নিজস্ব প্রতিবেদক : ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে যুবকের পুরুষাঙ্গে গরম লোহার শিক ঢুকিয়ে দেয়া হয়। অমানুষিক নির্যাতনের শিকার মো. আশিক (২৪) এখন শয্যাশায়ী। পাশবিক এমন ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে।
পৌরসভার গোমদন্ডী মুজাহিদ চৌধুরী পাড়ার নকীব আলী চৌধুরী বাড়ির আবুল কালামের ছেলে মো. আশিক নিজ বাড়িতে যন্ত্রনায় ছটফট করছেন। আশিকের পিতা আবুল কালাম পেশায় একজন দিনমজুর। ছেলের উন্নত চিকিৎসা করার মতো আর্থিক অবস্থা নেই তার।
এ ব্যাপারে গতকাল শুক্রবার বোয়ালখালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আশিকের পিতা আবুল কালাম। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর নির্যাতনকারিদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে। আমরা চাই নির্যাতনের শিকার যুবক ও তার হতদরিদ্র পিতা ন্যায় বিচার পাক।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায় গত মঙ্গলবার দুপুরে পৌর সদরের রেল লাইনের পাশে একটি পরিত্যক্ত ভবনে এ নির্যাতন করা হয়। ওইদিন দোকান থেকে ডিম কিনতে গেলে স্থানীয় কয়েক যুবক দু’টি ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে অলিবেকারী চাইলদ্যাতল এলাকা থেকে আশিককে অটোরিকশায় তুলে পৌরসদরের রেল লাইনের পাশের একটি পরিত্যক্ত ভবনে নিয়ে যায়।
এরপর সেখানে আশিককে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা লোহার শিক আগুনে গরম করে পুরুষাঙ্গের ছিদ্রপথে ঢুকিয়ে দেয়। এছাড়া আশিকের সাথে থাকা ডিম সিদ্ধ করে পায়ুপথে দেয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় আশিক অজ্ঞান হয়ে পড়লে অবস্থা বেগতিক দেখে নির্যাতনকারিরাই তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগ পর্যন্ত নিয়ে গেলে আশিকের জ্ঞান ফিরে আসায় ভর্তি না করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
পরবর্তীতে স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে চিকিৎসা বাবদ ২০ হাজার টাকা দেয়ার আশ্বাস দেয় তারা। এর এক পর্যায়ে আশিকের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান তার পিতা। তারাও তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। চমেক হাসপাতালের ইউরোলজী বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমানের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে বলে জানান আশিকের পিতা। তিনি অভিযোগ করেন, যে ছাগল দুটি চুরি হয়েছে বলে এ নির্যাতন চালানো হয় সেই ছাগল দুটি উপজেলার একটি বাজার থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।