নিজস্ব প্রতিবেদক :
বোয়ালখালী পৌরসভার ৩ কোটি ২০ লাখ টাকার দুই প্রকল্পের কাজ লটারি ছাড়াই পেয়ে গেল উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়নের এই দুই প্রকল্পের কাজ গোপনে পৌর প্রকৌশলীর যোগসাজসে ভাগিয়ে নেয়ার এ অভিযোগ তুলেছেন দরপত্র জমাদানকারী অন্যান্য ঠিকাদাররা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শারমিন এন্টারপ্রাইজ লটারি ছাড়াই কাজ পেয়ে যাওয়ার খবর জানাজানি হয়ে গেলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ঠিকাদাররা।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর বোয়ালখালী পৌরসভার শেখপাড়া বড়ুয়া পাড়া সড়ক, কধুরখীল কৈবত্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কের ১ হাজার ৪৮ মিটার সড়ক ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা এবং পূর্ব গোমদণ্ডী শহিদ সিপাহী নায়েব আলী সড়ক ও বায়তুন নুর জামে মসজিদ সড়কের ১ হাজার ৯৫ মিটার আরসিসি দ্বারা উন্নয়নের জন্য ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। এ দুই প্রকল্পে ৪৮টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শিডিউল জমা দেয়।
অভিযোগ উঠেছে, নিয়ম অনুযায়ী লটারি করে ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান মনোনীত করার কথা থাকলেও তা পৌর মেয়র ও অন্য ঠিকাদারদের না জানিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শাহদাতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস শারমিন এন্টারপ্রাইজকে কাজটি পাইয়ে দেন পৌর প্রকৌশলী।
গতকাল দুপুরে শিডিউল জমাদানকারী অন্যান্যরা পৌরসভায় গেলে পৌর প্রকৌশলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এসময় ঠিকাদারদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
ঠিকাদারদের পক্ষে মের্সাস কেজিএন এন্টারপ্রাইজের পরিচালক ঠিকাদার মো. রাশেদুল আলম সুমন অভিযোগ করে বলেন, এই দুই প্রকল্পে ৪৮জন ঠিকাদার শিডিউল জমা দিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী লটারি হওয়ার কথা থাকলেও কোনো ধরনের লটারি না করে গোপনে পৌর প্রকৌশলী কামরুজ্জামান ৩ কোটি ২০ লাখ টাকার দুই প্রকল্পের কাজ একই ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে পৌর প্রকৌশলী কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, ‘এটা ঢাকার প্রকল্প কর্মকর্তা করেছেন। আমার কোনো হাত নেই। এগুলো ইজিপির টেন্ডার ছিল অনলাইন লটারিতে কাজ দুটি শারমিন এন্টারপ্রাইজ পেয়েছে, এক্ষেত্রে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই।’
পৌর মেয়র হাজী আবুল কালাম আবু বলেন, ‘ঘটনাটি শুনে আমি তো নিজেই হতবাক হয়ে গেছি, আমি চেয়ারে থাকতে আমার অগোচরে এ ধরনের অনৈতিক কাজ চলতে পারে না। আমি এর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
প্রকল্প পরিচালক কাজী মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই, রবিবার অফিসে গেলে তখন বলতে পারব।
শারমিন এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহদাত অভিযোগের বিষয়ে বলেন, আমি মানুষের কাছে শুনেছি দুটি কাজ পেয়েছি। ব্যস্ততার কারণে অনলাইনে ঢুকতে পারিনি। নেটে আমার আইডিতে ঢুকলে নিশ্চিত হতে পারব। তিনি বলেন, বিভিন্ন উপজেলায় আমার কাজ চলছে সবগুলো ইজিপিতে পেয়েছি। বোয়ালখালী পৌরসভার কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে আমি কোন প্রকার প্রতারণার আশ্রয় নিইনি। খবর দৈনিক আজাদী