ফিলিপাইন সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মাতমো’ই ‘বুলবুল’ হয়ে এক হাজার ৮০০ কিলোমিটার দূরবর্তী ভারতের আন্দামান সাগরে (বঙ্গোপসাগরের অংশ) এসে পুনরুজ্জীবিত হয়েছে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের বরাতে এমন তথ্যই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত ২৪ অক্টোবর ফিলিপাইন সাগরে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে মাতমো। যার ফলে ভারী বর্ষণ ও বন্যা সৃষ্টি হয় ফিলিপাইনসহ এর আশপাশের এলাকায়। পরে গত ৩০ অক্টোবর শক্তি সঞ্চয় করে মাতমো চলে যায় দক্ষিণ চীন সাগরে।
শক্তি সঞ্চয় করে ধীরে ধীরে পশ্চিমের দিকে এগোতে থাকে ঘূর্ণিঝড় মাতমো। এরপর গত ৩১ অক্টোবর এটি আঘাত হানে ভিয়েতনাম উপকূলে। সেসময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১২ কিলোমিটার। আর বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ২০০ মিলিমিটার।
এরপর গত ৬ নভেম্বর আন্দামান সাগরে এসে পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড় মাতমো। এসময় ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর এটির নাম দেয় ‘বুলবুল’। বর্তমানে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে। এটি রূপ নিয়েছে ‘ভেরি হেভি সাইক্লোনিক স্টর্ম’ হিসেবে (ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতার মাত্রায় সাত ক্যাটাগরির মধ্যে পঞ্চম)।
ভয়াবহ রূপ ধারণ করে এটি ধেয়ে আসছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের দিকে। এজন্য পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে জারি করা হয়েছে অরেঞ্জ অ্যালার্ট (প্রাকৃতিক দুর্যোগকালের তিনটি সতর্কতার মধ্যে দ্বিতীয়)। আর বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গ ও আশপাশের এলাকায় ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে সতর্কতা দিয়ে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে এটি কলকাতা থেকে ৬৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। আগামী ১২ ঘণ্টায় এটির সম্ভাব্য গতিপথ উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে হতে পারে এবং এগিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে।
এদিকে শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল বা দুপুর নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশি আবহাওয়া অধিদপ্তর।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতি সত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।