বিশ্বব্যাপী দ্রুত ছড়িয়ে পড়া নতুন আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। মানুষের মাধ্যমে ছড়ানো ভাইরাসে চীনে নতুন করে আরও শতাধিক লোকের প্রাণহানি ঘটেছে। ভাইরাসটির শনাক্তস্থলে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছেন বাসিন্দারা। কেবল তাই নয়, চীনের সীমানা পেরিয়ে ভাইরাসটি এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আরও অন্তত ২০টি দেশে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত ভয়াবহ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১৭০ জনে পৌঁছেছে। উহানে এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নামকরা ৬ হাজারের অধিক চিকিৎসক জড়ো হয়েছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ বলছে, নতুন করে মারা যাওয়াদের অধিকাংশই উহান প্রদেশের বাসিন্দা। মূলত এখান থেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়েছিল। আর সবমিলিয়ে চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়েছে। যদিও বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা সাত হাজারের অধিক।

বর্তমানে থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতসহ বেশকিছু দেশে অজ্ঞাত এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। তাছাড়া আতঙ্কে রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানও। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও ভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্তদের সবাই সম্প্রতি চীনে ভ্রমণ করেছেন কিংবা সেখানে বসবাস করেন।

এ দিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নতুন একটি হাসপাতাল নির্মাণ করেছে চীন। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালটি রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার উপযোগী হয়ে উঠে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর সিএনবিসি।

অপর দিকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।

সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here