পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা কমতে শুরুর পর গুজব ছড়িয়ে লবণের বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর তথ্য পেয়ে লবণের বাজার স্থিতিশালী রাখতে কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। একইভাবে গুজব রটনাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর মাঝিরঘাটে লবণের গুদাম ও মিল থেকে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে প্রতি ৭৪ কেজির লবণের বস্তা ৫৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বিকেল গড়াতেই তা বিক্রি হচ্ছে ৬২০ টাকায়। হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাবার নেপথ্যে গুজবের প্রভাব বলে মনে করছে প্রশাসন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করে লবণের দাম বাড়াতে একটি কুচক্রীমহল দেশে লবণের সংকট চলছে বলে গুজব ছড়াচ্ছে। অথচ দেশে লবণের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। গুজব ছাড়া ছড়াচ্ছে তাদের বিষয়ে পুলিশের হটলাইনে (৯৯৯) তথ্য দেওয়ার অনুরোধ করেছে সিএমপি। অথবা +৮৮০৩১৬৩০৩৭৫ ও ০১৬৭৯১২৩৪৫৬ নম্বরেও যোগাযোগের জন্য বলা হয়েছে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘লবণ নিয়ে ‍গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ইচ্ছাকৃতভাবে লবণের বাজারকে অস্থিতিশীল করার জন্য এটা করা হচ্ছে। আমরা গুজব রটনাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা করছি।’

বিসিকের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশে বছরে লবণের চাহিদা আছে ১৬ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিকটন। এ বছর লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৮ লাখ মেট্রিকটন। উৎপাদন হয়েছে ১৮ লাখ ২০০ মেট্রিকটন যা গত ৫৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এছাড়া মাঠে আছে আরও প্রায় ৭ লাখ মেট্রিকটন লবণ।

নগরীর মাঝিরঘাটে এবং পটিয়ার ইন্দ্রপুলে ৭০টি লবণমিলে নিরবচ্ছিন্নভাবে চলছে লবণের উৎপাদন। প্যাকেটজাত করে তা পাঠানো হচ্ছে বাজারেও। মাঝিরঘাট লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে লবণের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। লবণের দাম প্যাকেটের গায়ে লেখা আছে। কেউ যেন এক টাকা বেশি দামেও লবণ না কেনেন। কারও বেশি লবণের প্রয়োজন হলে আমাদের কাছে সরাসরি আসবেন। বাড়তি দামে কাউকে লবণ কিনতে হবে না।’

এ অবস্থায় লবণ মিল মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বুধবার (২০ নভেম্বর) সভা আহ্বান করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন।

জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামীম তানভীর বলেন, ‘দেশে লবণ ঘাটতি আছে, এমন সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই প্রচারণার কারণে বাজারে যাতে কোনো প্রভাব না পড়ে, সেজন্য ডিসি স্যার বৈঠক ডেকেছেন।’-সারাবাংলা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here