অনলাইন ডেক্স: চলতি বিশ্বকাপের ১২তম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড এবং বাংলাদেশ। কার্ডিফের ওয়েলসে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি মাশরাফি। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ইংলিশরা তুলেছে ৩৮৬ রান। এটাই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এর আগে ২০১১ সালে বেঙ্গালুরুতে ভারতের বিপক্ষে ইংলিশরা তুলেছিল ৩৩৮ রান। সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ওপেনার জেসন রয়। ফিফটির দেখা পেয়েছেন আরেক ওপেনার জনি বেয়ারস্টো, জস বাটলার। শেষ দিকে ক্যামিও ইনিংস খেলেন লিয়াম প্লাংকেট আর ক্রিস ওকস।

সোফিয়া গার্ডেনসে শনিবার (৮ জুন) বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে তিনটায় শুরু হয় ম্যাচটি। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করছে গাজী টিভি। আগের দুই ম্যাচের একাদশ নিয়েই মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। এদিকে, মঈন আলির জায়গায় ইংলিশরা নিয়েছে লিয়াম প্লাংকেটকে। সুখবর পেতে যাচ্ছেন মঈন আলি। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকায় তাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে এই ম্যাচে।

প্রথম ৫ ওভারে ১৫ রান তুলেছিল স্বাগতিকরা। পরের ১০ ওভারে তোলে ৮৬ রান। ১৫ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ১০১। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে ইনিংসের ২০তম ওভারের প্রথম বলটি করেন মাশরাফি। এক্সট্রা লিফটের বলটি ঠিকমতো খেলতে পারেননি জনি বেয়ারস্টো। ব্যাটে লেগে উঠে যাওয়া বলটি শর্ট কাভারে দাঁড়ানো মেহেদি মিরাজ দারুণ ক্যাচে পরিণত করেন। দলীয় ১২৮ রানের মাথায় ইংলিশরা প্রথম উইকেট হারায়। বিদায়ের আগে ইংলিশ ওপেনার বেয়ারস্টো ৫০ বলে ছয়টি চারে করেন ৫১ রান।

এরপর ৭৭ রানের জুটি গড়েন জো রুট এবং জেসন রয়। ২০৫ রানের মাথায় বিদায় নেন রুট। ইনিংসের ৩২তম ওভারে দারুণ এক স্লোয়ারে সাইফউদ্দিন বোল্ড করেন জো রুটকে। ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হওয়ার আগে ২৯ বলে রুট করেন ২১ রান। পরের বলেই জস বাটলারের বিপক্ষে এলবির আবেদন, আম্পায়ার সেই আবেদনে সাড়া দেননি। বাংলাদেশ রিভিউ নিয়েও তাকে ফেরাতে পারেনি।

২৩৫ রানের মাথায় মিরাজ ফেরান সেঞ্চুরিয়ান জেসন রয়কে। ইংলিশ এই ওপেনার মাশরাফির হাতে ধরা পড়ার আগে ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি তুলে নেন। সাজঘরের পথ ধরার আগে টাইগার বোলারদের ভুগিয়ে ১২১ বলে ১৪টি চার আর ৫টি ছক্কায় করেন ১৫৩ রান। আউট হওয়ার ঠিক আগের তিন বলে পর পর মিরাজকে তিনটি ছক্কা হাঁকান। দলীয় ৩৩০ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারায় ইংলিশরা, সাইফউদ্দিন ফিরিয়ে দেন জস বাটলারকে। বাউন্ডারি সীমানায় সৌম্য সরকারের তালুবন্দি হওয়ার আগে বাটলার ৪৪ বলে দুটি চার আর চারটি ছক্কায় করেন ৬৪ রান।

৪৭তম ওভারে দলীয় ৩৪০ রানের মাথায় মিরাজ নিজের দ্বিতীয় উইকেটটি তুলে নেন। সৌম্য সরকারের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন ইংলিশ দলপতি ইয়ন মরগান। এর আগে ৩৩ বলে একটি চার আর দুটি ছক্কায় মরগান করেন ৩৫ রান। শেষ ১০ ওভারে ১১১ রান তুলে নেয় ইংলিশরা। আর শেষ ১৭ বলে ক্রিস ওকস-লিয়াম প্লাংকেট জুটিতে আসে অবিচ্ছিন্ন ৪৫ রান। ওকস ৮ বলে দুই ছক্কায় ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। প্লাংকেট ৯ বলে চারটি চার আর একটি ছক্কায় করেন অপরাজিত ২৭ রান।

১০ ওভারে ৭১ রান দিয়ে সাকিব কোনো উইকেট পাননি। ইনিংসের শুরুর ওভার থেকে একটানা সাত ওভার বল করেছেন সাকিব। মাশরাফি ১০ ওভারে ৬৮ রান দিয়ে পান একটি উইকেট। মোস্তাফিজ ৯ ওভারে ৭৫ রান দিয়ে তুলে নেন একটি উইকেট। মেহেদি হাসান মিরাজ ১০ ওভারে ৬৭ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ২ ওভারে ২৪ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন। সাইফউদ্দিন ৯ ওভারে ৭৮ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট।

চলমান বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের মতো বাংলাদেশেরও যাত্রা শুরু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। আর দু’দলই জিতেছে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে। ইংলিশরা প্রোটিয়াদের বিপক্ষে পেয়েছিল ১০৪ রানে বড় জয়। আর টাইগারদের জয় ছিল ২১ রানের। দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য হারের মুখ দেখেছে দু’দলই। কিউইদের বিপক্ষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে টাইগাররা হেরেছে মাত্র ২ উইকেটে আর পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরেছে ইংলিশরা। দ্বিতীয় ম্যাচে ইংলিশদের হোঁচট পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪ রানে হেরে।

টস

বাংলাদেশ একাদশ: মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান (সহ-অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, সৌম্য সরকার, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এবং মোহাম্মদ মিঠুন।

ইংল্যান্ড একাদশ: ইয়ন মরগান (অধিনায়ক), জনি বেয়ারস্টো, জস বাটলার, জোফরা আর্চার, লিয়াম প্লাংকেট, আদিল রশিদ, জো রুট, জেসন রয়, বেন স্টোকস, ক্রিস ওকস এবং মার্ক উড।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here