দেবাশীষ বড়ুয়া রাজু  :
ডলি বড়ুয়া। বয়স ৬৬। সংসার জীবনে সংগ্রাম করে আজ তিনি একজন গর্বিত মা। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী ইউনিয়নের হাজারীরচর গ্রামের বিজয় চাঁদ বড়ুয়া ও কমলিকা বড়ুয়ার ঘরে ১৯৫৪ সালে জন্মেছিলেন তিনি। সামাজিক নানান প্রতিকুলতাকে কাটিয়ে এইচএসসি পাশ করেন ডলি বড়ুয়া।

১৯৭২ সালে তিনি একই গ্রামের কৃতি সন্তান তৎকালীন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এনাটমি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. কুসুমবিন্দু বড়ুয়ার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

সংসার জীবনে তিনি ৭ সন্তানের জননী। এরমধ্যে প্রথম সন্তান মিল্টন বড়ুয়া জন্মের আড়াই বছরের মাথায় এক অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দেড় বছর বয়সী তৃতীয় সন্তান ন্যান্সি বড়ুয়াকে হারান তিনি। দুই সন্তান হারানোর শোক নিয়ে তিনি অন্যান্য ছেলে-মেয়েদের মানুষের মতো মানুষ করার গুরুদায়িত্ব পালন করে গেছেন। ২০০৬ সালে স্বামী ডা. কুসুমবিন্দু বড়ুয়াকে হারান তিনি।

তাঁর দ্বিতীয় সন্তান চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ডেজী বড়ুয়া, চতুর্থ সন্তান ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিধান বড়ুয়া, পঞ্চম সন্তান চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্টার ডা. ধীমান বড়ুয়া, ষষ্ঠ সন্তান একাউন্টিংয়ে স্নাতকোত্তর সুচরিতা বড়ুয়া ও সপ্তম সন্তান ডেন্টাল সার্জন ডা. অয়ন্তা বড়ুয়া নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত।

গত ৯ ডিসেম্বর বুধবার সফল জননী হিসেবে ডলি বড়ুয়াকে সম্মাননা দিয়েছে বোয়ালখালী উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। তাঁর এ সম্মাননায় খুশি পরিবারের সকল সদস্যরা।

ডা.ডেজী বড়ুয়া বলেন, ‘আমার মমতাময়ী মা আমাদের মানুষ করার জন্য জীবনে অনেক পরিশ্রম ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আমরা যাতে স্বীয়কর্মে প্রতিষ্ঠালাভ করতে পারি তার জন্য দিয়েছেন প্রেরণা। তিনি উপজেলা পর্যায়ে সফল জননী হিসেবে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা পাওয়ায় খুব-খুব আনন্দ হচ্ছে।’

সফল জননী ডলি বড়ুয়া বলেন, ‘সন্তানদের মানুষ করার চেষ্ঠা করেছি। তাদের সফলতার কথা শুনে মনে হয় নিজের স্বপ্নই বাস্তবায়িত হচ্ছে। তারা যেন সুস্থ ও সুন্দরভাবে থাকে এটাই একমাত্র কামনা। সন্তানদের কাছে একটাই প্রত্যাশা, তারা যেন মানব কল্যাণে কাজ করে ও মানুষের পাশে থাকে।’

সন্তানদের জন্য আর্শীবাদ চেয়ে তিনি বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে সফল জননী হিসেবে সম্মানিত হওয়ায় নিজেকে গর্বিত মনে করছি।’

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here