আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত যশোর জেলার কেশবপুরের সাগরদাঁড়ির বিশিষ্ট জমিদার রাজনারায়ণ দত্ত ও মাতা জাহ্নবী দেবীর একমাত্র সন্তান । ঊনবিংশ শতকে জন্ম নেওয়া এই কবি বাংলা কাব্য ধারায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে যুগান্তরকারী পরিবর্তন ঘটিয়েছেন যা তাকে চির অমরত্বের খ্যাতি দান করেছে ।
- নবজাগরণের কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত জন্ম গ্রহণ করেন – ২৫ জানুয়ারি, ১৮১৪ সালে (সাগরদাড়ি, যশোর) ।
- কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত খ্রিস্টর্ধম গ্রহণ করেন – ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৮৪৩ সালে ।
- মাইকেল মধুসূদন দত্ত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন – রেবেকা ম্যাকটিভিস নামে এক ইংরেজ যুবতীকে পরবর্তীতে ফরাসি তরুণী এমিলিয়া আরিয়েতা সোফিয়াকে ।
- ব্যারিস্টারী পড়ার জন্য মাইকেল মধুসূদন বিলেত গমন করেন – ১৮৬২ সালে ।
- মাইকেল মধুসূদন দত্তকে বাংলা সাহিত্যে বিবেচনা করা হয় – আধুনিকতার পথিকৃৎ ।
- বাংলা সাহিত্যের অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত ।
- আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি – মাইকেল মধুসূদন দত্ত ।
- বাংলা সাহিত্যের ‘দত্তকুলোদ্ভব’ কবি বলা হয় – মাইকেল মধুসূদন দত্ত ।
- ‘টিমোথি পেনপেয়ম’ ছদ্ম নামে লিখতেন – মাইকেল মধুসূদন দত্ত ।
- মাইকেল মধুসূদনের প্রধান অবদান – মহাকাব্য রচনা ।
- মাইকেল মধুসূদনের অন্যান্য কৃতিত্বের মধ্যে রয়েছে – প্রথম স্বর্থক নাট্যকার, প্রথম প্রহসন রচয়িতা, প্রথম পত্রকাব্য রচয়িতা, প্রথম সনেটের প্রবর্তক ।
- মাইকেলের রচিত বাংলা সাহিত্যের প্রথম স্বার্থক মৌলিক নাটক – শর্মিষ্ঠা ।
- মাইকেল রচিত ইংরাজি কাব্য গ্রন্থ – The Captive Ladie ।
- বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক কমেডি নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘পদ্মাবতী’ ।
- মাইকেলের ‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটকটি – বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ট্রাজেডি ।
- ‘শর্মিষ্ঠা’ নাটকে মাইকেল মধুসূদন তুলে ধরেছেন – মহাভারতের আদি পর্বে বর্ণিত রাজা যযাতি, শর্মিষ্ঠা ও দেবযানীর ত্রিভূজ ‘প্রেম কাহিনী’ ।
- মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর ‘শর্মিষ্ঠা’ নাটকটি উৎসর্গ করেছিলেন – মহাকবি কালিদাসকে ।
- পদ্মাবতী নাটকে নারী সৌন্দের্যের যে স্বাভাবিক ঈর্ষা প্রকাশিত হয়েছে সেটা তিনি কোন গল্প অবলম্বনে রচনা করেছেন – গ্রিক পুরাণের প্রসিদ্ধ গল্প ‘ Apple of Discord’ অবলম্বনে ।
- ‘মায়াকানন’ মধুসূদনের কোন শ্রেণীর রচনা – সর্বশেষ বিয়োগান্ত নাটক ।
- মাইকেল মধুসূদন দত্তের কাব্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে – তিলোত্তমাসম্ভব (১৮৬০), মেঘনাদবধ কাব্য (১৮৬১), ব্রজাঙ্গনা (১৮৬১), বীরাঙ্গনা (১৮৬২) প্রভৃতি ।
- বাংলা সাহিত্যের প্রথম সনেট সংকলন – মাইকেল মধুসূদনের ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ (১৮৬৬খ্রি) ।
- ‘তিলোত্তমাসম্ভব’ কাব্যের চরিত্র – সুন্দ, উপসুন্দ, তিলোত্তমা, ইন্দ্র, ইন্দানী প্রভৃতি ।
- বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক মহাকাব্য – ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ (নয়টি সর্গে রচিত) ।
- ‘রামায়ণের’ রাম-রাবণের যুদ্ধে রাবণ পুত্র মেঘনাদের নিধন কাহিনী অবলম্বনে রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্যটি – ট্রাজিক বীররসের কাব্য ।
- মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত মেঘনাদবধ কাব্যে নায়ক হিসেবে অভিহিত করেছেন – রাবনকে ।
- “আমি কি ডরাই সখি ভিখারী রাঘবে” এখানে ‘ভিখারী রাঘব’ বলতে বুঝায় – রামকে ।
- ‘মেঘনাদ বধ’ কব্যের অন্যতম চরিত্রগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য – রাবণ, রাম, লক্ষণ, সীতা, মেঘনাদ, প্রমীলা, বিভীষণ প্রভৃতি ।
- বিভীষণের স্ত্রীর নাম – সরমা ।
- মাইকেল মধুসূদন দত্ত ‘মেঘনাদ বধ’ কাব্যটি উৎসর্গ করেছেন – রাজা দিগম্বর মিত্রকে ।
- গ্রিক কবি হোমারের ‘ইলিয়াড’ অবলম্বনে মাইকেল রচনা করেছেন – হেক্টরবধ (১৮৭১) ।
- বৈষ্ণব পদাবলির অনুকরণে ‘রাধা-বিরহ’ বিষয়ক মাইকেলের ‘ব্রজাঙ্গনা’ কাব্যটি – মিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত ।
- মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘বিরাঙ্গনা’ কাব্যটি – বাংলা সাহিত্যের প্রথম পত্রকাব্য ।
- ১১টি পত্রের সমন্বয়ে রচিত ‘বীরাঙ্গনা’ কাব্যটি রচিত – অমিত্রাক্ষর ছন্দে ।
- ‘বীরাঙ্গনা’ কাব্যটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত উৎসর্গ করেছেন – ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে ।
- মাইকেল মধুসূদন দত্ত রটিত ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ গ্রন্থে রয়েছে- ১০২টি সনেট ।
- সাধারণত সনেট বিভক্ত থাকে – দুটি ভাগে [ অষ্টক (Octave)) ও ষটক (Sestet)] ।
- মাইকেল মধুসূদন দত্তকে বলা হয় – বাংলা সনেটের জনক ।
- Blank Verse শব্দটির অর্থ – অমিত্রক্ষর
- ‘অমিত্রক্ষর‘ ছন্দের বৈশিষ্ট্য – অন্ত্রমিল নেই ।
- Sonnet এর প্রথম ভাগে থাকে – অষ্টক ।
- ‘মেঘনাদবধ’ কাব্যে যুদ্ধের সময় পশ্চিম দুয়ারে রক্ষক ছিলেন – বীর নীল ।
- ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ এবং ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ মাইকেল মধুসূদনের – প্রহসন ।
- ‘আত্মবিলাপ’ মাইকেলের – গীতিকবিতা ।
- বাংলা গীতিকবিতার প্রথম রচয়িতা – মাইকেল মধুসূদন দত্ত ।
- নাটক ও প্রহসনের পার্থক্য – ব্যঙ্গ বিদ্রুপ ।
- বাংলা সাহিত্যের প্রথম ঐতিবাসিক নাটক – ‘কৃষ্ণকুমারী’ ।
- “সতত হে নদ, তুমি পড় মোর মনে। সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে” উক্তিটিতে মাইকেল মধুসূদন দত্ত বলেছেন – কপোতাক্ষ নদের কথা ।
- “কেলিনু শৈবালে ভুলি কমল-কানন” এখানে ‘কমল কানন’ হলো – বাংলা ভাষা ।
- “ওরে বাছা মাতৃকোষে রতনের রাজির, এ ভিখারী দশা তবে কেন তোর আজি” পঙক্তিটি – বঙ্গভাষা কবিতার ।
- যে মিল্টনের সাথে তুলনা করা হয় – মধুসূদন দত্তকে ।
- ‘Visions of the post’ কাব্যটি প্রকাশিত হয় – ১৮৪৯ সালে ।
- মধুসূদন দত্ত তাঁর ‘তিলোত্তমাসম্ভব’ কাব্যটি নামে উৎসর্গ করেন – যতীন্দ্র মোহন ঠাকুরকে ।
- মাইকেল মধুসূদন দত্ত যে সকল সাহিত্যিকের সনেট অবলম্বনে বাংলা সনেট লিখেন – পেত্রাক, মিল্টন ওশেকসপিয়র ।
- ‘দাঁড়াও পথিকবর’ জন্ম যদি তব বঙ্গে ! তিষ্ঠ ক্ষণকাল ! এ সমাধি স্থল ‘ কবিতাটির লাইনগুলো যে সাহিত্যিকের সামাধিস্থলে লেখা রয়েছে – মাইকেল মধুসূদন দত্ত ।
- মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘বঙ্গভাষা’ সনেটটি প্রথম লেখা হয় – কবি-মাতৃভাষা নামে ।
- ‘বঙ্গভাষা’ সনেটের ষটকের মিল বিন্যাস – গঘঘগঙঙ ।
- “হে বঙ্গ ভান্ডারে তব বিবিধ রতন, তা সবে (অবোধ আমি) অবহেলা কবি, পর-ধন লোভে মত্ত, করিনু ভ্রমণ পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি” পঙক্তিটির রচয়িতা – মাইকেল মধুসূদন দত্ত ।
- বঙ্গভাষা কবিতায় ‘কুললক্ষ্মী’ বলতে বোঝানো হয়েছে – ভাষাদেবীকে ।
- বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রথম প্রয়োগ ঘটে – মধুসূদন দত্তের ‘পদ্মাবতী’ নাটকে ।
- “মাতৃভাষা-রূপ খানি পূর্ণ মণিজালে” ‘মণিজাল’ অর্থ – জালের মতো ছড়িয়ে থাকা মণি ।
- ‘বঙ্গভাষা’ কবিতায় মাইকেল মধুসূদন দত্ত তুলে ধরেছেন – মাতৃভাষার প্রতি উপেক্ষার অনুতাপ ।
- মাইকেল মধুসূদন দত্ত পরলোক গমণ করেন – ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন কলিকাতার আলিপুর হাসপাতালে ।