সাইবার অপরাধ রোধে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কোনো পোস্ট শেয়ার করলে তার সত্যতা যাচাই না করে কৌতূহলবশত প্রকাশ না করাই ভালো। গুজবে কান না দিয়ে সে বিষয়ে আগেই কোনো মন্তব্য না করে তা যাচাই করা উচিত। সেটা আমাদের সমাজ ও দেশ সবার জন্যই মঙ্গল।

আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যাবে। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ আর কল্পনা নয়, এটি বাস্তবে পরিণত হয়েছে। আমরা স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি, যার কারণে দেশ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল এখন সবাই ভোগ করছে। এর মাধ্যমে আমাদের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে। সবাই এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। দেশের বেশিরভাগ জায়গায় ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি রয়েছে। এ ছাড়া দুর্গম এলাকায়ও ব্রডব্যান্ডের কানেক্টিভিটি দেওয়া হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশে ই-পাসপোর্ট প্রস্তুতের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই এটি চালু হবে। এছাড়া কৃষিতে তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা আজ অনস্বীকার্য। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও গ্রামীণ জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ই-কৃষির অবদান রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের তরুণ-তরুণীকে আউটসোর্সিং বিষয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধি করে মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে আইসিটি বিভাগের আওতায় লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় প্রফেশনাল আউটসোর্সিং ট্রেনিং প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে তরুণ-তরুণীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আউটসোর্সিং বিষয়ে প্রকল্পভিত্তিক কাজ করার সুযোগ থাকবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দারিদ্র্যের হার ২০ ভাগে নামিয়ে এনেছি। সামনে আরও নামিয়ে আনবো। বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে থেকে উন্নত দেশে পরিণত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গে এই দেশকে একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার দায়িত্বও তিনি নিয়েছিলেন ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশে ফিরে আসার পর। আমাদের যে সংবিধান তিনি দিয়ে গেছেন এর সঙ্গে সঙ্গে আজকে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি- তার ভিত্তিটাও তিনি রচনা করে দিয়ে গেছেন।

তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালে ইন্টারন্যাশনার টেলিকমিউনিকেশন্স ইউনিয়নের সদস্য পদ বাংলাদেশ অর্জন করে। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্বেই আমাদের প্রতিটি অর্জনের ভিত্তিটা তিনি রচনা করে গেছেন। যখন রাষ্ট্র পরিচালনা করতে যাই, তখন প্রতিটা ক্ষেত্রেই দেখি তার সেই অবদান রয়েছে। এক দিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলা, অপরদিকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ তিনি নিয়েছিলেন।

সরকারপ্রধান বলেন, বহুমুখী সেবা আমরা দিয়ে যাচ্ছি। মানুষকে বিভিন্ন সেবা দেওয়ার যে সুযোগ আমরা সৃষ্টি করেছি, তাতে জনগণ লাভবান হচ্ছে। পাশাপাশি এখন বিভিন্ন ধরনের ক্রাইম হয়ে থাকে। মানুষ যেন তাৎক্ষণিক সেবা পেতে পারে, তার জন্য ৯৯৯, ৩৩৩, ১০৯- এসব জায়গায় ফোন দিলে সঙ্গে সঙ্গে জরুরি সেবা পায়। তাতে সাধারণ মানুষের ভেতর আস্থা-বিশ্বাস যেমন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি তৈরি হয়েছে, তেমনি সরকারের ওপরও এসেছে যে কোনও সমস্যা হলে তার একটা সমাধান পাওয়া যায় বা নিরাপত্তা পাওয়া যায়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এমএম জিয়াউল আলম স্বাগত বক্তব্য দেন।

ডিজিটাল প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় অনুষ্ঠানে ১৫ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়া হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here