চট্টগ্রামের পটিয়া থানার চারটি গ্রামে সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গ্রাম চারটি হলো- চরকানাই, হুলাইন, পাচুরিয়া ও হাবিলাসদ্বীপ। পাশাপাশি পানি সংকট নিরসন না হওয়া পর্যন্ত ওই চার গ্রামের ভুগর্ভস্থ থেকে শিল্প-কারখানাগুলোর পানি উত্তোলনেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে এই রায় দেন। এ ছাড়াও রায়ে পানি আইন ২০১৩ এর ১৭ ধারা অনুসারে পটিয়ার ওই চারটি গ্রামকে পানি সংকাটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে কি-না, সে বিষয়েও তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ওই চারটি গ্রামে শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোর দুষণের পরিমান যাচাই করে তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতেও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়।

জানা যায়, পটিয়ায় উল্লেখিত ওই চারটি গ্রামে আটটি শিল্প প্রতিষ্ঠান ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ৩৫০টি টিউবওয়েল বিকল হয়ে গেছে। এতে গ্রামগুলোর প্রায় ৩০ হাজার মানুষ সুপেয় পানির তীব্র সংকটের মধ্যে পড়ে। এসব ঘটনায় পরিবেশ অধিদপ্তর তিনটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করলেও আইন অমান্য করে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো পানি উত্তোলন অব্যাহত রাখে। এ প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করে দায়ের করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। পরে ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। মঙ্গলবার ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মিনহাজুল হক চৌধুরি ও সাঈদ আহমেদ কবীর। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান।

রায়ের পরে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, পানি আইনের অধীনে দেশে কোনো এলাকাকে পানি সংকটাপন্ন এলাকা দাবি জানিয়ে এটিই ছিল প্রথম আইনি কার্যক্রম। যাতে হাইকোর্ট উল্লেখযোগ্য কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। আশা করছি এই রায়ের ধারাবাহিকতায় পটিয়ার চারটি গ্রামের জনস্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here