সৈয়দ আমির আলী (জন্ম: ৬ই এপ্রিল, ১৮৪৯-মৃত্যু: ৩রা আগস্ট, ১৯২৮) ছিলেন একজন ভারতীয় মুসলিম আইনজ্ঞ যিনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম মুসলিম বিচারপতি ছিলেন। এছাড়াও তিনি ছিলেন একাধারে একজন আইনজ্ঞ, সমাজ সংস্কারক এবং লেখক। তিনি ইসলামের ইতিহাস নিয়ে কয়েকটি বিখ্যাত বই লিখেছিলেন। তার বইগুলোর মধ্যে অন্যতম হল দ্যা স্প্রিট অফ ইসলাম। এই বইটিই পরবর্তীকালে বৃটিশ রাজের সময় ভারতের আইনে মুসলিম আইন প্রবর্তন করার পেছনে ভূমিকা রেখেছিল। সৈয়দ আমীর আলী অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। উনিশ শতকের আশির দশকে তিনি ভারতীয় মুসলমানদের রাজনৈতিক জাগরণের উদ্যোক্তা ছিলেন।
জন্ম
তিনি ১৮৪৯ সালের ৬ই এপ্রিল উড়িষ্যর কটকে জন্ম গ্রহণ করেন। ইরানের মেশেদ থেকে আগত এক শিয়া পরিবারের বংশধর সৈয়দ সা’দাত আলীর পাঁচ পুত্রের মধ্যে তিনি ছিলেন চতুর্থ। আমীর আলীর প্রপিতামহ ১৭৩৯ সালে নাদির শাহের সৈন্যদলের সাথে ইরান পরিত্যাগ করে ভারতীয় উপমহাদেশে আসেন এবং অতঃপর মুগল ও অযোধ্যার দরবারে চাকরি করেন।
শৈশব
জানা যায় আমির আলীর প্রপিতামহ ১৭৩৯সালে নাদির শাহের সৈন্য বাহিনীর সাথে ভারত বর্ষে আসেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] সৈয়দ আমির আলী জম্মের পর তার পিতা সপরিবারে কলকাতা আসেন। সেই থেকে তিনি কলকাতায় থাকেন।পরবর্তীতে তারা চীনসুরায় আবাস গড়ে তোলেন।
শিক্ষাজীবন
হুগলী মাদ্রাসায় পড়ার সময় তিনি হুগলী মাদ্রাসার ব্রিটিশ শিক্ষকদের সংস্পর্শে আসেন এবং পরীক্ষায় কৃতিত্ত্বের সাথে পাশ করেন। ১৮৬৭ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসামান্য কৃতিত্ব সহকারে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ১৮৬৮ সালে অনার্স সহ ইতিহাসে এম.এ পাস করেন। ১৮৬৯ সালে এলএলবি শেষ করার পর তিনি সরকারি বৃত্তি নিয়ে তিনি লন্ডন যান। তাঁর পরিবার একজন মৌলভিকে গৃহশিক্ষক নিয়োজিত করে, যিনি তাঁকে কুরআন, আরবি ও ফারসি শিক্ষা দিতেন। পরবর্তীসময়ে গৃহের বাইরে তিনি অধিকতর উচ্চ পর্যায়ে আরবি ভাষা শেখেন।
অবদান
তিনি কলকাতা হাইকোর্ট এর প্রথম মুসলিম বিচারপতি ছিলেন। রাজনৈতিক এবং সকল সামাজিক কাজে তিনি অংশ গ্রহণ করতেন। ভারতীয় মুসলমানদের নিয়ে তিনি চিন্তা করতেন এবং তিনি অনেক জনসভায় বক্তৃতা দিতেন। কলকাতা শহরে তিনি শুধু আইনজীবিই ছিলেন না পাসোনাল ল অব মোহামেডান এর লেখক এবং শিক্ষককতাও করেছেন।
রচিত বই
মৃত্যু
সৈয়দ আমীর আলী ১৯২৮ সালের ৩ আগস্ট ইংল্যান্ডে মারা যান। সন্তানেরা তাঁর নির্দেশানুযায়ী তাঁর ব্যক্তিগত কাগজপত্র নষ্ট করে ফেলেন।