সন্তান দান করে আল্লাহ তায়ালা আমাদের পরীক্ষা করেন। তিনি কাউকে ছেলে দান করেন, কাউকে মেয়ে দান করেন। কাউকে ছেলেমেয়ে উভয় দান করেন। একাধিক সন্তানের বেলায় পিতা-মাতার দায়িত্ব সব সন্তানকে সমান দৃষ্টিতে দেখা। এক সন্তানকে অন্যের ওপর প্রাধান্য না দেওয়া।

আমাদের দেশে সাধারণত কন্যাসন্তানকে অবহেলা করে পুত্রকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। কোনো কোনো পরিবারে দেখা যায়, মেয়ের সব চাওয়া পূরণ করা হয় না। অথচ ছেলে যা চায় তা-ই পায়।

ইসলামের দৃষ্টিতে এ ধরনের বৈষম্য কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। সাহাবি হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যার ঘরে কোনো কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করল, আর সে তাকে কোনো কষ্ট দিল না, তাকে অপমাণিত করল না এবং তার পুত্রসন্তানদের তার ওপর প্রাধান্য দিল না, আল্লাহ তাকে এই সন্তানের ওসিলায় জান্নাতে দাখিল করবেন।’ (মুসনাদে আহমাদ)

কোথাও কোথাও এক ছেলেকে আরেক ছেলের ওপর প্রাধান্য দেওয়া হয়। এটাও নিষেধ। হজরত নুমান ইবনে বশির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- একবার তার পিতা তাকে নিয়ে রাসুল (সা.)-এর কাছে গেলেন এবং বললেন, আমি আমার এই ছেলেটিকে একটি গোলাম দান করেছি। রাসুল (সা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি তোমার সব সন্তানকেই এমন দান করেছ? পিতা উত্তরে বললেন, না। সবাইকে দিইনি। রাসুল (সা.) তখন বললেন, তাহলে এ গোলাম ফেরত নিয়ে নাও। (বুখারি শরিফ)

রাসুল (সা.)-এর উদ্দেশ্য হলো, দিলে সবাইকে দাও। কাউকে দেবে, আর কাউকে দেবে না, এ হতে পারে না। প্রিয় পাঠক! পিতা যেমন সব সন্তানের কাছ থেকে ভালো ব্যবহার আশা করে, সন্তানরাও তেমন পিতার কাছ থেকে সমান আচরণের প্রত্যাশা করে। যদিও আইনগতভাবে পিতার এই অধিকার আছে যে, জীবিত ও সুস্থ অবস্থায় তিনি তার সম্পদ যাকে যতটুকু ইচ্ছা দিতে পারেন। কমবেশি করতে পারেন। সন্তানকেও দিতে পারেন, আবার সন্তান ছাড়া অন্য কাউকেও দিতে পারেন। তবে সন্তানদের দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া ব্যতিক্রম করা মাকরুহ। এ ধরনের কাজ অনেক সময় পারিবারিক দ্বন্দ্ব-কলহ ও তিক্ততা সৃষ্টি করে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here