কামরুল ইসলাম দুলু

বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি শোকাবহ দিন। দুঃসহ সে স্মৃতি এখনো কাঁদায় স্বজনহারা মানুষগুলোকে! সেই ভয়াবহ দিনটি কখনো ভুলবো না, ভোলার নয়! আজো মনে পড়লে সেই রাতের কথা এখনো শরীর কেঁপে উঠে। ১৯৯১ সালের এই দিনে দেশের ইতিহাসে সবচে বড় প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল দেশের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার পুরো উপকূল। লাশের পরে লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল সর্বত্র। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল বিস্তীর্ণ অঞ্চল। দেশের মানুষ বাকরুদ্ধ হয়ে সেদিন প্রত্যক্ষ করেছিল প্রকৃতির করুণ এই আঘাত।

স্বজন হারানোর আর্তনাদে ভারি হয়ে ওঠেছিল চারিদিকের পরিবেশ। দিনটি ছিল সোমবার। সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনার পাশাপাশি ছিল গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, বাতাসও বইছিল হালকাভাবে। দুপুর গড়াতেই বেড়ে গিয়েছিল বাতাসের গতিবেগ। বিকেলের পর থেকে বাতাসের সঙ্গে বাড়তে থাকে বৃষ্টি। রাত ১২টার দিকে ভেড়িবাঁধ ভেঙে উঠে আসা জলোচ্ছ্বাস ভাসিয়ে নিয়ে যায় বাড়িঘর, মানুষ, গবাদিপশু সবকিছু। মুহূতের মধ্যে পাল্টে যায় সবকিছু! এটি কোনো গল্পের বর্ণনা নয়, বাস্তব জীবনে ঘটে যাওয়া এক দুঃসহ ঘটনার বর্ণনা! বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রকৃতির এ ভয়াল রূপটি দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছিল ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগের এতবড় অভিজ্ঞতার মুখোমুখি এদেশের মানুষ এর আগে আর কখনো হয়নি।

পরদিন সারা বিশ্বের মানুষ অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখেছিলেন ধ্বংসলীলা। আর্তনাদে কেঁপে উঠেছিল বিশ্ব বিবেক। ৩৪ বছর আগের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ আর প্রাণহানির দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে আবারো দিনটি হাজির হয়েছে উপকূলবাসীর কাছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here