অনলাইন ডেক্স : মাশরাফি-সাকিব-তামিমদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন-অনেক প্রত্যাশার বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হচ্ছে আজ রবিবার। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপের পর থেকেই মাশরাফিরা প্রত্যাশার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাই বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকে সাকিব-তামিমদের নিয়ে বাংলাদেশি সমর্থকদের প্রত্যাশা আকাশচুম্বী! স্বপ্নের এই বিশ্বকাপ গত ৩০ মে শুরু হলেও, বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে আজ থেকে।
রবিবার লন্ডনের কেনিংটন ওভালে বাংলাদেশ স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৩টায় ম্যাচটি শুরু হবে। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টিভি, মাছরাঙা টিভি ও স্টার স্পোর্টস। মূল মঞ্চে মাঠে নামার আগে গতকাল রাতে সুসংবাদ পেয়ে রণ কৌশল সাজানো শুরু করে বাংলাদেশ। বাঁহাতের কব্জির ঠিক ওপরে ব্যথা পাওয়া তামিম ইকবাল আজ খেলবেন তা টিম মিটিংয়ে যাওয়ার আগেই সবাই জেনে যায়। ফিরে আসে স্বস্তি।
রাতে টিম মিটিংয়ে সবাইকে ফ্রি খেলার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। বোর্ড সভাপতি রাতের ডিনারে উপস্থিত থেকে জুগিয়েছেন সাহস। তাতে দলের উদ্যোম আরও বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন অনেকে। বিশ্বকাপের লম্বা সফরের শুরুটা যেভাবেই হোক ভালো করতে চায় বাংলাদেশ। এজন্য প্রোটিয়াদের বিপক্ষে জয়ের প্রত্যাশা নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ‘শুরুটা ভালো করতে পারলে পুরো দলের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে।’ বলেছেন অধিনায়ক মাশরাফি।
তবে শুরুটা এখন পর্যন্ত ভালো হয়নি এশিয়ার তিন দেশ পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের। তিন দলেরই ব্যাটসম্যানরা ছিলেন ফ্লপ। বিশ্বকাপ শুরুর আগে ৩০০-৩৫০ রানের যে জোয়ার উঠেছিল তা এখন অনেকটাই কমে গেছে। রান হচ্ছে মাঝারি মানের। সেগুলো নিয়েই হচ্ছে লড়াই। রান কম হওয়ায় অবাক নন মাশরাফি। তার মতে ব্যাটসম্যানদের বাজে ব্যাটিংয়ের কারণেই রান হয়নি পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের ম্যাচে। পাশাপাশি কন্ডিশনের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট না হওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। ‘মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগছে। আমার ধারনা ৫-৬টা ম্যাচ হওয়ার পর ঠিক হয়ে যাবে। সবাই ৩০০-৪০০ রানের কথা চিন্তা করে আর্লি চার্জ করতে গিয়ে আউট হচ্ছে। চাপ তৈরি হচ্ছে।
সব দলই প্রত্যাশা করছে এখানে সাড়ে তিনশ রান না হলে জিততে পারব না। এই মানসিকতা নিয়ে খেলতে নামছে। পরবর্তী সময় আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসছে। এজন্য আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে শুরুতে উইকেট না দেওয়া।’
মোদ্দাকথা তামিম, সৌম্য যতটুকু পারবে খেলবে। শুরুতে স্কোরবোর্ডে রানের পাহাড় চান না অধিনায়ক। তাদের দুজনের টিকে থাকা দলের প্লাস পয়েন্ট। প্রথম ম্যাচের একাদশ নিশ্চিত। সাইফউদ্দিনের জন্য শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করবে দল। তাকে না পেলে তৃতীয় পেসার হিসেবে খেলবেন রুবেল। আর মাহমুদউল্লাহ বোলিং করতে পারবেন না বলে মোসাদ্দেককে বাড়তি স্পিনার হিসেবে নিতেই হচ্ছে। পাশাপাশি তার ব্যাটিং অনেক বড় পাওয়া। দল নিয়ে মাশরাফি বলেছেন, ‘কম্বিনেশন যেমনই হোক আমরা আমাদের সেরা খেলোয়াড়কে নিয়েই দল দেব। টুর্নামেন্ট অনেক বড়। আশা করি সবাই সুযোগ পাবে, বিশ্বকাপের মঞ্চে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পাবে।’
২০১৫ বিশ্বকাপের পর ওয়ানডে ক্রিকেটে দারুণ লড়াই শুরু করে বাংলাদেশে। মাশরাফির পুরোনো সেটআপের সঙ্গে ২০১৬ সালে যোগ দেন মুস্তাফিজুর রহমান। যার আর্বিভাবে পাল্টে যায় বাংলাদেশের পেস বোলিং আক্রমণ। পাশাপাশি ওয়ানডে ক্রিকেটে ভয়ডরহীন খেলার ব্র্যান্ডও তৈরি করেছে বাংলাদেশ। শেষ চার বছরে অনেক পাল্টেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। এবার আরেকটি বিশ্বমঞ্চে সেটি প্রমাণের পালা। সেই লড়াইয়ের শুরুটা হচ্ছে আজ। রঙিন মঞ্চ রাঙানোর লড়াই শুরু হচ্ছে।