প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে দেশে প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। গণসংক্রমণের প্রথম পর্যায় থেকে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে এবং এই সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার (৬ এপ্রিল) ভাইরোলজি বিশেষজ্ঞ ও ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে এমন আশঙ্কার কথা জানা যায়।
দেশে করোনা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার লেলিন চৌধুরী বলেন, দুই সপ্তাহ আগেও আমরা করোনা ভাইরাস সংক্রমণের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে ছিলাম। কিন্তু বর্তমানে সংক্রমণ বিস্ফোরণ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বলে মনে হচ্ছে।
‘লকডাউনের জন্য ছুটি ঘোষণার পর সবাই যেভাবে গাদাগাদি করে বাসে, লঞ্চে, ট্রেনে রাজধানী থেকে গ্রামে গ্রামে চলে গেলো, তারপর গার্মেন্টস শ্রমিকদের বাড়িতে যাওয়া এবং দল বেঁধে হেঁটে, ট্রাকে-পিকাপে করে ফিরে আসা, এসব কারণে দ্রুতগতিতে এ ভাইরাস সামাজিক সংক্রমণের পর্যায়ে চলে গেছে। এছাড়া নানান ধর্মীয় সমাবেশ, লকডাউন ঠিকমতো পালন না করা, এসবও কারণ। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি আমাদের জন্য সত্যিকার অর্থেই অনেক আশঙ্কাজনক মনে হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার মনিরা পারভিন বলেন, বর্তমানে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে সেটাকে সাংঘাতিক বলা যায়। করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের যদি দ্রুত শনাক্ত করে আইসোলেটেড না করা যায়, তাহলে এই ভাইরাসটি আরও দ্রুত অনেক বেশি লোককে সংক্রমিত করবে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত ভীতিকর হবে। দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বলেই মনে হচ্ছে। সেইসাথে বেশি বেশি করে করোনার টেস্ট করতে হবে। আইডেন্টিফাইড রোগীদের যত দ্রুত সম্ভব অন্যদের থেকে আলাদা করে চিকিৎসা দিতে হবে।
করোনা ভাইরাসে প্রতিরোধের উপায় প্রসঙ্গে এ বিশেষজ্ঞ বলেন, যেহেতু এ ভাইরাসের এখনো কোনো ভ্যাকসিন বা ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি, তাই নিজেদের সুরক্ষা নিজেদেরই দিতে হবে। আমাদের সবাইকে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, পরিষ্কার পরিছন্ন থাকার মাধ্যমে ভাইরাসের আক্রমণ থেকে নিজেকে ও পরিবারকে রক্ষা করতে হবে। অত্যন্ত কঠিনভাবে লকডাউন মানতে হবে।