বিভাগীয় সম্পাদক

বহদ্দারহাট-কালুরঘাট প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কটি দু লাইনের। হলেও দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ রাখা হয়েছে একপাশ। এভাবে বন্ধ থাকতে থাকতে বেদখল হয়ে পড়েছে পুরো সড়কটি।

এই পাঁচ কিলোমিটার ঝির্ণশীর্ণ সড়কটির কোথাও ট্রাক টার্মিনাল, কোথাও বাজার, কোথাও ইট বালুর ব্যবসায়ীরা দখলে নিয়ে দেদারসে করছে ব্যবসা। ভাসমান ব্যবসায়ীরাও দখলে নিয় বসিয়েছে কাঁচা বাজার। দেখে মনে হবে এটি সড়কই নয় এটা একটি পরিত্যাক্ত জায়গা।

গত তিন বছর ধরে এমন অবস্থায় পড়ে আছে বহদ্দারহাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত সড়কটি। এতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ-ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।

ধূলা ও যানজট মাড়িয়ে প্রতিদিন সড়কটি ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষ। চট্টগ্রাম জুড়ে উন্নয়নের দৃশ্যপটেও সড়কটি যেন অনুন্নত শহরের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা যায়, মদুনাঘাট প্রকল্পের পাইপলাইন স্থাপনের জন্য ২০১৬ সালের শুরুতে সড়কটির একপাশ বন্ধ করে দেয় ওয়াসা। দীর্ঘদিন ধরে পাইপলাইনের কাজ চলে। এরপর কাজ শেষ করে ওয়াসা সড়কটি চসিকের কাছে বুঝিয়ে দেয়।

এরমধ্যে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের র‌্যাম নির্মাণের কারণেও টার্মিনাল থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত সড়কের একপাশ বন্ধ করে দেয়া হয়। যে কারণে পুরো পাঁচ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘ তিন বছর ধরে একপাশ অচল হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের র‌্যামের নিচের অংশে সড়কটির একপাশ সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী। খানাখন্দকে ভরপুর সড়কটি দিয়েই প্রয়োজনে গাড়ি চলে। র‌্যাম নামার অংশে চান্দগাঁও আবাসিক থেকে গাড়ি বের হওয়ায় তীব্র যানজট লেগে থাকে।

টার্মিনাল থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত অচল সড়কটির অস্থায়ী ট্রাক ও বাস টার্মিনালে পরিণত হয়েছে। ওয়েস্টার্ন পার্ক কমিউনিটি সেন্টারের অপরপাশে অচল ও সচল দুই ধরনের গাড়ির পার্কিং যেন সড়কটি। সারিবদ্ধ ট্রাক ও বাসের লাইন।

সিএন্ডবি বিএফআইডিসি এলাকায় সেখানে গাড়ির জট লেগেই আছে। সিএন্ডবি থেকে বাহির সিগন্যাল এলাকার কিছু অংশে সড়কে বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে বিশালাকার বালির স্তুপ।

সকাল ও সন্ধ্যার পর এ সড়কটিতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ও দুদর্শার চিত্র ফুটে ওঠে। মুখে মাস্ক ও হাত দিয়ে সড়ক পাড়ি দিচ্ছে পথচারীরা।

বহদ্দারহাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত সড়কের এমন অবস্থার পর বিকালে আরো কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েন সড়ক ব্যবহারকারীরা।

কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে কাজীরহাট, কামাল বাজার হয়ে মৌলভীবাজার পর্যন্ত পুরো সড়কের একপাশ ভাসমান দোকান ও বাজার বসার কারণে যান চলাচল ব্যাহত হয়।

ওয়াসা ও গ্যাস লাইন স্থাপনের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ সড়কটির একপাশ দীর্ঘ তিন বছরেও সচল না হওয়ায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ হচ্ছে বলে দাবি করছেন সড়ক ব্যবহারকারীরা।

তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটির উভয়পাশে যান চলাচলের উপযোগী করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েও কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশ জনসাধারণ।

চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফয়জুলুল্লাহ বলেন, ‘এ সড়কের কাজ করবে সিটি কর্পোরেশন। গ্যাস পাইপ লাইন ও বিদ্যুৎ লাইনের কিছু কাজ হচ্ছে। আমাদের কাজ শেষে অনেক আগেই সড়কটি সিটি কর্পোরেশনকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।’

কামালবাজারের বাসিন্দা প্রফেসর আবদুর রহিম বলেন, ১৫মিনিটের যাতায়াতের পথ। এখন সময় লাগে দেড় ঘন্টা। দু লাইনের এই সড়কটি একপাশ বন্ধ থাকায় প্রতিনিয়ত হচ্ছে দূর্ঘটনা। শিক্ষার্থীরা সময় মতো স্কুল কলেজে যেতে পারছে না।

কর্মজীবি মানুষেরাও তাদের কর্মক্ষেত্রে যেতে বিড়ম্বনায় স্বীকার হচ্ছে। তিনি বলেন, চার লাইনের এই সড়কটির দু লাইন বন্ধ রেখে কর্তৃপক্ষ কি আনন্দ পাচ্ছে জানিনা। তবে জনগণের বিডম্বনা সহ্য করার মতো নয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here