রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ভয়াবহ জঙ্গি হামলা মামলার রায় ঘিরে ঢাকাসহ সারাদেশে পুলিশ নজরদারি শুরু করেছে। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা সাইবার জগতে বিশেষ নজরদারি শুরু করেছে। রায় উপলক্ষে কোনো জঙ্গি গোষ্ঠী যাতে হামলার চেষ্টা বা বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেজন্য সচেষ্ট রয়েছে পুলিশ।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, রায় ঘিরে নব্য জেএমবির আনাগোনা কিছুটা কমলেও পুরনো জেএমবি সদস্যদের অনেক বেশি সক্রিয় থাকতে দেখা যাচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির কারণে তারা ধরাও পড়ছে। জঙ্গিদের আড়ালে অন্য কেউ যাতে সুযোগ নিতে পারে সেজন্যও নজরদারি করা হচ্ছে। তবে রায়ের দিন, রায়ের আগে ও পরে আদালত চত্বর থেকে শুরু করে সব জায়গায় নিরাপত্তা জোরদার থাকবে।
তিনি বলেন, আগামী ২৭ নভেম্বর আদালত হলি আর্টিজানে হামলা মামলার রায় ঘোষণা করবে। এই মামলার চার্জশিট দেওয়ার জন্য প্রথমে কোনো ক্লু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক বেশি হিমশিম খেতে হয়েছে। কারণ হলি আর্টিজানে যে ৫ জন হামলা চালিয়েছিল, তাদের সবাই ওইদিনই মারা গেছে। এরপর যারা তাদের পৃষ্টপোষকতা দিয়েছিল তাদের ৮ জন বিভিন্ন অভিযানে মারা গেছে। হামলার সাথে জীবিত কাউকে না পাওয়ায় দীর্ঘ সময় লেগেছে। এরপরেও হামলার আগে পরে কার কি ভূমিকা ছিল তার সবই চার্জশিটে তুলে ধরা হয়েছে। সবশেষে ৮ জনের বিরুদ্ধে বিচারকাজ শেষ করেছে আদালত। এখন রায়ের পালা।
মনিরুল ইসলাম বলেন, যদিও এই মুহুর্তে নব্য জেএমবি ও পুরনো জেএমবি অথবা আনসার আল ইসলাম কারোরই হামলা চালানোর মতো শক্তি সামর্থ নেই। সবার কার্যক্রম নজরদারিতে রাখা হয়েছে। কিছুদিন আগে রাজধানীর ৫টি স্থানে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছিল। পুলিশ তাদেরও খুঁজে বের করেছে। তারা মূলত নব্য জেএমবির একটি সেল ছিল। ওই একই সেলই ৫ জায়গায় হামলা চালিয়েছিল। তাদের মধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী দুজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ফলে আর কেউ খুব কাছাকাছি সময়ে হামলা করবে এরকম কোনো তথ্য নেই সিটিটিসির কাছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, জঙ্গিরা সব সময়ই হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকে। তবে তাদের গতিবিধি নজরদারিতে থাকায় তারা দৌড়ের ওপর রয়েছে। জঙ্গি সংগঠনগুলোর বর্তমান অবস্থা এমন হয়েছে যে, সমর্থক আছে তো নেতা নেই। আবার নেতা থাকলেও ক্যারিশম্যাটিক নেতা নেই। ফলে একটি হামলার জন্য এবং একটি সংগঠন পরিচালনার জন্য যাকে দরকার তার অভাব রয়েছে। তবে রেডিক্যালাইজেশনের মাত্রা বেড়েছে। সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোসহ জঙ্গি নেটওয়ার্কগুলোতে লক্ষ্য করলে বোঝা যায়। এই রেডিক্যালাইজড ব্যক্তিদের এক্সট্রিম পর্যায়ে নিয়ে জঙ্গিতে পরিণত করতে সমস্যা হচ্ছে।