রমেশ-বিনয়-শেফালী চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে একুশে পদক প্রাপ্ত উপমহাদেশের কিংবদন্তি বাদন শিল্পী বিনয় বাঁশি জলদাস’র ১০৯তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গুণীজন সংবর্ধনা ও রম্য লেখক সত্যব্রত বড়ুয়ার ভাস্কর্য উন্মোচন করা হয়েছে।

রবিবার (২৭ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি হলে উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য সমাজ বিজ্ঞানী ড. মনজুর-উল-আমিন চৌধুরী। রমেশ-বিনয়-শেফালী চর্চা কেন্দ্রের আহ্বায়ক ভাস্কর ডি কে দাশ মামুনের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাক্তন জেলা গর্ভনর ও কনফিডেন্স সিমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়া। প্রধান আলোচক ছিলেন একুশে পদক প্রাপ্ত সাহিত্যিক প্রফেসর ড. হরিশংকর জলদাস। বিশেষ অতিথি’র বক্তব্য রাখেন গৃহায়ন লিমিটেডের এমডি প্রকৌশলী পুলক কান্তি বড়ুয়া, লোকসংগীত গবেষক ও সাংবাদিক নাসির উদ্দিন হায়দার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কবি ও সংগঠক স্বপন কুমার বড়ুয়া।

বক্তরা বলেন বিনয় বাঁশির বাদন শিল্প বাঙালী হৃদয়ের চিরকালের প্রাণস্পন্দন। তাঁর সৃষ্টিকর্ম বিশ্ব দরববারে বাঙালী সংস্কৃতির বিশেষ এক আবেদন, আলোড়ন তুলেছে। লোক শিল্পের অনন্য ও অবিচ্ছেদ্য অনুসঙ্গ ঢোল বাদন আবহমান বাঙলার নিটোল ও পরিপাটি শিল্প সত্তার পরিচায়ক। দেহমনে শিহরণ জাগানো বাঙালীর সংস্কৃতিতে এ শিল্পের বহিরাঙ্গের বিষয় নয়। অথচ সেই শিল্পের যাদুকরী ¯্রষ্টা বিনয় বাঁশি, যিনি জীবন ভর মনে প্রাণে এ শিল্পের ধারক হয়ে দেশে ও বিদেশে বাদ্যের সাথে নৃত্যে নান্দনিক দেহ বল্লরীর অনুপম শিল্প মাধুর্য পরিবেশনে লাল সবুজের সোনার বাংলাকে তুলে ধরেছেন তার পরিবার পরিজন সহ বাস্তুভিঠে আজ ছন্দারিয়ার প্রবল ¯্রােতের গ্রাসে নিঃস্ব প্রায়। বক্তাগণ এ বিপন্ন শিল্পী পরিবারকে রক্ষার পাশাপাশি দক্ষিণ চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ বিনয় বাঁশির ওভার লাইফ সাইজ শিল্প সৌকর্য প্রতিকৃতি ভাস্কর্যটি রক্ষার সরকারী প্রণোদনা দাবী করেন।

কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক, অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়কারী সাংবাদিক মো. তাজুল ইসলাম রাজু সঞ্চালনায় ২য় পর্বে স্ব স্ব ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় ছয় গুণিকে সম্মাননা স্মারকে অভিষিক্ত করা হয়। যুদ্ধকালীন কোম্পানী কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা এম.এ. বশর (মুক্তিযুদ্ধে অবদান), চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউনুছ (প্রশাসনিক কর্মদক্ষতায় অনন্য অবদান), জাতীয় পর্যায়ে টানা তিনবার শ্রেষ্ঠ রোভার শিক্ষক হিসেবে রাষ্ট্রপতি এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন (স্কাউটিং এ অনন্য অবদান), পুঁথি গবেষক মুহাম্মদ ইসহাক (লোক শিল্প/ সাহিত্য সংগ্রহে অবদান), সমাজ অনুভাবক ও জনপ্রতিনিধি মোহাম্মদ বেলাল হোসেনকে (স্থানীয় সরকারের পক্ষে অনন্য অবদান) সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ঢোলবাদন, বিকেল ৫টায় সন্দীপনা সংগীত দলের পরিবেশনায় বাংলার লোক গানের আসর, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় “বিনয় আলোকে লোকায়ত সংস্কৃতির জাগরণ ” শীর্ষক আলোচনা সভা, গুণীজন সংবর্ধনা, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় অতিথিবৃন্দ ভাস্কর ডি কে দাশ মামুন নির্মিত রম্য লেখক সত্যব্রত বড়ুয়ার আবক্ষ প্রতিকৃতি উম্মোচন এবং সাংবাদিক মো. তাজুল ইসলাম রাজু নির্মিত বোয়ালখালীর ইতিহাস ঐতিহ্য ভিত্তিক তথ্যচিত্র “কালের স্বাক্ষী বোয়ালখালী” প্রদর্শন করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here