বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া ঘাতকব্যাধি করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ আশপাশের এলাকায় বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) রাত ১০টায় সম্মিলিতভাবে আজান দিতে শোনা গেছে। লকডাউনে সুনসান নগরের রাতের নিস্তব্ধতাকে ভেঙে খান খান করে দেয় আজানের সেই ধ্বনি। বিভিন্ন মসজিদে আর ঘরের জানালা বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে স্থানীয় নগরবাসী এ আজান দেন। করুন সেই সুরে ছিল করোনা থেকে মুক্তির আকুতি।
জানা গেছে, কয়েকটি ইসলামী সংগঠনের আহ্বানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একত্রিত হয়ে এই সম্মিলিত আজানের আয়োজন করা হয়।
বোয়ালখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, উপজেলা বিভিন্ন মসজিদ ও বাড়ির সম্মুখে সম্মিলিতভাবে আজান দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আমাদের রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন ওই সব জেলায় একইভাবে সম্মিলিতভাবে আজান দিতে শোনা গেছে।
ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, আজান ইসলামের এক মৌলিক ইবাদত নামাজের দিকে আহ্বানের মাধ্যম। আজানের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত অবতীর্ণ হয়,বিপদ ও আজাব দূরীভূত হয়। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত হাদীসে হুযুর (ﷺ) এরশাদ করেন- “اِذَا اُذِّنَ فِیْ قَرِیَةٍ اٰمَنَھَا اللہُ مِنْ عَذَابِهٖ فِیْ ذٰلِكَ الْیَوْمِ” যখন কোন গ্রামে আজান দেয়া হয়, তখন মহান আল্লাহ (ﷻ) সেদিন ওই গ্রামকে তার আজাব থেকে নিরাপদে রাখেন।
মহামারির সময় আজান দেয়া একটি মুস্তাহাব বিষয়। ফিকহে হানাফীর প্রসিদ্ধ গ্রন্থ রদ্দুল মুখতার বা ফতোয়ায়ে শামীতে আজানদানের ১০টি মুস্তাহাব সময়ের মধ্যে মহামারির সময় আজানের কথা উল্লেখ রয়েছে। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারি থেকে রক্ষায় অন্যান্য আমলের পাশাপাশি আজান দেয়া একটি শরীয়ত সমর্থিত মুস্তাহাব আমল। এটার জন্য কোনো সময় নির্ধারিত নেই।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মাহমারিতে আক্রন্ত স্পেনে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য স্রষ্টার কৃপা কামনায় সম্মিলিতভাবে আজানের আয়োজন করা হয়।