অনলাইন ডেস্ক : কদিন আগেই ফিরে পেয়েছেন হারানো সিংহাসন। সাকিব আল হাসান আবারো উঠে গেছেন ওয়ানডের অলরাউন্ডার তালিকায় এক নম্বরে। গত ৮-৯ বছর ধরে এই অবস্থান নিজের দখলেই রেখেছেন তিনি। এ জন্য আসন্ন বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ডেঞ্জারম্যান হিসেবে সাকিবকে বেছে নিয়েছেন তিনবারের বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড় ও সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক রিকি পন্টিং।
বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডারকে আসন্ন বিশ্বকাপের ‘বিপজ্জনক’ তারকাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে বাকি দলগুলোকে এক রকম হুশিয়ার করে রাখলেন বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়া পন্টিং। এদিকে, রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন সাকিব নিজেও। টানা তিনটি বিশ্বকাপে খেলতে নামবেন শীর্ষ অলরাউন্ডার হিসেবে। এর আগে ক্রিকেটের ইতিহাসেই এমন কীর্তি গড়তে পারেননি কেউ।
অধিনায়ক হিসেবে দুইবার বিশ্বকাপ জেতা অজি গ্রেট মনে করেন, সাকিব সত্যিই একজন ‘ডেঞ্জারম্যান’। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া’ এবার বিশ্বকাপে দলগুলোর বিপদজ্জনক খেলোয়াড়দের নিয়ে ধারাবাহিক আয়োজন করেছে। সেখানে বাংলাদেশের বিপজ্জনক ক্রিকেটার হিসেবে সাকিবকে বেছে নিয়েছেন পন্টিং। এ ব্যাপারে পন্টিং ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে, ‘বাংলাদেশের সাকিব বিপজ্জনক। সে অনেক দিন ধরেই খেলছে। সে একজন বাঁহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান যে মাঠের বিভিন্ন দিকে শট খেলে রান করতে পারে। স্কয়ারে খুব দারুণ সাকিব। এছাড়া তার ব্যাট ধরার ধরনটা বলে দেয়, ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট ও থার্ডম্যানেও সে বেশ ভালো খেলে।’
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক আরও জানান, ‘যখন আপনি কৌশলে এবং বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে ক্রিকেট খেলার কথা বলবেন, তখন জেনে রাখুন, বল হাতে সাকিব আসলে সে কাজটাই করে থাকে। বলে অতটা বাঁক নেই কিন্তু অসাধারণ গতি-বৈচিত্র্য। একজন বাঁহাতি অফ স্পিনার হিসেবে সে খুবই দারুণভাবে বলের ডেলিভারিতে গতির পরিবর্তন করতে পারে। আর সে খুবই আগ্রাসী। সব সময় আক্রমণাত্মক। অন্যান্য স্পিনারদের চেয়ে আর্ম বল অনেক বেশি ব্যবহার করে। তবে এখন বাকি স্পিনারদের চেয়ে সে আলাদা। বর্তমান সময়ের অধিকাংশ স্পিনারের চেয়ে সে বাতাসকে অনেক বেশি কাজে লাগায়। এখনকার সাদা বলের ক্রিকেটে অধিকাংশ স্পিনার পিচে বল ফেলে, সাকিব ঠিক উল্টোটা করে। বেশির ভাগ স্পিনার রান আটকাতে চায়। কিন্তু সে (সাকিব) অন্যভাবে ভেবে থাকে। প্রথম কয়েকটি বলে সে আপনাকে ক্রিজে রাখবে। এরপর গতি-বৈচিত্র্য এনে অপেক্ষা করবে কখন ব্যাটসম্যান তাকে মারতে আসবে।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের অভিজ্ঞতা সাকিবকে আলাদা করে রেখেছে। তবে, সাকিব ছাড়াও বাংলাদেশের সেরা ওপেনার তামিম ইকবালকে মনে ধরেছে পন্টিংয়ের। অজি কিংবদন্তি যোগ করেন, ‘সাকিব অনেক দিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে। আইপিএল ও বিগ ব্যাশেও খেলছে অনেক দিন ধরে। তার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের কাজে লাগবে। সাকিব এবং তামিম ইকবাল বিশ্বকাপে ভালো করতে পারে বলে মনে করি।’
আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের আগে অলরাউন্ডার তালিকায় সাকিবের থেকে খানিকটা এগিয়ে ছিলেন আফগানিস্তানের তরুণ সেনসেশন রশিদ খান। ত্রিদেশীয় সিরিজে তিন ইনিংস খেলে ১৪০ করার পাশাপাশি বোলিংয়ে দুই উইকেট শিকার করেন সাকিব। এই সিরিজে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের ওপর ভর করে রশিদ খানের থেকে ২০ পয়েন্ট এগিয়ে যান টাইগার তারকা। বর্তমানে সাকিবের রেটিং পয়েন্ট ৩৫৯ আর রশিদের ৩৩৯ পয়েন্ট। ৩১৯ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছেন আরেক আফগান স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী।