টঙ্গীর তুরাগতীরে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমা। আজ শুক্রবার ফজরের নামাজের পর ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়েছে। দেশের ৬৪টি জেলার ও বিদেশিসহ লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি এ ইজতেমায় নিচ্ছেন।  আগামী রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ পর্ব। এর পর ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় পর্ব। প্রথম পর্বে মাওলানা জুবায়েরের অনুসারী ও দ্বিতীয় পর্বে সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমায় অংশ নেবেন।

বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে টঙ্গীতে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। ইতোমধ্যে ইজতেমা ময়দান পূর্ণ হওয়ার পর মুসল্লিরা ময়দান পার্শ্ববর্তী কামারপাড়া রোড, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ফুটপাত এবং আশপাশের খালি জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন।

শুক্রবার বাদ ফজর থেকে শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ খুরশীদ আম বয়ান করছেন। বয়ান বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা মো. আব্দুল মতিন। আজ জুমার নামাজ পড়াবেন বাংলাদেশের কাকরাইল মসজিদের হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ জোবায়ের।

ইজতেমা ময়দান এবং এর আশপাশ এলাকায় যতদূর চোখ যায় শুধু পাঞ্জাবি আর টুপি পরা মানুষের সমাগম। ইজতেমার এ পর্বে যোগ দিতে কনকনে শীত, কুয়াশা আর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে গত মঙ্গলবার থেকে দলে দলে ময়দানে এসেছেন মানুষ।

বৃহস্পতিবার ময়দান পূর্ণ হয়ে গেলে ময়দানে স্থান না পেয়ে মুসল্লিরা ময়দান পার্শ্ববর্তী সড়ককের ফুটপাত-কামারপাড়া সড়কে ও খালি জায়গায় সামিয়ানা টানিয়ে আবস্থান নিয়েছেন। মুসল্লিদের আসা এখনো অব্যাহত রয়েছে। আগত দেশ-বিদেশের মুসল্লিদের পদচারণনায় শিল্প শহর টঙ্গী এখন যেন ধর্মীয় নগরীতে পরিণত হয়েছে।

বিশ্ব ইজতেমায় পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যরাও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। পুরো ইজতেমা ময়দান সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচটাওয়ারের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদ্যরা পর্যবেক্ষণ করছেন।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম জানান, বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কর্মকান্ড সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষে বিভিন্ন বিভাগের কাজের সমন্বয় করে থাকে জেলা প্রশাসন। বিদেশি মেহমানদের আবাসস্থল নির্মাণের নিমিত্তে টিন সরবরাহ, বিভিন্ন দফতরের কন্ট্রোল রুমের স্থান নির্ধারণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা বিভাগীয় প্রশাসনের দিক নির্দেশনায় বিভিন্ন কার্যাদি তদারকি করে থাকে। সর্বোপরি বিশ্ব ইজতেমার সব দিক জেলা প্রশাসন পর্যবেক্ষণ করে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাজায় রাখার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা পাঁচটি স্তরে বিভক্ত করা হয়েছে। নিরাপত্তায় ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ৯ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

ওয়াচ টাওয়ার, ফুটপেট্রোল, মোবাইল পেট্রোল চেকপোস্টসহ পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা ইজতেমা ময়দানের ভেতরে এবং বাইরে দায়িত্ব পালন করছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here