অনলাইন ডেক্স: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় রীতিমতো তারকা বনে গেছেন প্রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো দেখতে আরুক মুন্সী। তিনি যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই মানুষ ভিড় করছেন তাকে এক পলক দেখার জন্য। তাকে জড়িয়ে অনেকেই ফ্রেম বন্ধী হচ্ছেন। কেউ কেউ আবার তাকে বাসায় দাওয়াত দিচ্ছেন। অনেকেই তার খোঁজ খবর নিচ্ছেন, দিচ্ছেন উপহার। ইতিমধ্যে তিনি সরকারের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তারা তার সাথে কুশল বিনিময় করেছেন ও খোঁজ-খবরও নিয়েছেন।

শনিবার দুপুরে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন আরুক মুন্সী। পরে টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ আহম্মদ হোসেন মির্জাকে সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর মাজারে আসা দর্শনার্থীরা তাকে কাছে পেয়ে এক নজর দেখার জন্য ভিড় করেন। অনেকেই তাকে নিয়ে সেলফি তোলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার আগেও তিনি বঙ্গবন্ধুর মাজারে এসেছেন এবং শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বলে জানান আরুক মুন্সী।

টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ আহম্মদ হোসেন মির্জা বলেছেন, আরুক মুন্সীকে দেখতে অনেকটা বঙ্গবন্ধুর মতো। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থাকবেন আরুক মুন্সি এমনটি প্রত্যাশা করেন তিনি।

আরুক মুন্সী বলেন, অনেকে মনে করেন আমাকে হয়তো অনেকটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো দেখা যায়। কিন্তু আমার কাছে কখনো মনে হয় না আমাকে বঙ্গবন্ধুর মতো দেখা যায়। তিনি একজন বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, যত দিন তিনি বেঁচে থাকবেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করে যাবেন বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, আমি একজন দুই পয়সার সামান্য কর্মচারী, অশিক্ষিত মানুষ। অনেকে তার চেহারায় বঙ্গবন্ধুর মিল পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকে যারা ভালোবাসেন তারা অনেকে আমাকে দেখে দোয়া করেন, এটাই আমার কাছে বড় পাওয়া।

তিনি মনে করেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় আর কোন বঙ্গবন্ধু জন্মাবে না। তাই নিজেকে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক মনে করেন আরুক মুন্সী। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে চলতে চান। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজের অবস্থান থেকে কাজ করতে চান তিনি।

আরুক মুন্সী স্বপ্ন দেখেন-বিশ্বাস করেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে।

অনেকেই আরুক মুন্সীকে বঙ্গবন্ধুর মতো দেখতে মনে করলেও এটা নিয়ে অনেকের মধ্যে ভিন্ন মত রয়েছে। তারা বলেছেন, পোশাকপরিচ্ছদ ও চুলের স্টাইলে বঙ্গবন্ধুর বেশ ধরার চেষ্টা করেছেন তিনি। আসলে বঙ্গবন্ধুর সাথে আরুক মুন্সীর চেহারা বা আকার আকৃতিতে কোন মিল নেই। তাদের ধারণা কোন বাড়তি সুযোগ-সুবিধার জন্য তিনি দীর্ঘ বছর পরে বঙ্গবন্ধুর বেশ ধারণ করেছেন।

আরুক মুন্সী ১৯৬৯ সালের ৬ জুলাই গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত কামারোল গ্রামের এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ৩ ছেলে মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে বসবাস করেন ঢাকার হাতিরপুল পাওয়ার হাউস এলাকায়। ১৯৯৩ সাল থেকে গাড়ি চালক পদে চাকরি করেন ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে(ডিপিডিসি)। ৮ম শ্রেণি পাশ বলে চাকরিতে পদোন্নতি পাননি তিনি। তবে, বঙ্গবন্ধুর চেহারার সঙ্গে তার চেহারার কিছুটা মিল থাকায় তিনি যেখানেই যান, সবখানে মানুষের ভালোবাসা পান। বঙ্গবন্ধুর ভক্তদের আগ্রহ থাকে তাকে ঘিরে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাকে দেখতে ছুটে আসেন বঙ্গবন্ধু ভক্ত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here