পূজন সেন : বোয়ালখালীতে ২৪ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহে নতুনমাত্রায় যোগ হচ্ছে কানুনগোপাড়ায় নির্মিত ‘বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র-২’। ১০ এমভিএ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এ উপকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে চলতি মাসের শেষের দিকে উদ্বোধন হতে পারে এ উপকেন্দ্রটি। ২০১৮ সালের শেষের দিকে এ উপকেন্দ্র নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলো পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে ১৩ আগস্ট চট্টগ্রামের প্রথম উপজেলা হিসেবে বোয়ালখালীকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত এলাকা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপজেলায় চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতায় গ্রাহক রয়েছেন ৬৬ হাজার। দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৮ মেগাওয়াট।

শিকলবাহা উপকেন্দ্র থেকে এ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ফলে মিলতো না চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ। যান্ত্রিক ত্রুটি ও অন্যান্য বিপর্যয়ে বিঘ্ন ঘটতো বোয়ালখালী উপজেলার বিদ্যুৎ সরবরাহে। উপজেলার আরাকান সড়কে পাশে গোমদণ্ডী ফুলতল এলাকায় ১০ এমভিএ উপকেন্দ্র থাকলেও তা চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ সরবরাহে কুলিয়ে ওঠতো না।

পরবর্তী এ উপকেন্দ্রে আরো ৫ এমভিএ যোগ করলে ধারণ ক্ষমতা ১৫ এমভিএ উন্নীত করা হয়। ২০১৫ সালে আরো ৫ এমভিএ যোগ করলে তা ২০ এমভিএ ধারণ ক্ষমতায় উন্নীত হয়।

তবে এ উপজেলায় শিল্পকারখানা ও আবাসন গড়ে ওঠার ফলে দিনদিন বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েই চলেছে। প্রয়োজন হয়ে পড়ে আরো কয়েকটি উপকেন্দ্রের। গ্রাহক সন্তুষ্টির লক্ষ্যে উপজেলার টি.কে পেপার এন্ড কেমিক্যাল ইন্ড্রাস্টিজের নিজস্ব উপকেন্দ্র থেকেও বিদ্যুৎ নেওয়া হচ্ছে।

উপজেলার পূর্বাঞ্চলে (শ্রীপুর-খরণদ্বীপ, আমুচিয়া ও কড়লডেঙ্গা ইউনিয়ন) বিদ্যুৎ সরবরাহে লো ভোল্টেজ দেখা দিতো। এছাড়া প্রায় লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েন ওই অঞ্চলের গ্রাহকরা। এ সমস্যা নিরসনে কানুনগোপাড়া এলাকায় উপকেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (চট্টগ্রাম দক্ষিণ) উত্তম কুমার সেন জানান, বোয়ালখালী উপজেলার গ্রাহক সেবার মান বাড়ানো ও বিদ্যুৎ সরবরাহের সমস্যা নিরসনে ১০ এমভিএ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন কানুনগোপাড়ায় বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি ‘১৫লক্ষ গ্রাহক সংযোগ প্রকল্প’র আওতায় নির্মাণ করা হয়েছে।বোয়ালখালীতে উপকেন্দ্র ২

প্রায় ১২-১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ কেন্দ্রটি মুজিববর্ষ উপলক্ষে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে বা মার্চ মাসের ১ম সপ্তাহে উদ্বোধন হতে পারে।

এলাকা পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন কাজল বলেন, বোয়ালখালীতে বিদ্যুৎ সরবরাহে যে সমস্যা ছিলো তা আপাততঃ নিরসন হয়েছে। তবে কালুরঘাটে সড়ক সেতু নির্মিত হলে এ এলাকায় আরো শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে, হবে আবাসনও।

ফলে বিদ্যুতের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বাড়বে। সেই লক্ষ্যে আরো কয়েকটি উপকেন্দ্রসহ আধুনিক সরঞ্জামে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর বোয়ালখালী জোনাল ম্যানেজার রফিকুল আজাদ জানান, শিকলবাহা উপকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ বোয়ালখালীতে আসে। তবে সেই বিদ্যুৎ ধারণ করার মতো উপকেন্দ্র বোয়ালখালীতে ছিলো না। পূর্বাঞ্চলে সেই বিদ্যুৎ পৌঁছাতে গিয়ে লো ভোল্টেজ হয়ে পড়তো।

এছাড়া প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বোয়ালখালীতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যেতো। কানুনগোপাড়া উপকেন্দ্র নির্মাণের ফলে এ সমস্যার অনেকটাই নিরসন হবে।

তিনি বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এ বছরকে ‘সেবা বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। মুজিববর্ষে এ উপকেন্দ্র বোয়ালখালীবাসীর জন্য একটি বড় পাওয়া।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here