মো. তাজুল ইসলাম রাজু

প্রকাশ-২৪/১২/২০২০

১. আবদুর রহমান বিশ্বাস
মানব প্রেম, সামাজিক কল্যাণ ও আত্মিক সমৃদ্ধিতে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ এর সাধক হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ) তাঁর পবিত্র জীবন ও চরিত্রমাধুর্যে জাগতিক জীবনকে সুন্দর করার প্রেরণা জুগিয়েছেন। তিনি আল্লাহর নৈকট্যধন্য হয়ে শান্তির ধর্ম ইসলামের অনুসরণে জীবন গড়ার তাগিদ দিয়েছেন। এ দেশে ইসলামের মহান বাণী প্রচারে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের অবদান তাই অনস্বীকার্য।
-সাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতি, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। মাইজভাণ্ডার সন্দর্শন, ড. সেলিম জাহাঙ্গীর, বাংলা একাডেমী-ঢাকা, ১৯৯৯, পৃ. ২১৯.

আরো পড়ুন : তিন যুগের কিনারায় হকভাণ্ডারী স্মরণ সভা সংসদ: ১৮ ডিসেম্বর ৩২তম অনুষ্ঠান

২ মিজানুর রহমান চৌধুরী
আধ্যাত্মিক পরিমন্ডলে মানবতার জয়গানে মুখরিত, ধর্মসাম্যের বক্তব্য নিয়ে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সকল ধর্মের অপূর্ব মিলনকেন্দ্র হিসেবে বিগত শতাধিক বছর ধরে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ এক অনন্য সমন্বয়কারী ঐতিহ্যের সৃষ্টি করেছে। মানবপ্রেম, সামাজিক কল্যাণ ও আত্মিক সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ এর ভূমিকা সর্বজনীকৃত। মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ এর মহান আধ্যাত্বিক প্রাণ-পুরুষ, বিশ্বঅলি শাহানশাহ হযরত জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ) স্বীয় জীবনাচরণ, পবিত্র চারিত্রিক মহিমায় জাগতিক জীবনকে সুন্দর ও মঙ্গলময় করার প্রেরণা দিয়েছেন। ১৯৮৮ সালে এক সফরের সময় একান্ত অনুরোধে তিনি আমার গুলশানের বাসায় উঠেন। আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক সাহেব (সাবেক বন্যা নিয়ন্ত্রক ও পানি সম্পদ মন্ত্রী ১৯৯৬-২০০১) দোয়া প্রার্থী হলে দু’জনকে লক্ষ্য করে মৃদু হেসে বলেন, আপনারা দু’জন তো এক জায়গার লোক। বললাম, আমরা দেশে এমন এক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরী করেছি যেখানে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ঠিক রাখাও সব হয় না। আত্মীয় উল্লেখে তিনি আমার মনকে এমন এক গভীর মমতায় ভরিয়ে তোলেন যেন জীবনে আর কারো কাছ থেকে পাইনি। আমি গুনাহগার বান্দা, তিনি আমাকে বহু কিছু দিতে চাইলেও নিতে জানিনি।
-রাজনীতিবিদ; সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। মাইজভাণ্ডার সন্দর্শন পৃ ২১৭ এবং শাহানশাহ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক), জামাল আহমদ সিকদার, মাইজভাণ্ডার শরীফ, চট্টগ্রাম।

আরো পড়ুন মাইজভাণ্ডার সম্পর্কে প্রখ্যাত মনীষীদের মন্তব্য

৩. শেখ হাসিনা
মাইজভাণ্ডারী সাধনা যেমনি ইসলামের সৌন্দর্য ও ভিত্তিতে গণমুখী করেছে, তেমনি বাঙালী সংস্কৃতির ধারায় সংযোজিত করেছে একটি স্বতন্ত্র সাংগীতিক উজ্জীবনের। সঙ্গীতের মাধ্যমে মহান আল্লাহ ও পীরের স্মরণ মাইজভা-ারী ধারায় একটি উল্লেখযোগ্য শিল্পময়তা-যা বাঙালি সংস্কৃতিকে দিয়েছে নতুন মাত্রা। বিশ্বঅলি শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ) একজন মহান আউলিয়া। তাঁর জীবন হলো নিরূপম কৃচ্ছতা ও অনুপম ত্যাগের, তাঁর জীবন আমাদের শিক্ষা দেয় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল সৃষ্টির প্রতি অসীম ভালোবাসার তাগিদ। তাই তাঁর জীবন ও কর্ম আমাদের জন্য একটি হিরন্ময় প্রেরণা।
-সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ; সাবেক ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। মাইজভাণ্ডার সন্দর্শন, পৃ. ২৩০

আরো পড়ুন :মাওলানা আমিনুল হক হারবাংগিরী রচিত ‘ফকির উল্লাস ও ওফাতনামা’

৪. বেগম খালেদা জিয়া
আধ্যাত্মিক সাধক হযরত মাওলানা সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ) দীর্ঘ ছয় দশক ধরে কঠোর-কঠিন সংযম সাধনার মধ্যদিয়ে অগনিত মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পথের সন্ধান দিয়ে গিয়েছেন। তিনি তার স্বীয় জীবনাচরণ ও পবিত্র চারিত্রিক মহিমায় জাগতিক জীবনকেও সুন্দর ও মঙ্গলময় কার প্রেরণা দিয়েছেন।
-সাবেক প্রধানমন্ত্রী-গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। চেয়ারপারসন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। মাইজভাণ্ডার সন্দর্শন, পৃ. ২২৫-২২৬

আরো পড়ুন :সৃষ্টির কল্যাণে গাউছুল আযম হযরত বাবাভাণ্ডারী (কঃ)

৫. হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী
কুশাসন, অবিচার, অবহেলায় ভূমন্ডলের এ অংশ অন্ধকারে নিপতিত ছিল তখন বিভিন্ন সময়ের ব্যবধানে অনেক অলি-আল্লাহর আবির্ভাব ঘটেছে এই উপমহাদেশে সমাজ সংস্কারক হিসেবে। এই নিরিখে হযরত শাহ জালাল (রহঃ), হযরত শাহ পরান (রহঃ), হযরত শরফুদ্দিন চিশতি (রহঃ), হযরত শাহ আলী বোগদাদী (রহঃ), হযরত শাহ মখদুম (রহঃ), হযরত খানজাহান আলী (রহঃ) এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। মাইজভাণ্ডারের সাধক পুরুষ সৈয়দ জিয়াউল হক (কঃ) সারাজীবন নিজেকে মানবকল্যাণে উৎসর্গ করে যে মহান আদর্শ রেখে গেছেন, তা অনুরণীয় এক বিরল দৃষ্টান্ত ।
-সাবেক স্পিকার, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ। মাসিক আলোকধারা, গাউসিয়া হক মঞ্জিল, মাইজভা-ার শরীফ, চট্টগ্রাম, ১৯৯৭ইং সংখ্যা।

আরো পড়ুন :কবিয়াল রমেশ শীলের দু’টিপত্র ও দেহত্যাগ সম্পর্কিত ঐতিহাসিক কিছু তথ্য

৬. অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমদ
কুরআন ও রাসুলে পাক (সাঃ) এর জীবনের আলোকে সর্বধর্মের সহাবস্থান বহাল রেখে মানবতার মুক্তিরপথ দেখাতে গাউসিয়তের কর্মধারার মহান সাধকপুরুষ হযরত শাহসুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) হতে শুরু করে বিশ্বঅলি শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ) যে দর্শন ঘোষণা করেছেন তা বিশ্ববাসীর স্বীকৃতি পাওয়ার দাবিদার বলে আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। সমস্ত বিশ্বে এই দর্শনের ব্যাপক প্রচার-প্রকাশ ও প্রসার হওয়া একান্ত প্রয়োজন।
-সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। মাইজভাণ্ডার সন্দর্শন, পৃ. ২২২।

আরো পড়ুন :বোয়ালখালীতেই হযরত গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র সাতজন খলিফা

৭. জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ নুরুল ইসলাম
মাইজভাণ্ডার না গেলে মাইজভা-ারের প্রকৃতচিত্র উপলদ্ধি করা কঠিন। এর ভেতর যে এত মানুষ নামাজ পড়ে, যিকির-আযকার করে তা স্বচক্ষে না দেখলে উপলব্ধি করতে পারতাম না। সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারীকে আমি প্রত্যক্ষভাবে দেখিনি। কিন্তু তাঁর স্মরণে অনুুষ্ঠানমালায় যোগাসন করেছি তদ্বীয় পুত্র সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান এর বিশেষ আমন্ত্রণে। বয়সের প্রাক-তুলনায় সৈয়দ হাসানের ব্যক্তিত্ব ও প্রজ্ঞা আমাকে বিশেষভাবে আকর্ষণ করেছে। তাঁকে দেখেই তাঁর পিতা সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারীর চারিত্রিক মাধুর্য উপলব্ধি করেছি।
-প্রতিষ্ঠাতা ও উপাচার্য, ইউ.এস.টি.সি.। চেয়ারম্যান, গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী ওফাত শত বার্ষিকী জাতীয় কমিটি। গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী : শতবর্ষ আলাকে, ড. সেলিম জাহাঙ্গীর, আঞ্জুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউসে মাইজভাণ্ডারী, গাউসিয়া আহমদিয়া মঞ্জিল, মাইজভা-ার দরবার শরীফ, চট্টগ্রাম। ২০০৭।

আরো পড়ুন : মাইজভাণ্ডার : সব ধর্মের মানুষের মিলনমেলা

৮. স্থপতি আলমগীর কবির
শাহানশাহ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারীর কাছে, এই মহান আধ্যাত্ম সাধকের কাছে সকল শ্রেণীর মানুষ যেত। যে যার মত আরজি আবেদন পেশ করতেন। তিনি ‘আচ্ছা’ বলে, কিংবা হবার ইঙ্গিত দিয়ে অবারিত শুভাশিষ বিলাতেন। শহর-বন্দর, গ্রামে-গঞ্জে তাঁ অবাধ বিচরণ ছিল। নিজে নিজেই অসংখ্য মানুষের কল্যাণ করে দিতেন। না চাইতেও বহু মানুষকে দয়া করেন এমনকি বিরোধীদেরও। ফুলের গন্ধ ও সুন্দরের মতো সে ধারা অনন্তকাল ধরে চলবে। তাই প্রত্যাশা -প্রাপ্তির গতিশীল বিশ্বাসকে শাপলা ফুলের সৌন্দর্য সুষমায় রূপায়িত করেছি। আমার জানা মতে, ‘শাপলা’ নির্মাণ- স্থাপত্য কোথাও ব্যবহৃত হয়নি। শাপলা ভরা মৌসুম শরৎকালেই তিনি প্রেমাস্পদ প্রভু মিলনে এ ধরাধাম ত্যাগ করেন।
-শাহানশাহ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী: ব্যাক্তি ও ব্যক্তিত্ব, মোঃ মাহবুব উল আলম সম্পাদিত, মাইজভা-ার একাডেমী , চট্টগ্রাম, ১৯৯৪, পৃ. ১১। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জার্তীয় ফুল শাপলার আদলে শাহানশাহ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী’র রওজা শরীফের স্থাপত্য নকশা প্রণয়ন করেছিলেন স্থপতি আলমগীর  কবির। তার মতে, নির্মাণ স্থাপত্যের ইতিহাসে শাপলার ব্যবহার এই প্রথম।

আরো পড়ুন :মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের শরাফতের উল্লেখযোগ্য দিকসমূহ ও অছি-এ গাউসুল আ’যম এর অবদান

৯. ডক্টর কামাল হোসেন
মাইজভাণ্ডারী দর্শনের মানবতা, সার্বজনীনতা এবং ধর্মসাম্যমুলক মতবাদ অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনে বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে, কারণ এই দর্শনের মুল কথাই হলো মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ। মাইজভাণ্ডারী (কঃ) আবির্ভাবের পর থেকে বিশ্বঅলি শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) পর্যন্ত সকল সাধক পুরুষই এই কথাটিই ব্যক্ত করেছেন বিভিন্নভাবে। সমন্বয়ধর্মী, মানবতাকামী এই দর্শন মানব সভ্যতার বিকাশে অনন্য ভূমিকা পালন করে চলেছেন।
-আইনজীবি ও রাজনীতিবিদ, সভাপতি গণফোরাম, মাইজভাণ্ডার সন্দর্শন, পৃষ্ঠা ২২৩

আরো পড়ুন : আধ্যাত্মিক পরিচর্যা তারই এক সুমহান পথপ্রদর্শক সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী

১০. আবদুর রাজ্জাক
মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ তথা শাহানশাহ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ) এর সাথে আমার মনন ও আত্মার যোগযোগ দীর্ঘদিনের। হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী একজন উচ্চ মার্গের অলি। যাঁরা তাকে দেখেছেন এবং তাঁর সাক্ষাৎ লাভের সুযোগ পেয়েছেন তারাই কেবল তাঁর উচ্চ মার্গের বিষয়টি অনুধাবন করতে পারবেন। জীবনের ভোগ-বিলাস,আরাম-আয়েশ তুচ্ছ করে অবিশ্বাস্য রকম কঠিন রেয়াজত বা সংযম সাধনের মাধ্যমে তিনি খোদার নৈকট্য (ফানাফিল্লাহ) লাভে সমর্থ হয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এই মহান অধ্যাত্মিক পুরুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবদান অনেকের কাছে আজও অবিস্মরণীয়। দুঃখী মানুষের দুঃখ নিবারণে, শোষণ, নিপীড়ন মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় দেশ গঠনে, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকলে সমান অংশগ্রহণের যে উপকরণের ইঙ্গিত তিনি দিয়েছেন তা সময়ের পরীক্ষায় কালোত্তীর্ণ হয়ে থাকবে।
-রাজনীতিবিদ, প্রাক্তন পানি সম্পদ মন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। মাইজভাণ্ডার সন্দর্শন, পৃ. ২১৯।

চলবে…

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here