আলোকিত ডেস্ক: সদরঘাট থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ওয়াটার বাস আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ চালু হবে বলে জানিয়েছেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ।
শনিবার (২০ জুলাই) বন্দর ভবনের সম্মেলন কক্ষে সাম্প্রতিক যানজট নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
যানজট থেকে নগরবাসীকে স্বস্তি দেওয়ার জন্য স্বল্পকালীন ব্যবস্থা হিসেবে নৌপথ চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, নৌপথের জন্য ইতিমধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। সদরঘাটে টার্মিনাল বানানো শেষ। বিমানবন্দরের টার্মিনালের কাজও বেশ অনেকখানি শেষ হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছে দ্রুততম সময়ে নৌপথটি চালু করা।
সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় প্রসঙ্গে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, সমন্বয়ই হচ্ছে সমাধান। সমন্বয়ের বিকল্প নেই। দরকার হলে সমন্বয় সভা ঘন ঘন করতে হবে। টাইম ফ্রেম নির্ধারণ করতে হবে। উন্নয়নকাজ চলাকালীন কতটা সময় নগরবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে তা প্রচার করতে হবে। তাহলে ভোগান্তি কমবে। বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ের কমিটি আছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য একটি কমিটি হয়েছে। কয়েক দিন আগে তাদের ডিজাইন আমাদের দেখিয়ে নিয়ে গেছে। বারিকবিল্ডিং থেকে সল্টগোলা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এমনভাবে ডিজাইন করা হচ্ছে এটি সড়কের ওপর উঠবে না। পিলার থাকবে না সড়কে। সড়ক আরও বড় হবে। আমাদের চাহিদা ছিল এ সড়কের ওপর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যাতে না ওঠে। তাই এটি নির্মাণকালে চট্টগ্রাম বন্দরের কাজ ব্যাহত হবে না।
তিনি বলেন, দিনে ৯-১১ হাজার কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছি ২০১৮ সালে। বাইরে কোনো প্রভাব পড়েনি। নতুন নতুন গ্যান্ট্রি ক্রেন যুক্ত করেছি। আরও চারটি যুক্ত হচ্ছে। বন্দরের ওভার ফ্লো ইয়ার্ডের কাজ অর্ধেক শেষ হয়েছে। পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল তৈরি হচ্ছে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়ছে। এখন সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন সড়কের। আমাদের আওতায় যেটুকু সড়ক আছে সেগুলো আমরা করতে পারি। টোল রোড বন্দর কর্তৃপক্ষকে দিয়ে দেওয়ার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগকে চিঠি দিয়েছি। নিচে সড়ক থাকবে একটি বন্দরে গাড়ি ঢুকবে। উচ্চপর্যায়ে কথা হচ্ছে সড়কটি আমাদের যাতে দিয়ে দেওয়া হয়। উপরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থাকবে যেটি দিয়ে বন্দর থেকে গাড়ি বের হবে।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বে-টার্মিনাল এলাকায় আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। আশাকরি, ঈদুল আজহার আগে অনুমোদন পেয়ে যাবো। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে যাবে।
ট্রেনে কনটেইনার পরিবহন বাড়ানোর উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কমলাপুর আইসিডিগামী আগে দুইটি ট্রেন ছিল। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব শনিবার (২০ জুলাই) বন্দর পরিদর্শন করে জানিয়েছেন চারটি কনটেইনারবাহী ট্রেন দেবেন। আমাদের আগামী পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরেছি।
বন্দর উপদেষ্টা কমিটির সভায় বন্দরের কাছাকাছি অফডকগুলো সরানোর সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, দুই বছরের মধ্যে ধীরে ধীরে সরাতে হবে। উনারা সরানোর ব্যাপারে কার্যক্রম শুরু করেছে। আমরা নিয়মিত চাপে রেখেছি সরানোর ব্যাপারে। এটি ঠিক যে অফডক চট্টগ্রাম বন্দরেরই অংশ। নতুন অফডক তৈরির আগে যদি সরানো হয় তবে রফতানি ব্যাহত হবে। নির্দিষ্ট সময়ে সরানোর ব্যাপারে মনিটরিং করবো। বাস্তবতা হচ্ছে এ কাজের জন্য সময় বাড়াতে হবে।
এক প্রশ্নের উত্তর তিনি বলেন, কর্ণফুলীর পাড়ে লালদিয়ার টার্মিনাল পিপিপির মাধ্যমে হচ্ছে। সেপ্টেম্বরে অফার পাবে ৫টি কোম্পানি থেকে। উচ্ছেদ চলমান প্রক্রিয়া। প্রতিদিনই উচ্ছেদ হয় ছোটখাটো। লালদিয়া টার্মিনালের কাজ শুরুর আগেই উচ্ছেদ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। কর্ণফুলীর পাড় থেকে বড় ধরনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ খুব তাড়াতাড়ি শুরু করা হবে। এ সপ্তাহেই শুরু হতে পারে। উচ্ছেদের সময় সাংবাদিকদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম, সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর খন্দকার আক্তার হোসেন, সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) ক্যাপ্টেন এম শফিউল বারী, পরিচালক (নিরাপত্তা) লে. কর্নেল তানভীর আহাম্মদ জায়গীরদার, সচিব মো. ওমর ফারুক, উপ ব্যবস্থাপক (ভূমি) জিল্লুর রহমান প্রমুখ।