জুমার দিনে আমাদের জন্য কিছু করণীয়:
সহিহ ইবনে খোজাইমাহ, মুসনাদে আহমদ এবং অন্যান্য সুনান হাদিসগ্রন্থের আলোকে পবিত্র জুমার দিনে এমন কিছু নেক আমল রয়েছে যেগুলোর উপর আমল করলে প্রতি কদমে এক বৎসরের নফল রোজা রাখার এবং এক বৎসরের নফল নামাজ পড়ার সওয়াব পাওয়া যাবে। আর এটি আল্লাহ তায়ালার জন্য খুবই সহজ।
.
হাদিসটি হযরত আওস ইবনে আওস (রা) হতে বর্ণিত হয়েছে। ইমাম ইবনে খোজাইমাহ (রহ) বলেছেন হাদিসটি সহিহ। হাদিসের মূল ইবারত :
.
. عن ﺃﻭﺱ ﺑﻦ ﺃﻭﺱ ﻗﺎﻝ: ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ : ﻣﻦ ﻏﺴﻞ ﻭﺍﻏﺘﺴﻞ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ، ﻭﺑﻜﺮ ﻭﺍﺑﺘﻜﺮ، ﻭﺩﻧﺎ ﻣﻦ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﻓﺄﻧﺼﺖ، ﻛﺎﻥ ﻟﻪ ﺑﻜﻞ ﺧﻄﻮﺓ ﻳﺨﻄﻮﻫﺎ ﺻﻴﺎﻡ ﺳﻨﺔ، ﻭﻗﻴﺎﻣﻬﺎ، ﻭﺫﻟﻚ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﺴﻴﺮ . ﺃﺣﻤﺪ ﻭﺃﺻﺤﺎﺏ ﺍﻟﺴﻨﻦ ﻭﺻﺤﺤﻪ ﺍﺑﻦ ﺧﺰﻳﻤﺔ
.
হাদিসের সার-কথা হল,
.
১। জুমাবার পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ সেরে গোসল করা।
.
২। তাড়াতাড়ি মসজিদে যাওয়া। (সূরা জুমা)।
.
৩। অহেতুক কথা-বার্তা কিংবা অন্য কিছু না করে চুপচাপ বসে পড়া।
.
৪। ইমামের কাছাকাছি বসার চেষ্টা করা।
.
৫। মসজিদে পায়ে হেঁটে যাওয়া।
.
৬। আত্ত্যাহিয়্যাতুর সুরতে বসে মনোযোগ সহকারে খুতবা শুনা।
.
♪ বিশিষ্ট সাহাবী হযরত সালমান (রা) হতে বর্ণিত, রাসূলেপাক (সা) ইরশাদ করেছেন,
.
عن ﺳﻠﻤﺎﻥ ﻗﺎﻝ: ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ : } ﻻ ﻳﻐﺘﺴﻞ ﺭﺟﻞ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ، ﻭﻳﺘﻄﻬﺮ ﻣﺎ ﺍﺳﺘﻄﺎﻉ ﻣﻦ ﻃﻬﺮ، ﻭﻳﺪﻫﻦ ﻣﻦ ﺩﻫﻨﻪ، ﺃﻭ ﻳﻤﺲ ﻣﻦ ﻃﻴﺐ ﺑﻴﺘﻪ، ﺛﻢ ﻳﺨﺮﺝ ﻓﻼ ﻳﻔﺮﻕ ﺑﻴﻦ ﺍﺛﻨﻴﻦ، ﺛﻢ ﻳﺼﻠﻲ ﻣﺎ ﻛﺘﺐ ﻟﻪ، ﺛﻢ ﻳﻨﺼﺖ ﺇﺫﺍ ﺗﻜﻠﻢ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺇﻻ ﻏﻔﺮ ﻟﻪ ﻣﺎ ﺑﻴﻨﻪ ﻭﺑﻴﻦ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﺍﻷﺧﺮﻯ.
.
অর্থাৎ বিশিষ্ট সাহাবী হযরত সালমান (রা) হতে বর্ণিত, রাসূলেপাক (সা) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি জুমাবার গোসল করবে, সাধ্যমত পবিত্রতা অর্জন করবে, তেল ব্যবহার করবে এবং খোশবু ব্যবহার করবে তারপর বাড়ি থেকে মসজিদের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যাবে। কিন্তু (মসজিদে অবস্থানরত) দু’জন মুসল্লির মাঝে কোনো পার্থক্য করবেনা অর্থাৎ তাদের ডিঙ্গিয়ে সামনে যাবেনা। অতপর সে ফরজ সালাত আদায় করবে। আর ইমাম সাহেব যখন (দ্বীনি) কথাবার্তা বলতে লাগবে তখন সে চুপ থাকবে, তাহলে আল্লাহ তায়ালা পরবর্তী জুমা পর্যন্ত তাকে মাফ করে দিবেন। (সহিহ বুখারি শরীফ)।
.
জুম’আর দিনের আরো কয়েকটি আমল নিম্নরূপ :
১-
পবিত্র কুরআন থেকে সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করা।
২-
বেশিবেশি বিশুদ্ধ সনদে প্রমাণিত দুরুদ শরীফ পড়া।
৩-
শুক্রবার বাদ আসর নামাযের জায়গায় বসে আশি (৮০) বার এ দুরুদ শরীফ পড়া।
যেমন : ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺻﻞ ﻋﻠﻲ ﻣﺤﻤﺪ ﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺍﻻﻣﻲ ﻭﻋﻠﻲ ﺍﻟﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺗﺴﻠﻴﻤﺎ .
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ছাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন্নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলিহি ওয়া সাল্লিম তাসলীমা।
সংক্ষেপে দু চারটি কথা লেখলাম। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফিক দিন, আমীন।
লেখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী।