সুষম খাদ্যের ছয়টি উপাদানের একটি হচ্ছে পানি। খাদ্য পরিপাক, পরিশোষণ, পরিবহন, বর্জ্য পদার্থ দূরীকরণ এবং দৈহিক তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষায় পানি জরুরি। এত সব মৌলিক ক্রিয়া সম্পাদনের কারণেই পানির অপর নাম জীবন।

মানবদেহের মোট ওজনের ৭০ শতাংশ পানি। জন্মের সময় এই পানির পরিমাণ থাকে প্রায় ৭৫ শতাংশ। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পানি কমতে থাকে এবং বৃদ্ধ বয়সে ৫৫ শতাংশ হয়। রক্তের ৮৩ শতাংশ, মস্তিষ্কের ৭৪ শতাংশ এমনকি হাড়ের ২২ শতাংশ পানি।

কতটুকু পানি খাবেন

আবহাওয়া, কাজের ধরন, বয়স, ওজন ইত্যাদির ভিন্নতায় পানির দৈনিক চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন হয়। জাতীয় খাদ্য গ্রহণ নির্দেশিকা–২০২০ অনুযায়ী, একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের প্রতিদিন দেড় থেকে সাড়ে ৩ লিটার (৬-১৪ গ্লাস) নিরাপদ পানি পান করা প্রয়োজন (প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ৪০ মিলিলিটার করে। যেমন ৬০ কেজি ওজনের কোনো ব্যক্তির দৈনিক পানির চাহিদা (৬০×৪০=২ হাজার ৪০০ মিলিলিটার বা ২.৪ লিটার)। মনে রাখতে হবে, গর্ভবতী নারী, স্তন্যদানকারী মা, খেলোয়াড়, অধিক শারীরিক পরিশ্রম করা ব্যক্তির ক্ষেত্রে যেমন চাহিদা বাড়ে, তেমনি কিছু বিশেষ অবস্থায় যেমন কিডনি জটিলতায় পানির চাহিদা কমে যায়।

কখন কীভাবে খাবেন

উত্তম অনুশীলন হলো, সকালে খালি পেটে পানি পানের অভ্যাস, যা পাকস্থলী ও অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। পানি হজম ও পুষ্টির শোষণ বাড়ায়। হালকা গরম পানি পানের আছে অনেক উপকারিতা।

খাওয়ার সময় পানি খাওয়া ভালো নয়। খাওয়ার ১৫ থেকে ৩০ মিনিট আগে বা পরে পানি খাওয়া ভালো। যাঁরা কম খেতে চান, তাঁরা খাওয়ার আগে পানি খেলে বিশেষ লাভ হয়।

ছেলেদের রাতে বেশি পানি খেতে নিরুৎসাহিত করা হয়। বেশি পানি খেলে বেশি বয়সে অনেক পুরুষের হার্নিয়ার ঝুঁকি থাকে। একবারে অনেক পানি না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খাওয়া উচিত।

পানি সম্পর্কে জরুরি তথ্য

পানি কম খেলে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া মাথাধরা, মনোযোগের ঘাটতি, ক্লান্তি, কোষ্ঠকাঠিন্য, ইউরিন ইনফেকশনসহ নানা সমস্যা হতে পারে।

ভারী কায়িক শ্রম কিংবা খেলাধুলার পর কিংবা অন্য কোনো কারণে শরীর থেকে অতিরিক্ত ঘাম বের হওয়ার পর একবারে বেশি পানি খেলে কোষের পানি ও লবণের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে বড় বিপদ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে অল্প অল্প করে পানি খাওয়া যেতে পারে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here