সামান্য আলোর দিকে তাকাতে পারছে না। চক্ষু বিশেষজ্ঞ জানালেন, প্রায়দিনই এমন রোগী ভিড় করছেন ক্লিনিক। যাঁদের সস্তার রোদ চশমা অমূল্য চোখটারই বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। সকলেরই ঝকঝকে দৃষ্টি ছিল। কিন্তু ফুটপাথের রোদচশমাই বিপদ ডেকে এনেছে। সে বিপদ কতটা ভয়ের? ‘চল্লিশেই চোখে ছানি পড়ে গিয়েছে। এর চেয়ে ভয়ের আর কী হতে পারে।’
দীর্ঘদিন ধরে সস্তার চশমা পড়লে হতে পারে ‘আইলিড’ ক্যানসারও। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শুধু বড়রা নয়, ছোটদের মন ভোলাতে রাস্তা থেকে খেলনা চশমা কিনে দেন অভিভাবকরা। পরবর্তীকালে দেখা যায় এদের চোখেই সমস্যা শুরু হয়েছে।
বৈশাখে গনগনে রোদে পুড়ছে শহর। চোখ ঢাকতে রোদ চশমা কেনার হিড়ক প্রায় সবখানে। ফুটপাথ জুড়ে সাজানো সব সানগ্লাসের দোকান। চল্লিশ টাকা পিস! চিকিৎসকরা বলছেন সাময়িক আরাম আর ফ্যাশন করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনছে এমন গগস প্রিয় লোক।
গবেষণায় জানা গেছে, সস্তার এই চশমায় তৃতীয় শ্রেণির প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি আটকানোর কোনও ক্ষমতাই এই প্লাস্টিকের। উল্টে চোখের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর।
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি চোখের সর্বনাশের কারণ। সাধারণত রোদে বেরলে আমরা চোখটা একটু কুঁচকে থাকি। চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে বলে কনস্ট্রিকটিং। এতে কিছুটা হলেও অতিবেগুনি রশ্মি চোখে কম প্রবেশ করে। কিন্তু সস্তার চশমা পরলে চোখে সরাসরি রোদ লাগে না ফলে বড় বড় চোখেই তাকাই। সেই সুযোগে প্লাস্টিকের চশমা ভেদ করে অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি ঢুকে পড়ে চোখের মধ্যে।
টানা কয়েক বছর সস্তার এই চশমা পরলেই চোখে বাসা বাঁধে অসুখ। অতিবেগুনি রশ্মি দীর্ঘদিন চোখে পড়তে থাকলে চোখের ছানি হতে পারে। চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা বা ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হতে পারে, দেখা দিতে পারে চোখের ভেতরের বিশেষ ক্যানসার।
আরআইও-র চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ বলছেন, ফুটপাথের সানগ্লাসের পাওয়ারের কোনও ঠিক থাকে না। ভ্রান্ত পাওয়ারের জন্য এই ধরনের চশমা পরে মাথাব্যথা হতে পারে ক্রেতার। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একমাত্র পলিকার্বোনেট লেন্সই অতিবেগুনি রশ্মি আটকাতে পারে। অপটোমেট্রিস্টের কাছে গিয়ে সানগ্লাস পরীক্ষা করিয়ে নিন। নয়তো বাজার চলতি ইউভি লাইট কিনেও সানগ্লাসের উপর পরীক্ষা করা যেতে পারে।