নিজস্ব প্রতিবেদক: বোয়ালখালী পৌরসভার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ছমদ আলী খাল দখলে ‘প্রতিযোগিতা’ চলছে। এতে খালটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। ফলে এলাকায় জলাবদ্ধতাসহ চাষাবাদ হুমকির মুখে পড়েছে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না বলে জনসাধারণের অভিযোগ।

স্থানীয়রা জানান, পৌরসভার সবচেয়ে ঘন বসতিপূর্ণ পেতন শাহ মাজার সংলগ্ন আইসক্রিম ফ্যাক্টরি এলাকা। ওই এলাকা দিয়ে বয়ে গেছে ছমদ আলী খাল। এটি রায়খালী ও ছনদরিয়া খালের শাখা খাল। এলাকার চাষাবাদ ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ব্যাপক ভূমিকা রেখে আসছে খালটি। কিন্তু কয়েক মাস ধরে এলাকার কিছু প্রভাবশালী মহল খাল ভরাট করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছে। স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতাকে কাজে লাগিয়ে তারা রাতের আঁধারে প্রতিরোধ দেয়ালও নির্মাণ করে ফেলেছে। এর ফলে এলাকার একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম পেতন শাহ মাজার সড়ক ও কালভার্ট হুমকির মুখে পড়েছে। জোয়ার-ভাটায় পানি উঠানামা করতে না পারায় এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

ওই এলাকার বাসিন্দা মো. মানিক বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে এমনিতে জোয়ার ও বৃষ্টিতে প্লাবিত হয় এলাকার বাড়ি-ঘর, রাস্তাঘাট। এর ওপর খাল দখলের কারণে জলাবদ্ধতা আরো বেড়ে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়বে।’

চাষি আবদুল করিম বলেন, ‘খালটির বেশির ভাগ অংশ প্রভাবশালীরা ভরাট করে ফেলেছে। ফলে চাষাবাদে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। প্রশাসনকে অভিযোগ জানিয়েও কোনো সুরাহা হচ্ছে না। প্রশাসনের নীরবতায় দখলকারীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে খালটি দ্রুত উদ্ধার করা না গেলে এলাকার কৃষি আবাদি জমিগুলো চাষাবাদের অযোগ্য হয়ে পড়বে।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, পেতন শাহ সড়ক সংযুক্ত কালভার্ট থেকে শুরু করে পূর্ব গোমদণ্ডী প্রায় আধা কিলোমিটার খাল দখল হয়ে গেছে। কোথাও স্থাপনা গড়ে উঠেছে, কোথাও গড়ে উঠছে। খালের বিভিন্ন স্থানে বস্তা, ইট ও দেয়াল নির্মাণ করে ভরাট করে দখল করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিরোধ দেয়াল তুলে ও ইট ফেলে চারটি স্থানে চলছে দখল কার্যক্রম। ফলে বাড়ি-ঘর, আবাদি জমির পাশাপাশি হুমকির মুখে রয়েছে সড়ক ও কালভার্ট।

বোয়ালখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) একরামুল সিদ্দীক বলেন, ‘আমি অসুস্থ থাকায় খাল দখলের খবর পেয়ে ভূমি কার্যালয় থেকে প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছে। খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বোয়ালখালীর পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আবু বলেন, ‘এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে খাল দখলের বিষয়টি উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় তুলে ধরা হয়েছে। বেআইনিভাবে প্রভাবশালীরা খালটি ভরাট করছে। তাদেরকে বাধা দিলেও তারা কোনো পরোয়া করছে না। দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে খালটি উদ্ধার করা না গেলে এলাকায় প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেবে।’

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here