পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে। এটি রূপ নিয়েছে ‘ভেরি হেভি সাইক্লোনিক স্টর্ম’ হিসেবে (ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতার মাত্রায় সাত ক্যাটাগরির মধ্যে পঞ্চম)।
এ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড়টির গতিবিধি দেখে মনে হচ্ছে এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল বা তার পার্শ্ববর্তী এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এটি শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল বা দুপুর নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলেও জানান এই আবহাওয়াবিদ।
এর আগে ঘূর্ণিঝড়টির কারণে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছিল। শুক্রবার সকালে সংকেত বাড়ানো হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের মাত্রার ওপর ভিত্তি করে আবহাওয়া অধিদপ্তর সমুদ্রবন্দরের জন্য ১১টি এবং নদীবন্দরগুলোর জন্য চারটি সংকেত ব্যবহার করে।
সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেতর মানে হলো- বন্দর ঘূর্ণিঝড়কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিলোমিটার। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মত তেমন বিপদজনক অবস্থা এখনো আসেনি।
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে সমুদ্র বন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতি সত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবারই ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, এটি উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার থেকে ১৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। সেজন্য পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে জারি করা হয়েছে অরেঞ্জ অ্যালার্ট (প্রাকৃতিক দুর্যোগের তিনটি সতর্কতার মধ্যে দ্বিতীয়)।