ল বলে তিনি বেশ খুশি হলেন। কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! যেদিন গাছ লাগানো হলো, এর পরদিনই তা চুরি হয়ে গেল। নুহাশপল্লীর সবাই তো ভয়ে অস্থির, এখন কী হবে? হুমায়ূন আহমেদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, যে নিয়েছে, তার প্রয়োজন আমার চেয়েও বেশি। তাই সে এ কাজ করেছে। মানে, আমি তো আর এই জিনিস খাই না, তাই যে খায়, তার প্রয়োজনটাই তো বেশি!
কথা শুনে উপস্থিত সবাই আর কী করবেন, হেসেই দিলেন।
সূত্র: হুমায়ূন আহমেদের বই ‘রঙপেন্সিল’
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here