আবো. ডেক্স :
পবিত্র রমজান মাস হচ্ছে মহান আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার মাস। এ মাসে মানুষ নিজের গুনাহ হতে ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগ পায় এবং আল্লাহর প্রকৃত বান্দা এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পূর্বেকার সকল পাপ ও পঙ্কিলতা হতে মুক্ত হয়ে সুন্দর ভবিষ্যত গড়ার দিকে ধাবিত হয়। তবে রোজার দায়িত্ব-কর্তব্য ও আমলের দিক থেকে নারীদের বিষয়টি একটু আলাদা। কেননা পুরুষরা বাইরের নানা দিক সামাল দিতে গিয়ে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও রমজানের পরিপূর্ণ দাবি পূরণে অনেকাংশে ব্যর্থ হয়।
সাধারণত মহিলাদের বাইরের ব্যস্ততা কম থাকে। বাইরে বেরুলেও বেশি সময় বাইরে থাকতে হয় না। ঘরোয়া পরিবেশেই কাটে রোজার দিনগুলো। ফলে তাদের পক্ষে রমজানের পূর্ণ ফায়েজ ও বরকত লাভ করা অনেকাংশে সহজ। তাই কাঙ্ক্ষিত সফলতা পেতে হলে নারীদের রমজান মাসে কিছু জিনিসের প্রতি গভীরভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
১. ইবাদতের ক্ষেত্রে একটি ভারসাম্য আনতে হবে। রমজানে প্রতিটি ইবাদতেই সত্তর গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। রোজাই হচ্ছে রমজানের প্রধান ইবাদত। তবে রোজার চেয়ে নামাজের গুরুত্ব অনেক বেশি। রোজা রাখার ক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে- এটা অবশ্যই প্রশংসাযোগ্য। সেই সঙ্গে নামাজ পড়তে হবে ঠিকমত।
২. বাকসংযম করতে হবে। অধিক বাকপ্রবণ বলে মহিলাদের একটি বদনাম আছে। পরচর্চা, কুত্সা, নিরর্থক বিষয় নিয়ে মাতামাতি ইত্যাদি তাদের চিরায়ত অভ্যাস। কিন্তু এগুলো রোজার জন্য খুবই ক্ষতিকারক। তাই রমজানে মহিলাদের জন্য উচিত হলো যথাসম্ভব বাকসংযম করা।
৩. চলাফেরা ও চালচলনে শালীন হওয়া। জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে বিরত থাকা ও এ ধরনের যে কোনো পরিস্থিতির সম্মুখীন না হওয়া রোজার একটি অংশ। মহিলাদের খোলামেলা চালচলন তাদের নিজেদের রোজার পবিত্রতার জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি পর পুরুষের রোজা নষ্ট কিংবা হালকা করার জন্যও দায়ী। তাই নারীদের বাইরে বের হতে হলে শালীনতার সঙ্গে বের হওয়া উচিত।
৪. অধিকহারে দান-সদকা করা। কেননা অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় রমজানে দান-সদকার ফজিলত অনেক বেশি। এ ক্ষেত্রে নারীদের রয়েছে দারুণ সুযোগ। সংসারের নিয়ন্তা হিসেবে তারা ইচ্ছে করলে এ মাসে গরিব-দুঃখীর দিকে সহানুভূতির হাত প্রসারিত করতে পারেন। এর দ্বারা আল্লাহর বিশেষ কৃপা কুড়ানোর আশা করা যায়।
৫. সংসারের শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রতি খেয়াল করা। বছরের অন্যান্য সময় থেকে যেহেতু রমজানের রুটিন কিছুটা ভিন্ন সেজন্য সাংসারিক কাজকর্ম কিংবা পারিবারিক ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। অন্যের সুবিধার কথা চিন্তা করে, নিজে কিছুটা ত্যাগ স্বীকার করে হলেও সংসারের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।
৬. বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা। রমজান হচ্ছে কোরআন নাজিলের মাস। এ মাসের সঙ্গে কোরআনের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। রমজানে কোরআন তেলাওয়াতের সওয়াব অনেক গুণ বেশি। যারা কোরআন পড়তে পারেন তারা বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করবেন।
৭. শেষ দশকে ইতিকাফ করা। ইতিকাফ রমজানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল। মহিলারাও ইচ্ছে করলে ইতিফাক করতে পারেন। তবে তা অন্দরমহলে পূর্ণ পর্দা বজায় রেখে। এর দ্বারা রমজানের দাবি যেমন ভালোভাবে আদায় করা যায় তেমনি মহিমান্বিত রাত শবেকদরের ফয়েজ ও বরকত লাভে ধন্য হওয়া যায়।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here