অনলাইন ডেস্ক : গত ১৩০ বছর ধরে প্রচলিত ওজনের একক কিলোগ্রামের সংজ্ঞা বদল আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে। গত নভেম্বর মাসে ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে ওজন এবং মাপ নির্ণয় সংক্রান্ত এক সম্মেলনের মাধ্যমে এ পরিবর্তন আনা হয়েছিল। নিত্য প্রয়োজনীয় বহু পণ্য কেনা-বেচার হয় কিলোগ্রামের ভিত্তিতে।
কিলোগ্রামের সংজ্ঞা বদল হলে কেনা-বেচায় এর কোন প্রভাব পড়বে কিনা সে প্রশ্ন অনেকে তুলতে পারেন। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট-এর মেট্রোলজি বিভাগের পরিচালক আনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্রের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে কিলোগ্রামের সংজ্ঞা বদল করা হচ্ছে।
তবে ক্রয়-বিক্রয়ে মাপের ক্ষেত্রে এর কোন প্রভাব পড়বে না বলে উল্লেখ করেন মি: হোসেন। তিনি বলেন, “১০০০ গ্রাম-এ এক কেজি- এটা ঠিক থাকবে। এখানে কোন হেরফের হবেনা। কোথাও কোন প্রভাব পড়বে না।”
তাহলে সংজ্ঞায় কেন পরিবর্তন আনা হলো?
পদার্থবিদরা বলছেন, ১৩০ বছরের পুরনো একটি বিষয়ের উপর আর নির্ভর করা যায়না। কিলোগ্রামকে নতুনভাবে ব্যবহার করার জন্যই এই পরিবর্তন। এর মাধ্যমে যাতে অতি ক্ষুদ্র এবং বৃহৎ বিষয়গুলোকে সুক্ষ্ম ও সঠিকভাবে পরিমাপ করা যায় সেজন্য সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
ফ্রান্সের এক প্লাটিনাম-ইরিডিয়াম ধাতুর মাধ্যমে তৈরি বাটখারার ভিত্তিতে ১৮৮৯ সাল থেকে কিলোগ্রামের পরিমাপ করা হতো। ‘ল্য গ্রঁদ কে’ নামের প্ল্যাটিনাম-ইরিডিয়ামের তৈরি এই সিলিন্ডারটি ফ্রান্সে রক্ষিত আছে। এর কিছু হুবহু নমুনা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রয়েছে।
পদার্থবিদরা বলছেন, প্লাটিনামের ওজন সবসময় এক থাকে না, নানা কারণে একটি ওজন পরিবর্তিত হয়। যদিও এই পরিবর্তন খুবই সুক্ষ্ম। সাধারণ মানুষের জীবনে এর কোন কোন প্রভাব না পড়লেও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় কিছু সমস্যা তৈরি করছিল এটি। ফ্রান্সে রাখা ‘লা গ্রঁদ কে’ এবং পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এর নমুনাগুলোর সাথে কিছু তারতম্য তৈরি হয়েছে।
যদিও বিষয়টি খুবই সুক্ষ্ম, তবুও বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। কিলোগ্রামের নতুন সংজ্ঞা বৈদ্যুতিক প্রবাহের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হবে।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট-এর মেট্রোলজি বিভাগের পরিচালক আনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, কিলোগ্রামের সংজ্ঞায় যে পরিবর্তন এসেছে সেটি পাঠ্য বইতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পাঠ্যপুস্তক বোর্ড সহ বিভিন্ন শিক্ষা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়া হয়েছে। বিবিসি