বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে বেরিয়ে ঢেউয়ের তোড়ে বাংলাদেশি ট্রলার থেকে সাগরে ছিটকে পড়ে যায় এক বাংলাদেশি কিশোর জেলে। তারপর তিন দিন ধরে সাগরেই ভাসছিল সে। অবশেষে ভারত-বাংলাদেশ সাগর সীমানা থেকে বাংলাদেশি মৎস্যজীবী ইমরান খানকে উদ্ধার করে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের একটি ট্রলার।
ইমরান বাংলাদেশের পাথরঘাটা থানা এলাকার বরগুনার চরের ঘোরানি গ্রামের বাসিন্দা। শনিবার (৩১ আগস্ট) সকালে উদ্ধারকারী ভারতীয় ট্রলার রায়দিঘি ঘাটে ভেড়ার পর ইমরানকে রায়দিঘি থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। পরে ইমরানকে রায়দিঘি গ্রামীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ইমরান জানান, সপ্তাহখানেক আগে ১২ জন মৎস্যজীবীর সঙ্গে সে একটি ট্রলারে চেপে সাগরে মাছ ধরতে বেরিয়েছিল। দুর্ঘটনার সময় ট্রলারের উপরেই ছিল। সাগর থেকে পানি তোলার জন্য বালতি ফেলার সময় ঢেউয়ের তোড়ে ভারসাম্য হারিয়ে উত্তাল সাগরে পড়ে যায় সে। লাইফ জ্যাকেট না থাকায় পরনের লুঙ্গি খুলে হাওয়া ঢুকিয়ে ফুলিয়ে ধরে ভাসতে থাকে। এভাবে তিন দিন ভেসে থাকার পর সে ভারতীয় ট্রলারের চোখে পড়ে।
উদ্ধারকারী ট্রলারের মাঝি মনোরঞ্জন দাস জানান, রবিবার রায়দিঘি থেকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে বেরিয়েছিলাম। সাগরে আমাদের মৎস্যজীবীদের নজরে আসে কেউ একজন ভাসছে। কাছে গিয়ে দেখি এক কিশোর পরনের লুঙ্গি ফুলিয়ে আঁকড়ে ধরে ভাসছে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে ট্রলারে তুলে আনি। নতুন পোশাক দিয়ে খাবার দেয়া হয়। একটু সুস্থ হলে সে তার নাম-ঠিকানা জানায়। কিন্তু পরে সে অসুস্থ বোধ করায় আমরা তড়িঘড়ি করে ঘাটে ফিরে আসি।
এরই মধ্যে রায়দিঘি ফিশারম্যান ওনার্স ওয়েলফেয়ারি এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মৎস্যজীবী সংগঠন সূত্রে খবর পাওয়া গেছে, মৎস্যজীবী উদ্ধারের বিষয়টি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয়েছে।
সুস্থ হওয়ার পর আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওই মৎস্যজীবীকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান ডায়মন্ড হারবারের মহকুমা শাসক সুকান্ত সাহা।