আশুতোষ চৌধুরী

জন্ম : ৫ নভেম্বর ১৮৮৮ || মৃত্যু : ২৭ মার্চ ১৯৪৪

বিভাগের সম্পাদক
চট্টগ্রামে যারা শিক্ষা-সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ করেছেন, তাদের মধ্যে আশুতোষ চৌধুরী এক অনন্য নাম। তিনি ছিলেন একাধিক গুণে গুণান্বিত। তিনি বাংলার পল্লী গীতিকা সংগ্রাহক, কবি, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার। জন্ম ১৮৮৮ সালে বোয়ালখালীর কধুরখীল গ্রামে। বিদ্যার্জনে কোনো প্রতিষ্ঠান হতে পাঠ নেয়া শুরু করেছেন, তার কোনো তথ্য কেউ দিতে পারেননি। তবে এন্ট্রাস ও মোক্তারি পাস করে তিনি কিছুদিন মোক্তারি করেন বলে পারিবারিকভাবে জানা যায়। আশুতোষ চৌধুরীর কর্ম ও সাহিত্য জীবন ছিল এক ও অভিন্ন। কর্মজীবনে তিনি শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। ১৯২০-২৫ সালে তিনি রচনা করেন শিশুতোষ পাঠ্যবই ‘ছেলেদের চট্টলভূমি’। এটি মূলত ভূগোল বই হলেও এতে ইতিহাস-ঐতিহ্যের ছোঁয়া ছিল। এতে তার কবি প্রতিভার উন্মোচন ঘটে। এই বইটির সূত্র ধরেই তার পরিচয় ঘটে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যক্ষ ড. দীনেশচন্দ্র সেনের সঙ্গে। দীনেশ চন্দ্র সেন তার ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ প্রকাশের পর চট্টগ্রামের লোকগীতিকা সংগ্রাহকের জন্য উপযুক্ত লোক হিসেবে বেছে নেন আশুতোষ চৌধুরীকে। দীর্ঘদিন এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে তিনি সংগ্রহ করেন লুপ্তপ্রায় একাধিক পালাগান; যা বাংলা সাহিত্য সম্ভারকে করেছে সমৃদ্ধ। তিনি চট্টগ্রাম, আরাকান, ত্রিপুরা অঞ্চলের লুপ্তপ্রায় প্রায় ৭৬টি পালাগান সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে দীনেশ চন্দ্র সেনের পূর্ববঙ্গ গীতিকায় ৯টি সংকলিত হয়। লোকগীতিকার সংগ্রহে ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’র সংগ্রাহক চন্দ্র কুমারের পরই আশুতোষ চৌধুরীর স্থান। এ ছাড়া আশুতোষ চৌধুরী বারোমাসি ও হঁলা (বিয়ের গান) ও মাইজভাণ্ডারি গান সংগ্রহ করেন। তার অপ্রকাশিত দুটি গীতিকা হচ্ছে ‘মজুনা’ ও ‘দেওয়ান নুহর’। ১৯৪৪ সালের ২৭ মার্চ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা-কালেই অবসান হয় বিদগ্ধ এই গুণী সাহিত্যিকের।

এবি/টিআর

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here