নিজস্ব প্রতিবেদক : তথ্যমন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘যুদ্ধ বিপর্যস্ত এ দেশ যখন সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছিলো তখনই যারা এ দেশ চায়নি তারা স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে স্ব-পরিবারে হত্যা করেছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে, স্বাধীনতার ১০-১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর মালেশিয়ার চেয়েও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতো।’
শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ চত্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে যারা সরাসরি যুক্ত ছিলেন তাদের বিচার করা হয়েছে। তবে এ হত্যাকা-ের নীল নকশার পটভূমি রচয়িতাদের বিচার করা যায়নি। ন্যায় বিচার ও ইতিহাসের স্বার্থে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা এখন সময়ের দাবি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের যারা কুশীলব তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে একটি কমিশন গঠন করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনার বাংলা গড়ার। তিনি সোনার বাংলা রচনা করে যেতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল দেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি ঘোষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে পরাজিত শক্তি নানাভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু হোক খালেদা জিয়া সেটা চাননি। খালেদা জিয়া বলেছিলেন, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানানো হচ্ছে। যখন তারা দেখলো সেতু নির্মাণ হয়ে যাচ্ছে, তখনই লণ্ডন থেকে পোস্ট দিয়ে গুজব ছড়ানো হয় পদ্মা সেতুর জন্য ১লক্ষ শিশুকে বলি দিতে হবে। এ গুজব ছড়ানোর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এছাড়া দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ নিয়ে বেসিনে হারপিক ও ব্লীচিং পাওডার ঢালার গুজব ছড়িয়ে পরিবেশের ক্ষতি করতে চেয়েছে বিএনপি। ডেঙ্গু মোকাবেলায় সরকার ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে এতে আতঙ্কিত না হয়ে বাড়ির আশপাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।
কালুরঘাটে সড়ক কাম রেল সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, গত সপ্তাহে সচিব কেবিনেটের উদ্যোগে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উন্নয়ন সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কালুরঘাটে সেতু নির্মাণে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পরবর্তী বৈঠকে আবারো বিষয়টি তোলা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কালুরঘাট সেতু নির্মাণ নিয়ে যে জটিলতা দেখা দিয়েছে তা নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সভায় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ প্রধান আলোচকের বক্তব্যে কালুরঘাট সেতুর প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, আধা জামায়াত আধা বিএনপি’র ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে । প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কারো অনশন আন্দোলনকে ভয় করেন না। প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি দেশের স্বার্থে কালুরঘাটে সেতু নির্মাণ করবেন। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের এমপি-মন্ত্রীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।
বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোকারমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি’র বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী।
এতে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুল আলম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বোরহান উদ্দিন মো.এমরান, মুক্তিযোদ্ধা রাজেন্দ্র প্রসাদ চৌধুরী, আ.হ.ম নাসির উদ্দিন, আ.লীগ নেতা রেজাউল করিম বাবুল, রিদুয়ানুল হক টিপু, জহুরুল ইসলাম জহুর, শাহজাদা মিজানুর রহমান, শেখ শহিদুল আলম, সেকান্দর আলম বাবর, মো. মোশাররফ হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান এসএম জসিম, কাজল দে, যুবলীগ নেতা আবদুল মান্নান, ছাত্রলীগ নেতা বোরহান উদ্দিন ও ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মোনাফ মহিন।
সভায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে মফস্বল সাংবাদিকদের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে বোয়ালখালী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. শাহীনুর কিবরিয়া মাসুদ শুভেচ্ছা ক্রেস্ট ও মানপত্র তুলে দেন।