বছর ষাটেক আগে ১১৩১টি চিঠি আমেরিকার প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের হাতে তুলে দেওয়ার সময়ে ভদ্রমহিলা একটাই শর্ত দিয়েছিলেন। ‘তাঁদের’ দু’জনের মধ্যে যিনি পরে মারা যাবেন, তাঁরও মৃত্যুর পঞ্চাশ বছর বাদে প্রকাশ্যে আনা যাবে চিঠিগুলো।

চিঠিগুলো যিনি লিখেছিলেন, তাঁর মৃত্যু হয় ১৯৬৪ সালে। ১৯৬৯ সালে প্রয়াত হন প্রাপক মহিলা। শর্তমাফিক পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হয়েছে সদ্য। তার পরেই, আগামিকাল ওই অপ্রকাশিত চিঠির সম্ভার ছাত্রছাত্রী ও গবেষকদের জন্য খুলে দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুধু প্রিন্সটন নয়, সারা বিশ্বে ইংরেজি সাহিত্যের পাঠকমাত্রই তা নিয়ে রোমাঞ্চিত। কারণ, ওই ১১৩১টি চিঠি লিখেছিলেন কবি টি এস এলিয়ট! লিখেছিলেন বান্ধবী এমিলি হেল-কে। দু’জনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে গবেষকদের কৌতূহল বরাবরের।

এ বারও তাঁরা আশাবাদী যে, খুঁটিয়ে দেখা হলে চিঠিগুলি এলিয়ট-এমিলির সম্পর্কের পাশাপাশি নোবেলজয়ী কবির সৃষ্টিশীল সত্তার উপরেও নতুন আলো ফেলতে পারে।

প্রিন্সটনে ইংরেজির অধ্যাপক জোশুয়া কোটিন বলছিলেন, ‘‘ক্যাম্পাস উত্তেজিত। ‘দ্য লাভ সং অব জে আলফ্রেড প্রুফ্রক’ এবং ‘দ্য ওয়েস্ট ল্যান্ড’ নিয়ে যারা বিভোর ছিল, তারা এ বার সেগুলোর রচয়িতাকে নিয়ে প্রশ্ন করছে। শুধু এলিয়টের তথাকথিত প্রেমজীবন নয়, তাঁর ধর্মীয় পরিবর্তন, মহিলাদের সম্পর্কে তাঁর ধারণা, একটি বিখ্যাত প্রকাশনা সংস্থায় তাঁর ভূমিকা, ব্রিটিশ সংস্কৃতিতে প্রভাব— কৌতূহল সব কিছু নিয়েই।’’

১৯৩০ থেকে ১৯৫৭, এই ২৭ বছর ধরে এমিলিকে চিঠিগুলি লিখেছিলেন এলিয়ট। শুধু চিঠি নয়, ফোটোগ্রাফ, ক্লিপিং, এলিয়টের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নিজের সংক্ষিপ্ত রচনাও ওই গ্রন্থাগারকে দান করেছিলেন এমিলি। বস্টনের বাসিন্দা এমিলি ছিলেন নাটকের শিক্ষিকা। এলিয়টের সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা ১৯১২ সালে, ম্যাসাচুসেটসের কেমব্রিজে। এলিয়ট তখন হার্ভার্ডে। বন্ধুত্ব আরও ঘনিষ্ঠ হয় ১৯২৭ সালে। এলিয়ট তখন ইংল্যান্ডে চলে এসেছেন।

অক্টোবরে প্রিন্সটনে দেখা গিয়েছিল, পুরনো খামেই সযত্নে রাখা চিঠিগুলো। এমিলির লেখা চিঠিগুলো অবশ্য নেই। এলিয়টের নির্দেশেই সেগুলো নাকি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here