সূফিবাদ ডেস্ক :
শরীয়তশাস্ত্র যেখানে শিক্ষাদান করা হয় তাকে মাদ্রাসা বলা হয়ে থাকে।আর তরীকতে দীক্ষার আলয়কে বলে খানকাহ। খানকাহ শব্দটি ইসলামের ইতিহাসে পরবর্তী সময়ে এসেছে। পূর্বে খানকাহের নাম ছিল স্বওমায়া বা আশ্রম অথবা যাউইয়াহ বলা হত। তারীখে তাসাউফ বা তবাকাত দেখলে সেখানে প্রথম যুগের আওলিয়ায়ে কিরামগণের খানকাহকে যাবিয়া অথবা স্বওমায়াহ নামে পাওয়া যাবে।
পরবর্তীকালে সাওমায়াহ খানকাহ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। খানকাহ শব্দটি মূলতঃ ফারসী ‘খানাগাহ’ শব্দ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। খানাগাহ বলা হয় আহারের স্থান অথবা Lodge কে। পরবর্তীকালীন সালতানাত বা ইমারত সমূহে যাবিয়াহকে খানকাহ বলা হত। যেমন ইতিহাস হতে জানা যায় যে মিশর দেশে সুলতানী যুগে কায়রো নগরী ছিল খানকাহের জন্য বিখ্যাত। ইমাম ইবনু বতুতা লেখেনঃ
“আর (কায়রোর) যাবিয়াহ সমূহ ছিল প্রচুর। তারা অর্থাৎ কায়রোবাসী সেগুলোকে খাওয়ানিক বলত। আর তার (অর্থাৎ ‘খাওয়ানিক’ শব্দটির) একবচন হল খানকাহ। মিশরের আমীরগণ যাবিয়াহ তৈরিতে প্রতিযোগিতা করতেন।”¹
কুদস বিজেতা বিখ্যাত সুলতান হযরত স্বলাহুদ্দীন আল আইয়ূবী রাহিমাহুল্লাহ নিজেই কাদেরী পীর ছিলেন এবং তিনি অলী আওলিয়াগণের খানকাহও তৈরি করতেন। পবিত্র আল কুদস শরীফ বিজয়ের পর সেখানে তিনি একটি সূফী খানকাহ শরীফ তৈরি করেছিলেন যা আল খানকাতুস স্বলাহিয়্যাহ নামে প্রসিদ্ধি পায়। সুলতান রুকনুদ্দীন বাইবার্স রাহিমাহুল্লাহ কাইরো নগরীতে একটি বিশাল সুরম্য খানকাহ তৈরি করেছিলেন যা তাঁর নামে খানকাতু বাইবার্স রাখা হয়। খানকাহটি আজও কাইরো নগরীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here