স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব পদ থেকে  অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব উত্তম কুমার দাস এক লিখিত বক্তব্যে এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিকের স্বেচ্ছাচারিতা, ব্যাবসায়িক মনোবৃত্তি, ক্ষুদ্র স্বার্থচিন্তার কারণে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট শক্তিশালী হতে পারেনি। মাত্র একজন নেতার স্বেচ্ছাচারিতা, নৈতিক স্খলন, অর্থ নিয়ে পদায়ন করার কারণে বারবার ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে এ সংগঠন।

সংবাদ সম্মেলনে গোবিন্দ চন্দ্রের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ৯টি অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগগুলোর মধ্যে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা ও একক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া; জামায়াত, স্বাধীনতাবিরোধী ও উগ্র মৌলবাদী শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক, আর্থিক অনিয়ম, কেন্দ্রীয় কমিটিতে অর্থের বিনিময়ে পদায়ন, স্বেচ্ছাচারিতা, একাধিক সংগঠন তৈরি, সংগঠনের কর্মসূচি বিক্রি, সংগঠনের নামে চাঁদা আদায় ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব উত্তম কুমার দাস জানান, মহাসচিবের শূন্যপদে জোটের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায়কে পদায়ন করা হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে যুগ্ম মহাসচিব আরও জানান, গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক জাতীয় হিন্দু মহাজোটের প্রতিষ্ঠাকালীন সময় ২০০৬ সাল থেকে গত ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সংগঠনের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময়ে তিনি বারবার নিজের ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। এ কারণে ২০১৫ ও ১৬ সালের দিক সংগঠন স্থবির হয়ে পড়ে। বারবার নিজেকে শোধরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েও একই ভুল করে যাচ্ছিলেন তিনি।

‘তার বিরুদ্ধে আনা অনিয়ম ও অভিযোগের বিষয়গুলো তদন্তের জন্য সংগঠনের সমন্বয়ক বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তারক পদ রায়কে প্রধান করে লায়ন বিমল কৃঞ্চ শীল, রাম কৃঞ্চ বিশ্বাস ও  ডা. হেমন্ত কুমার দাসসহ বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির সুপারিশ ক্রমে কার্যনির্বাহী কমিটি তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

হিন্দু মহাজোটের পূর্ণাঙ্গ কার্যনির্বাহী কমিটি পুনর্গঠন ও সংগঠনের ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়েও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট বাংলাদেশে প্রচলিত কোনো রাজনৈতিক দলের তাবেদারি করে না, ভবিষ্যতেও করবে না। এটি কোনো রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম নয়, একটি সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় হিন্দু মহাজোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. সোনালী দাস, সিনিয়র সহসভাপতি লায়ন বিমল কৃষ্ণ শীল, সহ-সভাপতি তপন কুমার হাওলাদার, চিন্ময় মজুমদার, ডা. মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায়, রিপন দেসহ অন্যান্য নেতারা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here