অধ্যাপক মাওলানা বদিউল আলম রিজভি
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, আমরা তাঁরই গুণগান করছি। তারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছি। তাঁর সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। তাঁর দরবারে তাওবাহ করছি। প্রবৃত্তির অনিষ্টতা ও মন্দ আমলের প্রভাব হতে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আল্লাহ যাকে হেদায়ত করেন কেউ তাকে পথভ্রষ্ট করতে পারেনা। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন কেউ তাকে হেদায়ত করতে পারেনা। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তিনি একক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোন অংশীদার নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রিয় বান্দা ও প্রিয় রাসূল। যাকে আল্লাহ সত্যরূপে সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে এবং তাঁরই অনুমতিক্রমে আল্লাহর পথে আহবানকারী ও উজ্জ্বল আলোক বর্তিকারূপে প্রেরণ করেছেন। তাঁর উপর আল্লাহর শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক। তাঁর পবিত্র বংশধরগণ, সম্মানিত সাহাবাগণ, কিয়ামত অবধি নিষ্ঠার সাথে তাঁর পদাঙ্ক অনুসারীদের প্রতি অসংখ্য করুণাধারা বর্ষিত হোক।
হে মানব মন্ডলী! আল্লাহ তা’য়ালাকে ভয় করুন! তাঁর প্রদত্ত নিয়ামত রাজির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। তাঁর সর্বোত্তম নিয়ামত আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সকল নবী রাসূলগণের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। যাঁকে অসংখ্য গুণাবলী দ্বারা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করেছেন। পূর্বাপর কেউ যাঁর সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি, যিনি সর্বোত্তম, সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী। সমগ্র সৃষ্টিকুলের মূল উপলক্ষ। মহান আল্লাহ যাঁর মাধ্যমে দ্বীনের পূর্ণতা ও মুমীনদের উপর নিয়ামতের পূর্ণতা বিধানের পর তাঁর প্রিয় হাবীবকে তাঁর সান্নিধ্যে নিয়ে যান।
সম্মানিত মুসলিম ভাইয়েরা!
জেনে রাখুন! মদীনা মুনাওয়ারার অসংখ্য ফজিলত রয়েছে। এতে রয়েছে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র পবিত্র রওজা শরীফ। যা ভূখন্ডের সকল স্থান হতে উত্তম। এমনকি ক্বাবা শরীফ আরশ ও কুরছি অপেক্ষাও উত্তম। পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল মুজতাহিদ ওলামাগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওজা মোবারক যিয়ারত করা আল্লাহর নৈকট্যলাভের সর্বোত্তম মাধ্যম এবং তাঁর প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসার নিদর্শন। রওজা শরীফের যিয়ারত ইবাদতসমূহের মধ্যে উত্তম ইবাদত। হযরত ইমাম ফার্সী মালেকী রওজা পাকের যিয়ারতকে ওয়াজিব বলেছেন। হানফী মাযহাবের বিখ্যাত ফকীহ আল্লামা হাসান শারাম্বোলালী (র.)’র মতে রওজা পাকের যিয়ারত ওয়াজিবের কাছাকাছি।
কুরআন মজীদের আলোকে রওজা মুবারকের যিয়ারত: মহান আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কুরআন মাজীদে এরশাদ করেছেন, “যখন তারা নিজেদের আত্মার উপর অত্যাচার করে তখন হে মাহবুব তারা আপনার নিকট আসলে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে আর রাসূলও তাদের জন্য শাফায়াত করলে তারা আল্লাহকে তাওবা কবুলকারী এবং দয়াবান পাবে।” (সূরা নিসা, আয়াত: ৬৪)
আয়াতে বর্ণিত অব্যয়টি “যখনই” শব্দটি সাধারণ অর্থে ব্যবহৃত। এ নির্দেশ শুধু প্রিয়নবীর তেষট্টি বৎসর জীবনের সাথে বা নবুওয়াত পরবর্তী সময়ের জন্য নয়। বরঞ্চ কিয়ামত অবধি সময়ের জন্য প্রযোজ্য। হানাফী মাযহাবের বিখ্যাত ফিকাহ গ্রন্থ ফতওয়ায়ে আলমগীরিতে উল্লেখ রয়েছে যখনই কোন মুসলিম রওজা শরীফে আগমন করবে তখন সে যেন এ আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করে। ইমাম আহমদ কুস্তুলানী প্রণীত “মাওয়াহেবে লুদুনীয়া” কিতাবে উল্লেখ আছে “প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। তিনি উম্মতের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। তাদের অবস্থার অবগতি, তাদের নিয়ত, দৃঢ় সংকল্প ও তাদের অন্তরের অবস্থা জ্ঞাত আছেন। উপরিউক্ত বিষয়াদি তাঁর নিকট সুস্পষ্ট। এতে কোন প্রকারের অস্পষ্টতা নেই। (আল মাদখাল যিয়ারাতুল কুবুর পরিচ্ছেদ, ইমাম আহমদ রেযা (র.) কৃত. আনোয়ারুল বিশারাহ দ্র.)
হাদীস শরীফের আলোকে রওজা মুবারক যিয়ারত: রওজা মুবারকের যিয়ারত প্রসঙ্গে অসংখ্য হাদীস শরীফ বর্ণিত হয়েছে, নিম্নে কয়েকটি হাদীস শরীফের উদ্ধৃতি পেশ করা হলো, হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহ তা’য়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দাফন করার তিন দিন পর আমাদের কাছে একজন বেদুঈন আসল। সে নবীজির রওজা শরীফ জড়িয়ে ধরেন। রওজা শরীফ থেকে মাটি নিয়ে তার মাথায় লাগাল। বেদুইন আরজ করলো ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা আপনার কথা শ্রবণ করেছি, আপনি আল্লাহর বাণী সংরক্ষণ করেছেন, আমরা আপনার থেকে সংরক্ষণ করেছি, আপনার উপর যে কিতাব নাযিল হয়েছে তার মধ্যে একটি আয়াত হলো “তারা যখন নিজেদের আত্মার উপর জুলুম করে আপনার কাছে আসে, আত:পর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে । আমি নিজের উপর অত্যাচার করেছি, আপনার নিকট এসেছি যেন আপনি আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। রওজা শরীফ থেকে আওয়াজ এলো, আল্লাহতা’য়ালা আপনাকে ক্ষমা করেছেন। (ওয়াফাউল ওয়াফা)
হযরত বেলাল (রা.) স্বপ্নযোগে যিয়ারতের জন্য আদিষ্ট: আমিরুল মুমেনীন হযরত ওমর (রা.) বায়তুল মুকাদ্দাস জয় করার পর যখন জাবিয়া পৌছলেন, হযরত বেলাল (রা.) তাঁর নিকট সিরিয়ায় অবস্থান করার অনুমতি চাইলেন, তিনি অনুমতি দিলেন, হযরত বেলাল (রা.) স্বপ্নযোগে নবীজির দিদার লাভ করলেন। নবীজি তাকে বলছেন, হে বেলাল, এটা কোন ধরনের অবিচার, আমার যিয়ারত করার কি তোমার সুযোগ হচ্ছে না? স্বপ্ন দেখে তিনি খুব ভীত ও চিন্তিত হন। বাহনের উপর আরোহণ করে মদীনা শরীফের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন রওজা শরীফে উপস্থিত হয়ে ক্রন্দন শুরু করেন, নিজের চেহারা রওজা শরীফে রাখলেন ইতোমধ্যে হযরত হাসান হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুমা এসে গেলেন। তিনি উভয়ের সাথে আলিঙ্গন করেন ও উভয়জনকে চুম্বন করেন। (ওয়াফাউল ওয়াফা)
রিয়াজুল জান্নাত ও মিম্বর শরীফ প্রসঙ্গ: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উম্মুল মুমেনীন হযরত আয়িশা সিদ্দিকা (রা.)’র সেই মর্যাদাপূর্ণ কক্ষেই দাফন করা হয়। সেই নূরানী কক্ষের দক্ষিণ পার্শ্বে প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমাহিত হন এবং অপর কোণে মা আয়েশা সিদ্দিকা বসবাস করতে থাকেন। পবিত্র রওজা শরীফ ও তাঁর অবস্থান স্থলের মাঝখানে একখানা পর্দা ছিল এর পর আমিরুল মুমেনীন হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) ইন্তেকাল করলে মা আয়িশা সিদ্দিকা (রা.) তাঁকে প্রিয় রাসূলের রওজার পার্শ্বে সমাহিত করার অনুমতি দেন। “রিয়াজুল জান্নাত” মসজিদে নববীতে এমন একটি পবিত্র বরকত মন্ডিত উত্তম স্থান যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওজা শরীফ ও মিম্বরের মধ্যখানে অবস্থিত।
রিয়াজুল জান্নাত ও মিম্বর প্রসঙ্গে অসংখ্য হাদীস বর্ণিত হয়েছে, যা এর বিশেষ মর্যাদা ও গুরুত্ব বহন করে নবীজি এরশাদ করেছেন, “আমার ঘর ও আমার মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থানটুকু বেহেস্তের বাগানগুলোর একটি বাগান। আমার মিম্বর আমার হাউজের উপর অবস্থিত।”(বোখারী শরীফ, খণ্ড ১, পৃ: ২৯৯, হাদীস নং ৩৭১১)
রিয়াজুল জান্নাত প্রসঙ্গে হাদীস বিশারদগণ বলেছেন, এ স্থানটি জান্নাতেরই একটি অংশ। অনেক মুহাদ্দিসের অভিমত কিয়ামতের দিন এ স্থানটিকে জান্নাতের অংশ হিসেবে গণ্য করে জান্নাতে রূপান্তরিত করা হবে। এ বরকতময় স্থানে নামায আদায়, কুরআনুল করীম তিলাওয়াত, অধিকহারে দরুদ শরীফ পাঠ, জিকর আযকার দোয়া, দরুদ ইত্যাদির প্রতি মনোযোগী হওয়া সকল মুসলমানদের জন্য পরম সৌভাগ্যের বিষয়।
মিম্বর শরীফ তৈরির নির্দেশ: প্রথম অবস্থায় মসজিদ নবভীতে কোন মিম্বর ছিলনা। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুর বৃক্ষের খুটির সাথে ঠেস দিয়ে খোতবা দিতেন। ৮ম হিজরীতে মিম্বর তৈরী করা হলো। ঐতিহাসিকদের মতে প্রথম নির্মিত মিম্বরটি তিনধাপ বিশিষ্ট ছিল। উপরের সিড়িতে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসতেন, দ্বিতীয় সিড়িতে পা মোবারক রাখতেন, যখন লোক সংখ্যা বেড়ে গেলো তখন নবীজি বললেন, আমার জন্য একটি মিম্বর তৈরি করো, তখন মিম্বর তৈরি করা হলো। (ওয়াফাউল ওয়াফা, পৃ: ৩৯)
রওজা শরীফের মাটি আরশের চেয়েও উত্তম: রওজা শরীফের মাটির যে অংশটুকু নূরে মোজাসসম সৈয়্যদে আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নুরানী দেহ মুবারকের সাথে স্পর্শমণ্ডিত তা আরশ কুরসি এমনকি আল্লাহর ঘর বায়তুল্লাহ শরীফের চেয়েও উত্তম বলে অসংখ্য ইমামগণ মত প্রকাশ করেছেন। (জযবুল কুলুব, ওয়াফাউল ওয়াফা, পৃ: ২০, ফতোয়ায়ে শামী, খন্ড: ৩, যিয়ারত অধ্যায়)
ইমাম নববী মুসলিম শরীফের ব্যাখ্যা গ্রন্থে উল্লেখ করেন “ যে মুহাদ্দিসগণ সকলেই ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, পৃথিবীর সকল জায়গা হতে রওজা মুবারকের জায়গা উত্তম এবং মক্কা ও মদীনা পৃথিবীর সকল জায়গা হতে উত্তম ( নূরে মুজাসসম ইফা, পৃ:৩০৭)
রওজা মুবারকের প্রতি সর্বোচ্চ আদব ও সম্মান প্রদর্শন করুন: হেরমে মদীনা দেখা মাত্রই নগ্ন পায়ে সামনে চলুন, অবনত মস্তক, ক্রন্দনরত অবস্থায় দৃষ্টি নিম্নগামী করুন। নূরানী সোনালী গম্বুজ দেখা মাত্রই অধিকহারে দরুদ সালাম নিবেদন করুন। অন্তরে এ আক্বিদা রাখুন আপনি হায়াতুন্নবীর যিয়ারতে এসেছেন। তিনি আপনাকে চিনেন ও আপনাকে দেখছেন। রওজা শরীফে উপস্থিতির মূহুর্তে বিনম্রচিত্তে দরুদ-সালাম পেশ করুন। বলুন আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ । আমি নিজের আত্মার উপর অবিচার করেছি, আমার প্রভূর নিকট আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। অনুরূপ ভাবে প্রিয় নবীর পাশ্বে সমাহিত নবীজির ইহকাল পরকালের সঙ্গী আমিরুল মুমেনীন হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) ও হযরত ওমর ফারুক (রা.) এর প্রতি সালাম পেশ করুন।
রওজা মুবারক যিয়ারতের ফজিলত অতুলনীয়: রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যিয়ারতে শাফায়াতের স্বীকৃত রয়েছে। এরশাদ হয়েছে, হযরত নাফে (রা.), হযরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে আমার রওজা যিয়ারত করেছে তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে যায়। (বায়হাকী শরীফ, রাহাতুল কুলুব, পৃ: ২০৪)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি হজ করল অত:পর আমার ওফাতের পর আমার রওজার যিয়ারত করল সে যেন আমার জীবদ্দশায় আমার সাক্ষাৎ করলো। (বায়হাক্ী, সুনানে কুবরা, খণ্ড :২৪৬)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) হতে বর্ণিত, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমার যিয়ারতের উদ্দেশ্যে আসে এবং তার সফরে আমার যিয়ারত ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকেনা, কিয়ামত দিবসে তার জন্য সুপারিশকারী হওয়া আমার দায়িত্ব হয়ে যায়। (তাবরানী, দারেকুতনী, খোলাসাতুল ওয়াফা, পৃ:৬০)
নবীজির যিয়ারতকে গুরুত্ব না দেওয়ার পরিণতি: যে ব্যক্তি কেবল হজ করল, নবীজির যিয়ারতকে গুরুত্ব দিলনা তার জন্য ভয়াবহ পরিণতির দু:সংবাদ রয়েছে, “রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি হজে বায়তুল্লাহ আদায় করল আর আমার যিয়ারত করলনা, সে আমার উপর অবিচার করল।” (জযবুল কুলুব, পৃ:২০৬)
রওজা শরীফের দৈনিক একলক্ষ চল্লিশ হাজার ফেরেস্তাদের নিয়মিত উপস্থিতি: দরুদ সালাম এমন এক বরকতময় আমল যা স্বয়ং আল্লাহর সুন্নত, আল্লাহর অগনিত ফেরেস্তারা প্রতিনিয়ত সকাল-সন্ধ্যা নবীজির নুরানী দরবারে দরুদ-সালামের হাদীয়া পেশ করে যাচ্ছেন। ইবনে নাজ্জার কাব আখতার থেকে বর্ণনা করেন, প্রতিদিন ফজরের সময় সত্তর হাজার অবতরণ করেন, তাঁরা রওজা শরীফ আবৃত করে রাখেন, তাঁরা নবীজির উপর দরুদ শরীফ পাঠ করতে থাকেন। সন্ধ্যা বেলা ফেরেস্তাদের ঐ দল চলে যায়। সকাল বেলা অনুরূপ আরেক দল ফেরেস্তার আগমন ঘটে, এভাবে দৈনিক একলক্ষ চল্লিশ হাজার বার নবীজির দরবারে দরুদ-সালাম পেশ করে থাকেন। (খোলাসাতুল ওয়াফা, পৃ: ২০৭)
উপরোক্ত হাদীস শরীফের আলোকে রওজা শরীফ যিয়ারতের গুরুত্ব সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত। মুসলিম উম্মাহর জন্য মদীনা মুনাওয়ারা ও রওজা শরীফ যিয়ারত এক বরকতময় উত্তম আমল হিসেবে বিবেচিত। হে আল্লাহ! আমাদেরকে হারামাঈন শরীফাইনের যিয়ারত, ফয়ুজাত ও বরকত নসীব করুন, আল্লাহ আমাদের আপনাদের সকলকে মহান কুরআনের বরকত দান করুন। কুরআন মজীদের আয়াত ও প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশ দ্বারা আমাদের নাজাত দান করুন। নিশ্চয় তিনি মহান দানশীল, সৃষ্টি জগতের মালিক, পুণ্যময় অনুগ্রহশীল দয়ালু। আমীন।
লেখক : খতীব, কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদ