করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্ব এখন আতঙ্কিত। আমাদের দেশেও প্রতিদিনই বাড়ছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এমন অবস্থায় শিশু সন্তানকে নিয়ে চিন্তা বাড়ছে অভিভাবকদের। ইতোমধ্যে স্কুল, কলেজ বন্ধ। শিশুরা বাসাতেই সময় কাটাচ্ছে। এই সময় শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা উচিত। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া শিশুদের বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে না। বাসায়ও যেন শিশু বিরক্তবোধ না করে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

এই সময় শিশুর শারীরিক যত্নের প্রতি খেয়াল রাখতে ইউনিসেফ কিছু পরামর্শ দিয়েছে-

√অনলাইনে শিশু যেন পড়াশুনা করতে পারে সেই ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষণীয় ভিডিও দেখানো যেতে পারে। হাতে-কলমে করা যায় এমন কিছু ছোট ছোট বিষয় শেখানো যেতে পারে।

√ এই সময় শিশুকে বার বার হাত ধুতে শেখাতে হবে। দিনে কয়েকবার তো বটেই, প্রতিবার খাওয়ার আগে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে শিশুর হাত ধুয়ে দিতে হবে।

√ পরিবারের কারো ঠান্ডাজনিত সমস্যা দেখা দিলে শিশুদের তার কাছ থেকে দূরে রাখুন। আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকেও তাকে দূরে থাকতে হবে। জ্বর, ঠান্ডাজনিত সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

√ হাত না ধুয়ে শিশু যেন মুখ, চোখ ও নাক স্পর্শ না করে তা শেখাতে হবে। এই সময় আপনার সন্তানকে গৃহশিক্ষক, অতিথি, গৃহকর্মী, গাড়ি চালকের সংস্পর্শে  আনবেন না।

√ বাবা-মা বা পরিবারের সদস্যরা বাইরে থেকে এসেই শিশুর কাছে যাবেন না। ভালো করে হাত ধুয়ে, নাক-মুখ পরিষ্কার করে, পোশাক পরিবর্তন করে শিশুর কাছে যেতে হবে। আর পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত পোষাক প্রতিদিন ধুয়ে ফেলতে হবে।

শিশুর জন্য বাড়তি সতর্কতা হিসেবে আরও কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি-

শিশুকে বাইরে নেবেন না
নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া শিশুকে বাইরে বের করা যাবে না। বিশেষ করে জনসমাগম থাকে এমন এলাকা যেমন- পার্ক, হোটেল বা রেস্টুরেন্ট, বাজার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও শপিং মলে শিশুদের নিয়ে যাওয়া যাবে না। এই জায়গাগুলোতে এখন মা-বাবা বা পরিবারের বাকি সদস্যদেরও না যাওয়াই ভালো।

শিশুর মানসিক সুস্থতা
এই সময় বাইরে যেতে না পারায় শিশুরা বিরক্ত হয়ে যেতে পারে। তাই এই সময় তাই তাদের মজার মজার বই পড়তে ও গান শুনতে উৎসাহিত করতে হবে। তাদের সঙ্গে খেলাধুলা করুন। ছবি আঁকতে দিন। রান্না করা বা গাছ পরিচর্যার সময় শিশু সন্তানকে পাশে রাখুন। এটা-সেটা করতে বলুন। এতে তারা যেমন ঘরের কাজ শিখবে, তেমনি আনন্দও পাবে। তাদের সঙ্গে গল্প করুন।

মোবাইল বা ট্যাব দেবেন না
শিশু যখন অনলাইনে কিছু পড়বে, গান শুনবে বা সিনেমা অথবা কার্টুন দেখবে তখন মোবাইল বা ট্যাব দেবেন না। বরং তাদের কম্পিউটার ব্যবহারে উৎসাহিত করুন। তাও একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। খেয়াল রাখুন যেন তারা দীর্ঘক্ষণ ধরে কম্পিউটারের সামনে বসে না থাকে। মনে রাখা ভালো, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির উপর নির্ভরশীলতা বেড়ে গেলে শিশুরা মানসিক ও শারীরিক দু’ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তবে খেয়াল রখুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করতে যেয়ে এই সময় এমন কিছু বলা যাবে না যাতে আপনার সন্তান আতঙ্কিত হয়। বরং তাদের সতর্ক করতে হবে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে শেখাতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here