ইতিহাসের কিংবদন্তী অনেক বীরের জন্ম এই চট্টগ্রামে। যাঁদের বীরত্বগাঁথা অমর কৃতিত্ব ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই হয়েছে। তেমনি একটি জীবন একটি ইতিহাস ও সেই ইতিহাসের স্তম্ভের নাম আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী।

যিনি তাঁর জীবনের ৭৪ বছরের সংগ্রাম মুখর পথচলায় ছিলেন চট্টগ্রাম নগরীর নগর পিতা ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতির দায়িত্বে। এ রাজনৈতিক নেতার জীবন ছিল নানা প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতায় ভরপুর। সব বাধাকে জয় করে যিনি হয়েছিলেন জনমানুষের নন্দিত নেতা। পেয়েছেন চট্টল বীরের খেতাব।

এছাড়াও তাঁর তত্ত্বাবধানে আজ থেকে বিগত ২৬ বৎসর আগে টুঙ্গিপাড়ায় আয়োজন করেছিলেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান। যা আজ জাতীয় ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। বিগত ২৬ বছর ধরে জাতীয় শোক দিবসে ঐতিহ্যবাহী মেজবানের আয়োজন হতো চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে। মাথায় হুলিয়া নিয়ে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায়ও ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে গিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি সাধ্যমতো সাধারণ মানুষের জন্য আপ্যায়নের আয়োজন করতেন প্রয়াত এ নেতা।

বর্ষীয়ান এই রাজনীতিকের জীবনাবসান ঘটেছে। আজ তিনি নেই। তাতে কি হয়েছে? প্রয়াত পিতার ইতিহাস ঐতিহ্যেগুলি পূর্বের ন্যায় অব্যাহত রাখতে হাল ধরেছেন ছেলে। প্রয়াত পিতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরিচালিত সকল সামাজিক কর্মকান্ডগুলোর দায়িত্ব নিয়েছেন সাবেক মেয়রপুত্র, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নওফেলের নেতৃত্বে এবারও ১৫ আগস্ট টুঙ্গিপাড়ার চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহি মেজবান অনুষ্ঠিত হবে। মেজবানে খাওয়ানো হবে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ।

আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারী প্রয়াত নেতার ছোট ছেলে, বোরহানুল হাসান চৌধুরী সালেহীন এই মেজবানের তত্ত্বাবধান করছেন। 

১৫ আগস্ট টুঙ্গিপাড়ার দুই স্থানে মেজবানির আয়োজন থাকছে। তবে শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে হবে মূল আয়োজন। এখানে প্রায় ৩০ হাজার লোকের খাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী বালিডাংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে থাকছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য আয়োজন। সেখানেও প্রায় ১০ হাজার লোকের খাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। ইতোমধ্যে ডেকোরেশনের লোকজন প্যান্ডেল তৈরির কাজ শেষ করেছে। চলছে শেষ পর্যায়ের কাজ।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, এ মেজবানে প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী চট্টগ্রাম মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন ও তার পরিবার ছাড়াও প্রয়াত নেতার বড় ছেলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নেতৃত্বে কয়েকশ নেতাকর্মীর একটি প্রতিনিধিদল টুঙ্গিপাড়া যাবেন।

চট্টগ্রামের এ মেজবানকে ঘিরে টুঙ্গিপাড়ার স্থানীয়দের যেমন আগ্রহ রয়েছে, তেমনি ঢাকা থেকে আগত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদেরও আগ্রহ লক্ষ্য করা যায় প্রতিবছর। বিশেষ করে সরকারিভাবে ১৫ আগস্ট টুঙ্গিপাড়ায় পালিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের মন্ত্রী, তিন বাহিনী প্রধান, বিদেশি কূটনীতিকসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকেন। তারাও এ মেজবানে শরিক হন। ইতোমধ্যে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবানের ভেন্যু পরিদর্শন করে গেছেন।

মেজবান আয়োজনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রয়াত চট্টলবীর আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ তরুণ প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতে আমার প্রয়াত পিতা (আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী) চট্টগ্রাম থেকে টুঙ্গিপাড়ায় এসে মাজার জেয়ারত ও মেজবানের আয়োজন করতেন।

বিষয়টি আমার দল ও আদর্শের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যেটি প্রমাণিত। মূলত টুঙ্গিপাড়া হচ্ছে আবেগের জায়গা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করেই এসব আয়োজন।’

শিক্ষা উপমন্ত্রীর এপিএস নাজিউর রহমান সিকদার বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, ছাত্রলীগের কর্মীরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে উক্ত মেজবানে কাজ করবেন এবং ইতিমধ্যে মেজবানির আনুসাঙ্গিক প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here