মো. তাজুল ইসলাম রাজু
বোয়ালখালী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের হাওলা সৈয়দ মা’রুফ (রহঃ), সৈয়দ কুতুব (রহঃ) প্রকাশ মামা-ভাগিনার মাজার শরীফ এবং বেঙ্গুরা গ্রামে হযরত শাহচান্দ আউলিয়া (রহঃ) এর বার্ষিক ওরশ শরীফ অনুষ্ঠিত হয় ২০ মাঘ। এ পবিত্র মাজার গুলো নিয়ে একটি ঐতিহাসিক তথ্য উপস্থাপন করা হলো-
এই মহান আল্লাহর অলিগণ আরাবীয়ান অলি, ইসলাম প্রচারের কাজে এই দেশে তশরীফ এনেছেন, এরপর একেক অলি একেক জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন।
এখন কারো মনে প্রশ্ন থাকতে পারে আরাবীয়ান এই অলিগণ ইসলাম প্রচারে এই দেশে আসছে ঠিক কিন্তু এই অলিগণের মাজার শরীফ, অলীগণের নাম মোবারক, ওরশ শরীফের তারিখ, ওরশ শরীফ কার হুকুমে উদযাপন করা হয় । তা জানার অধিকার সবার আছে।
বাস্তবিক পক্ষে এই মহান অলিগণের মাজার শরীফ সনাক্ত করেছেন এদেশের আধ্যাত্মিক জ্ঞান চর্চার অনন্য লীলাভূমী চট্টগ্রাম আহলা দরবার শরীফের আধ্যাত্মিক শরাফতের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কুতুবে জামান, কুতুবুল আকতাব হযরত জনাব কাজী আসাদ আলী সাহেব ক্বেবলা (রহঃ) ।
জনাব কাজী আসাদ আলী ক্বেবলা (রহঃ) এমন একজন আল্লাহর অলি ছিলেন যিনি আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, রাস্তা দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় কবরস্থানে মানুষের কবরের ভেতরের অবস্থা সহ অনুধাবন করতে পারতেন। আপন পীর ও মুরশীদ হুজুর গাউসুল আজম মাইজভান্ডারী (কঃ) যাকে `আমার জনাব’ বলে সম্বোধন করতেন এবং উনাকে কুতুবে জামান বলে ঘোষনা দিয়েছেন।
শুধু তাই নই, আল্লামা গাজী শেরে বাংলা (রহঃ) উনার লিখিত বিশ্ববিখ্যাত কিতাব দেওয়ানে আজিজ শরীফে জনাব কাজী আসাদ আলী ক্বেবলার শানে একটি মানকাবাদ লিখেছেন এবং সেখাবে জনাব কাজী আসাদ আলী ক্বেবলা (রহঃ)কে ক্বাশফুয়াল কারামতের অধিকারী একজন আল্লাহর অলী বলে অভিহিত করেছেন।
একদা জনাব কাজী আসাদ আলী ক্বেবলা (রহঃ) সৈয়দপূর গ্রামের এই রাস্তাগুলো দিয়ে হেটে যাওয়ার সময়, হঠাৎ করে সবাইকে ফেলে বর্তমান যেখানে মামা-ভাগিনার মাজার শরীফ নির্মিত হয়েছে সেই জায়গাগুলোতে অবস্থান করছিলেন। জনমনে প্রশ্ন উঠলো, জনাব ক্বেবলা বন জঙ্গলে কোথায় চলে গেলেন?
দীর্ঘক্ষণ পর জনাব ক্বেবলা তশরীফ আনলেন এবং সবার উদ্দেশ্যে ঘোষণা দিলেন, আপনারা যারা এই এলাকার বাসিন্দা শুনে রাখেন, জেনে রাখেন, এই জায়গায় আল্লাহর একজন অলী অবস্থান করছেন, উনি ইসলাম প্রচারে এইখানে তশরীফ এনেছিলেন, উনার নাম সৈয়দ মা’রুফ (রহঃ) এই জায়গাগুলো আপনারা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন, এইখানে মাজার শরীফ নির্মান করবেন, ওরশের তারিখ দিলেন, আপনারা প্রতি বছর এই তারিখে উনার ওরশ শরীফ উদযাপন করবেন, মিলাদ কিয়াম ফাতেহার ব্যবস্থা করবেন, উনি আপনাদের এলাকার জন্য রহমত এরপর থেকেই মূলতঃ এই ওরশ শরীফের প্রচলন।
এইভাবে একেক সময় একেক করে জনাব ক্বেবলা অনেক যুগশ্রেষ্ট আল্লাহর অলীর মাজার সনাক্ত করেছেন।তারমধ্যে শাহেনশাহে আদালত হযরত শাহ আমানত খান (রহঃ),পটিয়া নলান্ধা শহীদ গাজী আফজাল আউলিয়া (রহঃ),বোয়লাখালীর খিতাবচর গ্রামের আটতলা দরগাহ শরীফের হযরত ইউছুফ শাহ (রহঃ),পুরাতন দরগাহ শরীফের হযরত হাসান শাহ ইউনানী (রহঃ),পীরের দরগাহ শরীফের হযরত শাহচান্দ আউলিয়া (রহঃ), বোয়ালীখালীর কড়লডেংগা হযরত শরফুদ্দীন বু-আলী কালন্দর শাহ (রহঃ) এর আস্তানা শরীফ সহ অসংখ্য আউলিয়া কেরামের মাজার শরীফ চিহ্নিত করে দিয়েছেন এবং এই মাজার শরীফসমূহ সনাক্ত করতে গিয়ে অনেক ক্বারামত বিদ্যমান রয়েছে।