আলোকিত ডেক্স : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। আর সেই উন্নয়ন হবে দেশের পুরো মানুষের। প্রতিটি মানুষের জন্য। তাই শুধু চাকরির জন্য চাকরি নয়, দেশের মানুষকে ভালোবেসে, দেশের মানুষের সেবা করতে হবে।
আজ রবিবার রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্মক্ষেত্রে সব থেকে বড় কথা আত্মবিশ্বাস। কোনো একটা কাজ করতে গেলে কীভাবে করব, কীভাবে হবে, কীভাবে টাকা আসবে, কোত্থেকে টাকা আসবে.. এত দুশ্চিন্তা না করে মনে রাখতে হবে এ কাজটা করতে হবে। কীভাবে করতে হবে সেটা নিজেই খুঁজে বের করতে হবে। নিজের ভেতর ইনোভেটিভ চিন্তা থাকতে হবে। দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগলে চলবে না। মনে করতে হবে অবশ্যই পারব।
তিনি বলেন, মাঠ প্রশাসনে যারা কাজ করবেন ওখানকার মানুষের সমস্যাগুলো বের করতে হবে খুঁজে। সমাধানের পথ বের করতে হবে। তারা যেন ন্যায় বিচার পায় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। শুধু গতানুগতিকভাবে দেশ চালালে চলবে না। দেশকে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন করে একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত চলতে হবে। কারণ আমরা ঘোষণা দিয়েছি প্রত্যেকটা গ্রামের মানুষ শহরের সুযোগ পাবে। সেভাবে কিন্তু আমরা গ্রামকে গড়ে তুলতে চাই। সেভাবে কিন্তু আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থাও গড়ে তুলছি।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, খেয়াল রাখতে হবে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক যেন আমাদের সমাজকে ধ্বংস করতে না পারে। প্রতিটি অর্থ জনগণের অর্থ এটা মাথায় রাখতে হবে। আমরা বেতন-ভাতা যা পাচ্ছি সেটা এ দেশের কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী মানুষের অর্থ, এটা মাথায় রাখতে হবে। তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করা, তাদের উন্নতি করা এটাই আমাদের কর্তব্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে যে স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল সেই স্বাধীনতার সূর্য আওয়ামী লীগের হাতেই উদিত হয়েছিল।
তিনি বলেন, পাকিস্তান এক অদ্ভুত রাষ্ট্র। সে সময় তাদের সঙ্গে আমাদের জুড়ে দেয়া হলো। তাদের সঙ্গে আমাদের সংস্কৃতি থেকে শুরু করে কোনো কিছুরই মিল ছিল না। আজ আমরা তাদের থেকে অনেক এগিয়ে গেছি। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই স্বাধীনতা এসেছিল বলেই বাংলাদেশের মানুষ আজ স্বাধীন। তিনি দেশকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন বলেই বাঙালিরা আজ সর্বক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে।
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের হাত ধরেই দেশ স্বাধীন হয়েছে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় থেকেছে দেশ এগিয়েছে। বাংলাদেশ এখন পাকিস্তান থেকেও এগিয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া আমরা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি।
তিনি বলেন, এক সময় ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল। নীতির বিরোধিতা করা হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে আমাদের সরকার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করলেও তখন বিরোধী দল বিএনপি বিরোধিতা করেছিল। এখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের কথা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচ এম আশিকুর রহমান, জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমেদ, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর কাজী রওশন আক্তার প্রমুখ।